১। অতি সম্প্রতি ছাত্রদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের জনগন স্মার্ট কারফিউ দেখলাম। আসলে কারফিউ কি? কারফিউ কেন জারি করা হয়েছে এদেশের মানুষের তা নিয়ে কোনো ভাবনা কিংবা জিজ্ঞাসা নেই। তারা দুমুঠো খেয়ে পরে বাঁচতে পারলেই হলো। কারফিউ থাকলে সাধারণত সেনাবাহিনীর ভয়ে মানুষ রাস্তায় না নেমে ঘরে আটকে থাকে কিন্তু এখনকার কারফিউ দেখতে জনগণ রাস্তায় নামে। সেনাবাহিনীও তেমন এগ্রেসিভ কোনো সমস্যা করেছে মনে হয় নি। তবে সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে যে ভয়াবহ স্মার্ট কারফিউ জারি করেছে তাতে জনগণ একরকম বন্দীদশায় ছিল নিঃসন্দেহে।
২। ২০০৭ সালের ছাত্র বিক্ষোভের পর ছাত্রদের আন্দোলনের ভয়াবহতা আর চোখে পড়ে নি। সেই সময়ের আন্দোলন শুধুমাত্র ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক সীমাবদ্ধ ছিল কিন্তু এবারের আন্দোলন ক্যাম্পাস থেকে শুরু হলেও সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে তীব্র ভাবে। সরকারকে তা সামাল দিতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। আমার তো মনে হয় এটা অসত্য হবে না যে, সরকারের এই দীর্ঘ মেয়াদে এতো বেকায়দায় আর পড়েননি।
৩। আন্দোলনের মুল ইস্যু ছিল মেধা ভিত্তিক নিয়োগ। ২০১৮ সালেও এ নিয়ে আন্দোলন হয়েছিল। এক পর্যায়ে সরকার কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছিল। কিন্তু গত মাসে মহামান্য হাইকোর্ট সরকারের সিদ্ধান্ত বাতিল করে কোটা পদ্ধতি আবার ফিরিয়ে আনেন। সরকার আবার আপিল করেন। আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায় বাতিল করে ৫+১+১=৭% কোটা রেখে ৯৩% মেধাভিত্তিক নিয়োগ হবে এই মর্মে রায় দেন। আন্দোলনকারীরা তো এটাই দাবি করে আসছিল। আন্দোলন তো শেষ হয়ে যাওয়ার কথা।
৪। এই আন্দোলনটি কোনো রাজনৈতিক কিংবা সরকার বিরোধী আন্দোলন ছিল না। কিন্তু কাদের ইশারায় বা হটকারিতায় অহিংস আন্দোলন সহিংস আন্দোলনের ভয়াবহ পরিনতি হলো? এই আন্দোলনে দলমত নির্বিশেষে সকলেই অংশগ্রহণ করে। এমনকি স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদেরও আন্দোলনে দেখতে পাওয়া গেছে। বলা যায় আন্দোলনের চাপের মুখে আপিলের রায় প্রভাবিত হয়েছে।
৫। আন্দোলনে দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদ যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার দায় কার? মেট্রোরেল, সেতু বিভাগ, বিটিভি, ডেটা সেন্টার ইত্যাদি জনগণের সম্পদ। কারা হামলা করলেন? কী তাদের স্বার্থ? কেনই বা এগুলো টার্গেট করা হলো? গোয়েন্দা তথ্য কি ছিল না? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এগুলো নিরাপত্তা ব্যবস্থা কি ছিল? আন্দোলনের সাথে এই ধ্বংসজজ্ঞের সম্পর্ক কী? এই রকম বিরাট বিরাট প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
৬। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় এই আন্দোলনে কয়েকশ মানুষ নিহত হলো কারা মারল? কয়েকজন পুলিশ নিহত হয়েছেন বুঝা যাচ্ছে তারা আন্দোলন কারীদের দ্বারাই নিহত হয়েছেন। কিন্তু শত শত মানুষ মারা গেলেন শুধু শিক্ষার্থী নয় শিশু রয়েছে রিক্সাওয়ালাও রয়েছেন নিহতের তালিকায়। এদের জন্য কি কারও দায় নেই?
৭। আন্দোলন পরবর্তী সময় সরকার সব দায় বিরোধীদলের উপর চাপানোর চেষ্টা করছেন। এদেশের বিরোধী দল কারা? রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা রাজনৈতিক পরিভাষা ব্যবহার করতেই পারেন কিন্তু পেশাদার কোনো লোক রাজনৈতিক ভাবে কাউকে টার্গেট করে ভাষা প্রয়োগ করতে পারে না। সুষ্ঠু তদন্ত হউক। তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসুক আসল চরিত্র। এই প্রত্যাশা করি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



