somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাক্ষাৎকারে বদরুদ্দীন উমর: ১৯৫২ থেকে যত গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে এটিই সবচেয়ে ব্যাপক

৩০ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বর্ষীয়ান রাষ্ট্রচিন্তাবিদ, তাত্ত্বিক ও রাজনীতিবিদ বদরুদ্দীন উমর। পারিবারিকভাবে রাজনৈতিক উত্তরাধিকার বহনকারী বদরুদ্দীন উমর রাজনীতি ও গবেষণায় সম্পৃক্ত রয়েছেন ৫৩ বছর ধরে। দেশের রাজনীতি, সমাজনীতি, সংস্কৃতিসহ নানা বিষয়ে শতাধিক বই রয়েছে তার। দেশের চলমান ছাত্র আন্দোলন ও এর ভবিষ্যৎ প্রভাব নিয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনিকা মাহজাবিন
চলমান ছাত্র আন্দোলন ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই।


উন্নয়নের কথা বলে অপকীর্তি ঠেকানো যায় না। মানুষের প্রতি জুলুমের বিষয়টিই শেষ পর্যন্ত সামনে এসেছে। বর্তমান আন্দোলনকে বুঝতে হলে অতীতে ঘটে যাওয়া গণ-অভ্যুত্থানগুলো বুঝতে হবে। এ অঞ্চলে মোট পাঁচটি অভ্যুত্থান হয়েছে। শুরুর অভ্যুত্থানটি ছিল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন।

বাংলাদেশে এখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি ব্যাপক ও বৃহৎ গণ-অভ্যুত্থান আমরা দেখছি। এ গণ-অভ্যুত্থানের প্রকৃত চরিত্র, কারণ এবং এর সম্ভাব্য পরিণতি কী হতে পারে— এটি বোঝার জন্য এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে যে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে সেদিকে তাকাতে হবে। সেটি ছাড়া এ গণ-অভ্যুত্থানকে বোঝার উপায় নেই। এখানে একটি কথা বলা দরকার, অবিভক্ত ভারতীয় উপমহাদেশে একমাত্র বাংলাদেশেই গণ-অভ্যুত্থানের মতো ঘটনা ঘটেছে। এ অঞ্চলে ১৯৫২ সালে আমরা প্রথম গণ-অভ্যুত্থান দেখেছিলাম। দ্বিতীয় গণ-অভ্যুত্থান দেখেছিলাম ১৯৬৯ সালে। তৃতীয়টি ছিল ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে। নব্বইয়ে এরশাদের বিরুদ্ধে চতুর্থ গণ-অভ্যুত্থান দেখেছিলাম।

এই প্রতিটি গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই সরকার পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৫২ সালের ক্ষেত্রে সরকার পরিবর্তন সরাসরি হয়নি। কিন্তু পাকিস্তানের শুরুর দিকের এ সময়টাতে রাজনৈতিক দলগুলো গঠিত হয়। দেখা যায়, বায়ান্নর আন্দোলনের পরিণতিতেই ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগ সরকার পতন হয়। শুধু যে সরকারের পতন হয়েছিল তা-ই নয়; মুসলিম লীগ পূর্ব বাংলা থেকে উচ্ছেদ হয়েছিল। ১৯৬৯ সালে যে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল তাতে সামরিক সরকার টিকে থাকলেও আইয়ুব খানের সরকার উচ্ছেদ হয়ে ইয়াহিয়া খানের সরকার ক্ষমতায় এসেছিল। ১৯৭১ সালে জানুয়ারি কিংবা এর আগেই ব্যাপক গণ-আন্দোলন শুরু হয়েছিল। সেই আন্দোলনের ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে সরকার তার স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে আর সক্ষম ছিল না। তখন প্রকৃতপক্ষে সেনাবাহিনী সরাসরি রাষ্ট্র শাসন পরিচালনা করতে বাধ্য হয়েছিল। ২৫ মার্চের পর যুদ্ধ আরম্ভ হয়; সেই যুদ্ধের ফলে সরকার নয়, পাকিস্তান রাষ্ট্রই উচ্ছেদ হয়েছিল। এতই শক্তিশালী ছিল তখনকার অভ্যুত্থান এবং জনগণের আন্দোলন। এরপর স্বাধীন বাংলাদেশে এরশাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়েছিল। এ আন্দোলন কিন্তু দেশব্যাপী বিশাল আন্দোলন ছিল না। সে সময় আমি লিখেছিলাম—এটি একটি নাগরিক অভ্যুত্থান। কারণ গ্রামাঞ্চলে এরশাদবিরোধী আন্দোলন ছিল না। এ আন্দোলন ছিল ঢাকা শহর এবং অন্যান্য শহরকেন্দ্রিক। সেই নাগরিক বুর্জোয়ার অভ্যুত্থানের ফলে এরশাদ সরকারের পতন হয়েছিল। দেখা গেছে, আগের চারটি অভ্যুত্থানের পরই সরকার পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৭১ সালের গণ-অভ্যুত্থান পরিণতি লাভ করে স্বাধীনতা যুদ্ধের এবং মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রই উচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল।

