ভারত বাদে উপমহাদেশের বাকি দু'টি দেশ, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে সেনাবাহিনী বরাবরই কর্তৃত্বস্থানীয় অবস্থানে ছিল। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হঠকারিতায় বিজয়ী দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পূর্ববঙ্গ বা পূর্বপাকিস্তানে সেনা অভিযান। ফলাফল: পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলাদেশে পাকিস্তান ফেরত সেনা অফিসার, মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসারদের মধ্যে বিরোধ। রক্তারক্তি। দু'জন রাষ্ট্রপতিও হত্যা। তারপরও বহুদিন সেনা শাসন।
এখনও সেনাবাহিনীর আশীর্বাদপুষ্ট দু'টি রাজনৈতিক দল সক্রিয়। দেখা যাচ্ছে, দেশের মানুষও সেনাশাসন খুব একটা অপছন্দ করে না। সেনাবাহিনীর প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন। এটা কি উপনিবেশিক গোলামির অভ্যস্ততা?
পাকিস্তান বিভক্ত হওয়ার পরও সেদেশের সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব খর্ব হয়নি। তারা গায়ের জোরে সব সমস্যার সমাধান করতে চায়। এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলই ক্ষমতা শেষ করে যেতে পারেনি। সেনাবাহিনীর বিরাগভাজন যারা হয়েছে, তাদের কঠোর পরিণতি বয়ে বেড়াতে হয়েছে। জুলফিকার আলী ভুট্টো থেকে শুরু করে হালের ইমরান খান। পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে সেদেশের জনগণেরও।
বলা হয়, সেনাবাহিনীর কাঁধে সওয়ার হয়ে ইমরান খান ক্ষমতায় এসেছিলেন। সেনাবাহিনীর মনমর্জিমতো না থাকায় ধাক্কা খেতে হয়েছে। আবদুল কাদির ট্রাস্ট মামলায় আদালত প্রাঙ্গন থেকে 'অপমানজনকভাবে' গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। যদিও দেশটির আদালত তাকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। তার মামলাটি অবৈধ ঘোষণা করেছেন।
ইতিমধ্যে পাকিস্তানে হট্টগোল শুরু হয়েছে সেনাবাহিনীর সঙ্গে জনগণের। গুলিতে ১০ জনের ওপর নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের মতো একটা অতি রক্ষণশীল দেশে পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত ইমরানের টিকে থাকা জরুরি ছিল। কিন্তু সেনাবাহিনীর বিরাগভাজন হয়ে সেটা তো মোটেই সম্ভব নয়। পাকিস্তানের জনগণ নিশ্চয়ই বুঝতে পারছে সেনাবাহিনীর কর্তৃত্বাধীন রাষ্ট্র কত দুর্বহ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০২৩ সকাল ১১:০৭