ছোটোবেলায় দেখতাম এলাকায় নাটক হতো, যাত্রাপালা হতো, গানের অনুষ্ঠান হতো। এখন কি তেমন কিছু দেখা যায়? গত ১০-১৫ বছরে আশপাশে যে বিরাট পরিবর্তন এসে গেছে, বোঝা যাচ্ছে না? আমাদের এলাকায় একটা অনুষ্ঠান করতে চেয়েছিল যুবসম্প্রদায়। বড়ো ধরণের বাধা এসেছিল। এমনটা সারা দেশেই হচ্ছে। কিছুদিন আগে তো দেখা গেল বাউল সম্প্রদায়ের কয়েকজনের মাথার চুল ছেটে ফেলা হলো। কী এক রাহু ভর করছে চারপাশে ভাবা যায়?
পয়লা বৈশাখ পালন নিয়েও বিরাট হৈচৈ। অথচ এটা খুব সরল একটা উৎসব। এটা নিয়ে কী হৈচৈ না হলো! একটা শ্রেণি চাচ্ছেই না দেশে কোন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চলুক।
সত্যি কি কোন দেশ সংস্কৃতি ছাড়া চলে?
আপনি চাইলেই কি মধ্যযুগীয় কায়দায় চলতে পারবেন? গান ছাড়া চলতে পারবেন, নাটক বা চলচ্চিত্র ছাড়া চলতে পারবেন? সবসময়ই যদি কানের কাছে এত বিধিনিষেধ থাকে, মানুষ বাঁচতে পারে?
নরসিংদিতে এক মেয়ে টপস এবং জিনস পরায় হেনস্তার শিকার হলো। হেনস্তাকারীর একজন নারী। নারীর শত্রু নারী। মূল অভিযুক্ত একজন বখাটে। কী অবস্থা! এই জাতির বৃহদাংশ মনে করে নারী ধর্ষণের মূল কারণ পোষাক। মনে করে পোষাক যদি মনপুত না হয় তাহলে ধর্ষণ দায়ী। এই শ্রেণিকে বোঝানো যায় না তাহলে মাদ্রাসায় শিশু বলাৎকার কেন হয়? বোঝানো যায় না বোরখা পরা মেয়েরাও কেন ধর্ষিত হয়?
গতকাল একটা নিউজ পড়লাম স্বামী স্ত্রী দুজনেই হাফেজ/হাফেজা। হাফেজ লোকটা কাজ করত। স্ত্রীকে কঠিন পর্দায় রাখত। হাফেজ সাহেব এখন অসুস্থ। এখন হাফেজা মহিলা মানুষের দ্বারে দ্বারে সাহায্য চাচ্ছে। এই হাফেজা যদি নিজে চাকরি করত, তার কি এই দুরবস্থা হতো? কে কাকে বোঝাবে? মেয়েদের কঠোর পড়ালেখা বিরোধী, চাকরিবাকরি বিরোধী জনগণ অসময়ে নীরব।
শুধু কাঠমোল্লাদের দোষ দিয়ে কী হবে? কোট-টাই পরা মোল্লারাও তো কম যায় না। দেশটাকে পাকিস্তান--আফগানিস্থান বানাতে পারলেই শান্তি।
এত এত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ছিল না আগে, অথচ এখন মোড়ে মোড়ে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এত এত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কি মানুষের নীতি-নৈতিকতার উন্নয়ণ ঘটাতে পারছে? এখন তো খুন-গুম-ধর্ষণের জোর প্রতিযোগিতা চলছে। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কতটুকু সুফল বয়ে আনল?
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০২২ সকাল ৯:৩৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