বর্তমানে যে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে, এর ফলে চারদিকে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে এ সরকারের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ এ গণ-অভ্যুত্থান যত ব্যাপক হয়েছে এর আগে কোনো অভ্যুত্থান এত ব্যাপক কখনো হয়নি। ঢাকা শহর এবং অন্যান্য শহরাঞ্চলে তো বটেই সমগ্র গ্রামাঞ্চলে এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। কোটা আন্দোলনে ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনায় না গিয়ে সরকার ছাত্রদের ওপর যেভাবে আক্রমণ করেছে এতে এ আন্দোলন জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। জনগণ যে যার পক্ষ থেকে এ আন্দোলনে শরিক হয়েছে। এ কথা বলা দরকার, ছাত্ররা যে আন্দোলন করেছে তা আর কোটার আন্দোলন হিসেবে দেখলেই চলবে না। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ছাত্রলীগ যে তাণ্ডব, নির্যাতন এবং নানাভাবে জুলুম চালিয়েছে তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ ছাত্রদের ক্ষোভ ছিল। এ ক্ষোভের একটি ভূমিকাও ছাত্রদের কোটা আন্দোলনে পড়েছে। এটিকে শুধু কোটা আন্দোলন, শুধু চাকরির আন্দোলন হিসেবেই দেখলে হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছিল তার প্রতিক্রিয়া ছিল কোটা আন্দোলনে। সরকারি আক্রমণের কারণে এই কোটা আন্দোলন জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে একটি অভ্যুত্থানের মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে এবং ব্যাপকভাবে সারা দেশে অভ্যুত্থান হয়েছে।


শুধু ছাত্রদের ওপর নির্যাতনের কারণে জনগণ এ অভ্যুত্থানে নেমেছে এমন নয়। সারা দেশে জনগণের জীবন বিপর্যস্ত হয়েছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী। তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ সবকিছুর দাম বেপরোয়াভাবে বেড়েছে। সরকার জনগণের মতপ্রকাশের ওপর, বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করেছে। সংবাদপত্রগুলোয় সরকারের বিরুদ্ধে বিশেষ করে সরকার প্রধানের বিরুদ্ধে কিছুই বলা যায় না। এক অসহনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় সরকারের ওপর জনগণের আস্থা নেই। তাদের ধারণা, এ সরকার যত দিন থাকবে তত দিন পর্যন্ত ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে, দেশের টাকা পাচার, সরকারের প্রজেক্ট থেকে টাকা চুরি, এসব বন্ধ করা কিছুতেই সম্ভব হবে না। কাজেই অভ্যুত্থান এখন হয়েছে।

এ অভ্যুত্থান নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে বলে সরকার দাবি করছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এত দিনেও সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়নি। এখন পর্যন্ত তারা কারফিউ দিয়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেট বন্ধ ও সীমিত রাখার মাধ্যমে তথ্যপ্রবাহের ওপর নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এর থেকে বোঝা যায়, তারা এখনো পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়নি। তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, কোটা আন্দোলনের নেতাকর্মীদের তারা নতুন করে ধরপাকড় করছে। তাদের জোরপূর্বক গ্রেফতার করে তাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। এর পরিণতি যে কি দাঁড়াবে! নতুনভাবে চারদিকে আন্দোলন শুরু হয় কিনা সেটিই এখন দেখার বিষয়। চারদিকে সরকারের নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে। এটা যে শুধু দেশেই হচ্ছে তা নয়। সারা দুনিয়ায়; শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে, বুদ্ধিজীবীরা, লেখকরা এর বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের তদন্ত এবং এ হত্যাকাণ্ডে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে ঢাকায় ১৪টি দেশের কূটনৈতিক মিশন। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন বরাতে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কিন্তু আসলে কত লোক যে মারা গেছে তার কোনো হিসাব নেই। হতে পারে শুধু হাসপাতালের তথ্য দিয়ে হিসাব করা হচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালের বাইরে যাদের মেরে ফেলা হয়েছে তাদের তো হাসপাতালে আনা হয়নি। কত লোক মারা গেছে তার হিসাব আসলে নেই। এই যে বেহিসেব হত্যাকাণ্ড, এর বিরুদ্ধে জনগণ চারদিকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এ কথা বলা যায় না যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। পরিস্থিতি যেভাবে আছে এতে নতুনভাবে আবার একটা আন্দোলন; আরেকটা ধাক্কা আসার সম্ভাবনা পুরোপুরিই রয়েছে। এ ধাক্কায় সরকারের অবস্থা কী হবে সেটি ভবিষ্যতেই দেখা যাবে।

