somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন মানুষ, একটা ছবি, একটা মৃত্যু আর কিছু কথা......

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
কেভিন কার্টার।



অনেকেই হয়তো এই নামটার সাথে পরিচিত। আসলে তিনি পরিচিত তার কাজের মাধ্যমেই। তার সেই বিখ্যাত ছবিটি হয়তো কম-বেশী সবাই দেখেছেন।



কিন্তু ছবিটার পিছনের গল্পটা কি জানেন ? হয়তো অনেকে জানেন, অনেকে জানেন না.....

যারা জানেন না তাদের সংক্ষেপে বলছি..... ছবিটি তোলা হয়েছিলো সুদান থেকে। সুদানের এর খাদ্য গুদামের সামনে, অনাহারে মৃতপ্রায় একটা শিশু অপেক্ষা করছিলো খাবারের আশায়। আর শিশুটির পিছনে একটা শকুন অপেক্ষা করছিলো শিশুটির মৃত্যুর জন্য। কখন শিশুটি মারা যাবে....আর কখন শকুনটি শিশুটির মৃতদেখটিকে তার আহারে পরিণত করবে ?? মূলত এটিই ছিলো ছবিটির পেছনের গল্প।

পরবর্তিতে এই ছবিটিই কার্টারকে এনে দিয়েছিলো 'পুলিৎজার' পুরষ্কার। কিন্তু কেভিন কার্টার কখনোই চিন্তা করতে পারেননি যে, তার এই ছবিই তার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াবে.....

পুলিৎজার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে কেভিন কার্টারকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো...'What is the next...' কিন্তু কার্টার এর কোন উত্তর দিতে পারেন নি। কারন, ছবিটি তোলার পরেই সে ওই জায়গা থেকে চলে গিয়েছিলো। তাই তিনি জানতেন না.... আসলেই বাচ্চাটার ভাগ্যে কি হয়েছিলো। সে কি খাবার পেয়েছিলো নাকি নিজেই শকুনের খাবারে পরিণত হয়েছিলো ??

একটা সময়, ছবিটি নিয়ে তার ভিতরে একটা অপরাধ বোধ কাজ করতে থাকে। শেষমেশ তিনি আরো ভেঙে পড়েন এই দেখে যে, এই ছবিটির জন্য তার মেয়েই তাকে ঘৃণা করতে শুরু করেছে। অবশেষে ২৭ জুলাই ১৯৯৪ সালে 'কার্বন মনোক্সাইড' বিষ প্রয়োগ করে আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর আগে একটা চিরকুটে লিখে যান তার শেষ কথাগুলো....

"I am depressed ... without phone ... money for rent ... money for child support ... money for debts ... money!!! ... I am haunted by the vivid memories of killings and corpses and anger and pain ... of starving or wounded children, of trigger-happy madmen, often police, of killer executioners ... I have gone to join Ken [recently deceased colleague Ken Oosterbroek] if I am that lucky.

তিনি তার ডায়রীতে আরো লিখে যান......

"Dear God, I promise I will never waste my food no matter how bad it can taste and how full I may be. I pray that He will protect this little boy, guide and deliver him away from his misery. I pray that we will be more sensitive towards the world around us and not be blinded by our own selfish nature and interests. I hope this picture will always serve as a reminder to us that how fortunate we are and that we must never ever take things for granted. "


কিছু কথা....

আমরা অনেকেই আছি, যারা ফটোগ্রাফির সাথে যুক্ত। কেউ প্রোফেশনাল কেউ বা অ্যামেচার। যে যেটাই হোক..... অনেক সময় অনেক ছবি তুলে থাকি। রাস্তার একটা ক্ষুধার্ত শিশু কিংবা কোন ভিখারি কিছুই বাদ যায় না। সব সময়ই চেষ্টা থাকে, তার কোন করুণ মুহূর্তকে ফ্রেমে বন্ধী করা। অনেক সময়েই....সে সব ছবি অনেক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু.... ফ্রেমে বন্ধী সেই মানুষটা ? নাহ... তার খবর আমরা রাখি না। সবচেয়ে অবাক করা কথা এই যে, আমরা একটা ক্ষুধার্ত শিশুর ছবি তুলছি.... কিন্তু এক বেলার জন্য হলেও শিশুটির ক্ষুধা মেটানোর চেষ্টা করি না। বাইরের দেশে.... কারো ছবি তুলতে গেলে তাকে বিনিময় মূল্য দিতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এটা চিন্তাও করি না। রাস্তার ওই শিশুটি হয়তো আপনাকে আনন্দের সাথেই পোজ দিয়ে যাচ্ছিলো এই ভেবে, আপনি বিনে পয়সায় তার ছবি তুলছেন। কিন্তু, একবারের জন্যও কি ভেবে দেখেছে.... এতে করে ওই শিশুটির কি লাভ হচ্ছে ? লাভবান তো আপনিই হচ্ছেন। আপনি শুধু আপনার স্বার্থ হাসিল করার জন্য তাকে ব্যবহার করছেন। কিন্তু এটা কি আদৌ যৌক্তিক ?? না। এসব ক্ষেত্রে, অন্তত একবেলার জন্য হলেও তার খাবারের ব্যবস্থা করুন। এতে করে অন্তত নিজের কাছে নিজের ছোট মনে হবে না। কারন, 'Life comes first..' শুধুমাত্র নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য স্বার্থপরের মত অন্য একটা জীবন ব্যবহার করবেন না।

প্রথম প্রকাশ- কোথায় ডট কম
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:৫৩
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×