বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন নামে একটি সামাজিক সংগঠন এবার রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই জনকল্যাণে কাজ করে আসছে সংগঠনটি। বিশেষ করে অনাহারী লোকেদের মুখে ক্রমাগত হাসি ফুটিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই বহু মানুষের অন্নসংস্থান করে যাচ্ছে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াচ্ছে।
এসবের বাইরেও, যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে সংগঠনটি সর্বাগ্রে এগিয়ে আসছে।
স্মরণকালের সবচেয়ে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাজধানীর বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সংগঠনটির আহ্বানে সাড়া দিয়ে মিডিয়া অঙ্গনসহ সর্বস্তরের মানুষ উচ্চ দরে পোড়া কাপড় কিনে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছে।
ইদানীং যাকাতের অর্থ সংগ্রহ করার উদ্যোগ নিয়েছে তারা। কিন্তু বেঁকে বসেছে একশ্রেণির মানুষ। বলা হচ্ছে, ইসলামের সুষ্পষ্ট বিধানের একটি যাকাত। কোনো ভিন্ন ধর্মীয় লোকের মাধ্যমে এটা আদায় হবে না।
এই শ্রেণিটা যাকাত তো বটেই, যে কোনো প্রকার অনুদান বিদ্যানন্দে দিতে নিষেধ করছে। বলছে, সংগঠনটি ধর্মীয় লক্ষ্য বাস্তবায়ে গোপনে কাজ করে যাচ্ছে।
সংগঠনটি সম্পর্কে কুৎসা রটিয়ে যাচ্ছে অনেকেই।
ইসলাম আসলে এ ব্যাপারে কী বলে? যদ্দুর জানি, সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাস হিন্দু হলেও প্রতিষ্ঠানটির অনুদান যারা দেয়, বেশিরভাগই মুসলমান। স্বেচ্ছাসেবকরাও মুসলমান। উপকারভোগীরাও মুসলমান। তাহলে সমস্যা কি কেবল প্রতিষ্ঠাতা হিন্দু বলেই।
যাকাতের কথা আপাতত উহ্য রাখলাম, অন্যান্য সময়ের সহায়তার ব্যাপারে যারা নিরুৎসাহিত করেন, তারা আসলে কী বলতে চান? সংগঠনটি বন্ধ হয়ে যাক? তাহলে প্রতিদিন এত এত মানুষ যে উপকার পাচ্ছে, তাদের কী হবে? অন্য কোনো সংগঠন তো এভাবে এগিয়ে আসতে পারছে না।
সত্যি বলতে, সমাজে সমালোচকদের অভাব নেই। তারা নিজেরা কখনো কাউকে সহযোগিতা করে না অথচ অন্য কেউ করলে তার সমালোচনা করে। তাতে যে কারও লাভ হয় না; এটা বোঝার মতো মানসিক অবস্থা এদের নেই।
বিদ্যানন্দের সব কাজ যে পছন্দের, তা কিন্তু না। অলস খাবার বিতরণের চেয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিলে ভালো হতো। জাপানি প্রবাদের মতো, মাছ ধরে না দিয়ে বরং শেখানো উচিত কীভাবে মাছ ধরতে হয়। যদিও তারা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করছে অনেক। আরও বৃহৎ পরিসরে অগ্রসর হওয়া উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৮:৪১