আপনি ঊনসত্তর সালের গণ-অভ্যুত্থান দেখেছেন। এর সঙ্গে এবারের আন্দোলনকে কীভাবে তুলনা করবেন?


ঊনসত্তর সালের আন্দোলনের সঙ্গে এবারের আন্দোলনের সাদৃশ্য রয়েছে। সেটি হলো, আইয়ুব খান ১০ বছর পাকিস্তান শাসন করেছিল। ১০ বছর পর ‘‌ডিকেড অব ডেভেলপমেন্ট’ বলে চারদিকে খুব উৎসব শুরু হয়েছিল। আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে সমগ্র দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, বিক্ষুব্ধ হয়েছে এবং এ সরকারের পরিবর্তন চেয়েছে। দেখা গেল, উন্নয়নের কথা বললেও আইয়ুব খানের আমলে যে শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ধামাচাপা দেয়া সম্ভব হয়নি। উপরন্তু উন্নয়ন সত্ত্বেও শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিরোধ একটি পর্যায়ে এসেছিল। সেখানে উন্নয়নের কথা মানুষ চিন্তা করেনি, বরং তাদের ওপর কত নির্যাতন হয়েছে সেটি চিন্তা করেছে। কারণ আইয়ুব খানের উন্নয়ন জণগণের কাজে আসেনি। এ উন্নয়নের ফলে শাসক শ্রেণীর লোকজনই সুবিধা পেয়েছিল। বর্তমান সরকারও গলা ফাটিয়ে উন্নয়নের কথাই বলে যাচ্ছে। দেখা যাবে যে বড় বড় এ প্রকল্পে আইয়ুব খানের আমলে যা হয়েছিল তার চেয়েও খারাপ অবস্থা। এ রকম বড় প্রকল্পগুলোয় আইয়ুব খানের আমলে সে রকমভাবে চুরি হয়নি। এখন বড় বড় প্রকল্প মানে বড় বড় চুরি। লাখ লাখ কোটি টাকা এসব প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে। এর থেকে আওয়ামী লীগের লোকজন, সরকারি আমলা ও সুবিধাভোগী লোকজন হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। এভাবে লুটপাট করে তারা যে অবস্থা তৈরি করেছে দেশে তাতে উন্নয়নের ফল জনগণের কাছে পৌঁছেনি। জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে মানুষের আয়-মজুরি সেভাবে বাড়েনি। কাজেই তাদের প্রকৃত আয় কমে গেছে। মানুষ আগে যে তিনবেলা খেত, তারা এখন দুই বেলা-এক বেলা খেয়ে কোনোভাবে বেঁচে আছে। মাছ-মাংস যেভাবে খেত সেভাবে এখন আর পারছে না। খাবার জিনিসও কমে গেছে।

একের পর এক সরকারি কর্তাব্যক্তির হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির রিপোর্টের প্রভাবও জনগণের মধ্যে পড়েছে। বড় বড় অবকাঠামো সাধারণ মানুষের কতটুকু উপকারে এসেছে? শিক্ষা, স্বাস্থ্যে পর্যাপ্ত বিনিয়োগের অভাবে দেশের মানুষ পিছিয়ে যাচ্ছে। আইয়ুব খান যেমন উন্নয়নের কথা বলে পার পায়নি; বর্তমান এ সরকারও উন্নয়নের কথা বলে পার পাবে বলে মনে হয় না।

সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যমান পরিস্থিতির জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করা হচ্ছে। বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?


