ছোট বেলায় আমার একটি টুল বক্স ছিলো, যার মধ্যে থাকতো বিভিন্ন ধরনের নাট, বল্টু, স্ক্রু ইত্যাদি। এটা নিয়ে একটি পোস্ট দিয়ে ছিলাম। অবসর সময়ে এই টুল বক্স নিয়ে বিভন্ন রকম গবেষনা করতাম। যেমন লোহার উপর তার পেঁচিয়ে কারেন্ট দিয়ে চুম্বক বানানো, বিভিন্ন পদার্থ আগুনে পুড়ানো বা গরম কারা ইত্যাদি।
ঐ টুল বক্স এর ভিতরে আমার একটি পিতলের ফাঁপা ছোট সিলিন্ডার ছিলো যার দুই মাথাতেই প্যাঁচ কাটা। একবার করলাম কি সেই সিলিন্ডারের এক মাথা স্ক্রু দিয়ে শক্ত করে আটকিয়ে দিলাম। তার পর ব্লেড দিয়ে ম্যাচের কাঠি থেকে চেঁচে চেঁচে বেশ কিছু বারুদ সংগ্রহ করলাম। এবার বারুদ টুকু সিলিন্ডারের ভিতরে দিয়ে অপর প্রান্ত স্ক্রু দিয়ে আটকিয়ে দিলাম। তবে এই প্রান্তের স্ক্রু টা মাপ মত পেলাম না, একটু লোজ ছিলো তাই কাগজ এর গেডিস দিয়ে শক্ত করে দিলাম।
এবার এর পরীক্ষার পালা। বিষয়টা যে বিপদজনক হতে পারে ধারনা করেছিলাম তাই পরীক্ষাটা ঘরের ভিতরে না করে বাহিরের আম গাছ তলায় গেলাম। গুনা দিয়ে বাঁশের খুঁটির সাথে সিলিন্ডার টিকে উর্ধ্ব মুখি করে ফিট করলাম ঠিক মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের মত। যে মাথা স্ক্রু দিয়ে শক্ত করে আটকিয়ে ছিলাম তা নিচের দিকে রাখলাম কারন আমি ধারনা করেছিলাম সত্যই যদি বিষয়টা সফল হয় তাহলে যে মাথা কাগজ দিয়ে আটকিয়েছি সেই মাথায় বুলেটের মতা ছুটবে।
এবার একটি কেরোসিনের কুপি সিলিন্ডারে নিচে জায়গা মত ফিট করে সিলিন্ডারকে গরম করতে দিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। ১০/১২ মিনিট হয়ে যায় কিছুই হলো না। এর ভিতরে দুই বার কাছে গিয়ে দেখে আসলাম ঠিক মত তাপ লাগছে কিনা। ১৫ মিনিটের কিছু পরে হঠাৎ একটি প্রচন্ড বিস্ফোরণের শব্দ পেলাম এবং বুজতে পেলাম আমার গবেষণার স্থান থেকে একটা কিছু প্রচন্ড গতিতে উপরের আম গাছের ডালে আঘাত করলো। কাছে গিয়ে দেখি আমার ধারনার চেয়েও বেশি, কুপি বাতিটা একে বারে দুমড়ে মুষড়ে গেছে। মনে মনে আল্লাহর নাম নিলাম কারন বিস্ফোরনের একটু আগেও আমি মিসাইলের সামনে থেকে ঘুরে এসেছি।
এখন মনে মনে ভাবি “ছোটবেলার সেই গবেষণাকে কাজে লাগিয়ে যদি এখন এমন একটি মিসাইল বানাতে পারতাম যা ইজ্রাইলের আয়রন ড্রোমকে ফাঁকি দিয়ে তাদের সেনা শিবিরে আঘাত করতে পারতো”