somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুসলিম নামধারী ‘দলদাস’গণ-

৩০ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আল্লাহপাক বলেন,
আর কে বেশী উত্তম হতে পারে, যে মানুষকে আল্লাহর পথে আহবান করে এবং আল্রাহর নির্দেশ মেনে চলে এবং বলে, আমি 'মুসলিম' [আল কোরআন, ৪১: ৩৩]
সুরা আল ইমরানে বলা হয়েছে, তাহলে বলে দিন (ওদেরকে) তোমরা সাক্ষী থাকো একথার যে আমরা সর্বান্তকরনে আল্লাহতে আত্মসমর্পনকারী 'মুসলিম' [৩: ৬৪]
যারা নিজেদের দ্বীনকে খন্ড খন্ড করে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে তাদের সাথে আপনার (হে রাসূল) কোন সম্পর্ক নেই। [সূরা আনআম-৬, আঃ-১৫৯]
তাঁর (আল্লাহর) দিকে রুজু হও, আল্লাহকে ভয় কর, সালাত ক্বায়েম কর, আর সেই মুশরিকদের মধ্যে সামিল হয়ো না, যারা নিজেদের দ্বীনকে খন্ড খন্ড করে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে এবং প্রত্যেক দলই নিজেরটা নিয়েই সন্তুষ্ট। [সুরা রুম-৩০, আঃ ৩১, ৩২]
হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসুলের অনুসরণ কর, আর তোমাদের আমলগুলি ধ্বংস করো না। [সূরা মুহাম্মদ-৪৭, আঃ ৩৩]
তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং নিজেদের মধ্যে মতান্তর সৃষ্টি করেছে। তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি। [সূরা আল-ইমরান, আঃ ৩: ১০৫]
আল্লাহকে ভয় কর, তোমরা তোমাদের পরস্পরে সংশোধন করে নাও, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুসরণ কর যদি তোমরা মু’মিন হও। [সূরা আনফাল-৮, আঃ ১]
তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তার আনুগত্য কর। তাঁকে ছাড়া আর কোন অলিদের আনুগত্য করো না। তোমরা কম লোকই উপদেশ গ্রহণ কর। [সুরা আ’রাফ-৭, আঃ ৩]
তোমরা সকলে একত্রিত হয়ে আল্লাহর রজ্জুকে আকড়িয়ে ধর, সাবধান! বিচ্ছিন্ন হয়ো না। [সূরা আল ইমরান-৩, আঃ ১০৩]
কোরআন দ্বারা এটা সুষ্পষ্ট যে, মুসলমানদের একমাত্র পরিচয় ‘মুসলিম’। এর আগে পিছে আর কিছুই কাম্য নয়। মহানবির আমল থেকে শুরু করে খোলাফায়ে রাশেদীন, সাহাবা, তাবেইন, তাবেতাবেইনদের পুরো যুগেই মুসলমানেরা ‘মুসলিম’ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। মাঝখানে হযরত মুয়াবিয়া এবং আলীর দন্দ সংঘাত থেকে নানা দল উপদলের জন্ম হতে শুরু করে। শিয়া, সুন্নির উদ্ভবও সেই ঘটনা থেকে। সেই শুরু। হাদিস গ্রন্থনা শুরু হওয়ার পর মুসলিম জাহানে নেমে আসে নানা বিধি নিষেধের খড়গ। সহি, আধা সহি, জইফ, আধা জইফ নানা জাতের হাদিসের নিগড়ে বাঁধা পড়ে মুসলমানের জীবন। হাদিসের পক্ষে বিপক্ষেও গড়ে উঠে দল-উপদল। কোরআন-হাদীস ব্যাখ্যার নামেও প্রচলিত হয় নানা মত ও পথের। মাজহাবের নামেও গড়ে উঠে আরো কিছু দল-উপদল। শিয়া, সুন্নি, ওহাবী, সালাফী, খারেজী, মুতাজিলা, ইবাদী, হানাফী, মালেকী, হাম্বলী, শাফেয়ী, আহলে হাদীস, আহলে কোরআন, সুফি, ভান্ডারী, দেওবন্দী, বেরেলভী আরো কত কি! এইসব দলের প্রত্যেকেই নিজেদের সহি ইসলামের অনুসারী মনে করেন। কোরআনের একটা আয়াত যদি তাদের বিরুদ্ধে যায়, তার বিরুদ্ধে হাজারটা হাদিস এনে হাজির করেন। কেউ কেউ বলেন, তারা দল-এর অনুসারী নন, বরং মানহাজের অনুসরন করেন। নামটাও কোন দলের নাম নয়, মানহাজের নাম। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী এসব তাদের পোষাকী নাম, জেনেরিক নাম ‘মুসলিম’। কিন্তু কোরআনের উপরোক্ত আয়াতগুলো ভাল করে পড়ে দেখুন, কোন মুসলমানের এসব দল-উপদল সৃষ্টি করার অবকাশ আছে কিনা! পোষাকী নাম বা দলীয় নাম ইসলামে কোনভাবেই প্রযোজ্য নয়। ইসলাম শিক্ষা দানের জন্যে বা ভুল সংশোধনের জন্যে সংগঠন হতে পারে, দলের সৃষ্টি হতে পারে না, ঐ সংগঠনের লোকেরা ভিন্ন নামে অভিহিত হতে পারেন না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও মাজহাবের নামে, মানহাজের নামে মুসলমানেরা নানা দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে মুসলিম নামের সাথে তাদের অন্য পরিচয় সংযুক্ত করে নিয়েছে। তারা ইসলামের অনুসরনের পরিবর্তে মাজহাব আর মানহাজের অনুসরণ করে নিজেদেরকে ‘দলদাসে’ পরিণত করেছেন। এইসব দল উপদলের পরিনাম কি হবে সেটা কোরআনের উপরোক্ত আয়াতগুলো থেকে সহজেই অনুমেয় নয় কি?
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৪
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×