আওয়ামী লীগ এখন বেকায়দায় পড়ে দোষ কার ঘাড়ে চাপাবে এটি ভেবে অস্থির আছে। এক্ষেত্রে তো তারা বিএনপি-জামায়াত ছাড়া আর কিছু দেখে না। তারা বাংলাদেশের জনগণকে দেখে না। জনগণ যে তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে এ চিন্তা তাদের নেই। এ চিন্তা করার ক্ষমতাও তাদের নেই। কিন্তু এ কথা বলে পার পাওয়ার উপায় তাদের নেই। এজন্যই তারা বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করছে। এটি ঠিক যে বিএনপি-জামায়াত এ আন্দোলনে কিছুটা অংশগ্রহণ করেছে। এতে দোষের কিছু নেই। এমন একটি অভ্যুত্থান-আন্দোলন হলে জামায়াত বা বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকবে? আমরা মনে করি, এ দল দুটির যতটা অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল ততটা অংশগ্রহণ তারা মোটেই করেনি। নিজেদের দেউলিয়াপনার কারণে বিএনপি ও জামায়াত সেভাবে নামেনি। নামা দরকার ছিল তাদের। কিন্তু তাদের সেই ক্ষমতা নেই। এখন আওয়ামী লীগ যে তাদের দোষারোপ করছে, এতে আওয়ামী লীগের কোনো লাভ হচ্ছে না। উল্টো বিএনপি-জামায়াতেরই লাভ হচ্ছে। যে কাজ তারা করেনি সেই কাজের দায়িত্ব তাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে জামায়াত ও বিএনপিকে তারা গৌরবান্বিতই করছে। এর ফলে তাদের শক্তিই বাড়াচ্ছে। এটি আওয়ামী লীগের চরম মূর্খতা ও দেউলিয়াপনার কারণ। ওবায়দুল কাদের তাদের আওয়ামী লীগ নেতাদের রাস্তায় নামার যে ডাক দিয়েছিলেন সেটি অরণ্যে রোদন ছাড়া আর কিছু নয়। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা তার ডাকে সাড়া দেননি। কেউই রাস্তায় নামেননি। এ কথা তিনিই বিবৃতি দিয়ে বলেছেন। এদিকে অংশগ্রহণ করেনি বলে ঢাকার কিছু কিছু ওয়ার্ডের কমিটি বাদ করে দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগের লোকজন নিজেরাই দলের পক্ষে দাঁড়ায়নি। সরকারের পক্ষে আছে শুধু পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আর্মি।


আওয়ামী লীগের কর্মীরা রাস্তায় না নামার পেছনে কারণ কী হতে পারে?


তারা নামেনি এজন্য যে ওপরের সারির নেতারা অবস্থা না বুঝলেও নিচের সারির কর্মীরা অবস্থা বুঝতে পারছেন। সাধারণ কর্মী ও নিচের স্তরের কর্মীরা আওয়ামী লীগের দুর্বলতা কোথায় তা ধরতে পারছেন। সেজন্য আওয়ামী লীগ নেতারা যে নীতি অনুসরণ করছেন এটিতে যাওয়ার তাদের কোনো উৎসাহ নেই। তারা দেখছেন যে এটি করলে জনগণ তাদের বিপক্ষে চলে যাচ্ছে। সব জায়গায় তারা মার খাওয়ার ভয়ে আছেন এবং ভবিষ্যতে তাদের কী হবে বলা মুশকিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে চলে গেলে সাধারণ কর্মীরা ভয় করছেন তাদের ওপর বিপদ নেমে আসবে।

চলমান আন্দোলন নিয়ে ভারত, চীন, রাশিয়াসহ পশ্চিমা দেশগুলোর ভূমিকাকে আপনি কীভাবে দেখেন?

দেখা যাচ্ছে যে এ আন্দোলনে ভারত একেবারে চুপচাপ আছে। যদিও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এ আন্দোলনে নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বলেছেন। কিন্তু ভারত সরকার একেবারে চুপ করে আছে। তার কারণ বর্তমান ক্ষমতাশীল দল ভারতের ওপর নির্ভরশীল। তবে পশ্চিমারা নানাভাবে সমালোচনা করছে। বিশেষ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র, বুদ্ধিজীবী, লেখক, অধ্যাপক, রাজনৈতিক নেতারা বাংলাদেশ পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এমনকি ভারত সরকার বাংলাদেশের ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকলেও সে দেশের অনেক বুদ্ধিজীবী প্রতিবাদ করেছেন।
বণিক বার্তা















সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০২৪ ভোর ৬:৫২
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×