somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভোক্তা অধিকার – নাগরিক হিসেবে পর্যবেক্ষণ, অংশগ্রহণ

২৬ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা কম বেশি সবাইই ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের অভিযানগুলো দেখি, পর্যবেক্ষণ করি, এমনকি অভিযোগও করি। এই সেদিন আমি ফেইসবুকভিত্তিক মার্কেটপ্লেসের নামে অভিযোগ করেছিলাম। তার আগে চামড়ার দাম অস্বাভাবিকরকম কম কেন, সেটা নিয়ে করেছিলাম।



ইদানীং পাকিস্তানী বা ভারতীয় কাপড়ের নামে বাংলাদেশে তৈরী করা পোশাক চড়ামূল্যে বিক্রি করে ক্রেতাদের ঠকাচ্ছেন, এ নিয়ে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের অভিযান। আমার অনেক ভাল লাগলো এটা দেখে, কারণ আমি বেশ ক’বছর ধরে এটা লক্ষ্য করে আসছি। দোকানের লোকেরা বলে, ভারতীয়, পাকিস্তানী না বললে ক্রেতারা এগুলো কিনতে চায় না।
এখন আবার অনলাইনে দেখছি জাপানী সিল্ক, দুবাই সিল্ক। অনেকেই বলছে এগুলোর গল্পও একই। যদিও একসময়ে অরিজিনাল জাপানী সিল্কের জামা আমি পরেছিলাম, একটু ভারী ধরণের। কিন্তু এখন নাকি নকলই বেশি!
দেশি পণ্য! আমাদের গর্বিত হবার কথা ছিল। কিন্তু হচ্ছি বিরক্ত! নকল লেবেলিং এর কারনে! গাউছিয়া নিউমার্কেট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে শ্যম্পু কিনে ঠকেছি, নকল বোঝাই যাচ্ছিল। একসময়ে আলমাসকে সবাই বিশ্বাস করতো। সেই বিশ্বাসও অনেকটা টুটে গেছে!

একসময়ে হেলভেশিয়া, পিৎজা হাট আমাদের বিশ্বাস ভেঙ্গে দিয়েছিল। ফি বছরই এই মোবাইল কোর্ট বা ভেজাল বিরোধী অভিযানের নামে বা ভোক্তা অধিকার এর নামে নানারকম নজরদারী হচ্ছে। সেমাই ঘি এ ভাজা, নাকি রঙ মেশানো হচ্ছে, কিচেনের পরিস্থিতি কি? নানারকম নজরদারী। মাছের ফুলকা কি রঙ দিয়ে লাল নাকি ফরমালিন, আম কি ফরমালিন দেয়া নাকি ফ্রেশ! বোতলজাত পানি বিশুদ্ধ কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি নানা সতর্কতা জনগণের বৃদ্ধি পেয়েছিল!

অনেক প্রশংসাই কুড়িয়েছে এ অভিযানগুলো। বর্তমানে একটা কথা সব জায়গায় উচ্চারিত হয়। টেকসই পরিবর্তন বা উন্নয়ন। উন্নয়নের জোয়ারে গা ভাসালেই হবে না, সেটা হতে হবে পরিবেশবান্ধব, স্থায়ী বা দীর্ঘস্থায়ী, সুলভ মূল্যে।

আমরা বুডিগঙ্গার কালো পানি নিয়ে আন্দোলন করে করে ক্লান্ত। অবস্থার পরিবর্তন খুবই যৎসামান্য। ওয়াসার পানির অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নত। সেদিন মুগদা খালপাড়ের পানির একই হাল দেখলাম। নিজের মনকে সান্তনা দেই, এখন বৃষ্টি নেই, তাই হয়তো পানির স্তর কমে গেছে, নোংরাটাই বেশি দেখা যাচ্ছে। উপরে কাল্ভার্ট বা ছাদ ঢালাই-এর মতো করে দিয়ে রাস্তা করে দিলে হয়তো এই দূষণ চোখের সামনে আসতো না।

এই বছরসহ গেল কয়েক বছরে বায়ুদূষণে ঢাকা প্রায়শঃই চ্যাম্পিয়ান, না হলে দ্বিতীয় বা তৃতীয়। একসময়ে প্রচুর কালো ধোঁয়া নির্গত হওয়া গাড়ি ধরা হয়েছিল, শাস্তির আওতায় আনা হয়েছিল। গতকালই এরকম একটা গাড়ি দেখলাম শা করে পার হয়ে গেল আমার চোখের সামনে দিয়ে। মনে আতংক তৈরি হলো আবারো বায়ু দূষণের চ্যাম্পিয়ান হতে যাচ্ছি!

আমার মনে হয় এই শুষ্ক মৌসুমে যেহেতু বৃষ্টি কম হয়। তাই বাতাসে বিষাক্ত পদার্থের পরিমাণ বেড়ে যায়। কি করলে যে এই দুষণ কমবে জানে না কোন বিজ্ঞজন।
এই ঢাকা শহর সাক্ষাৎ মৃত্যুপুরীতে রূপান্তরিত হয়েছে। নানা কারণেই এখানে মৃত্যু খুঁকি বেশি। রাজনৈতিক তো বটেই, এই বাংলাদেশের নানান অঞ্চলে সড়ক ও লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ মারা গেছে বিগত বছরগুলোতে। এই তো শুরু হয়েছে ঈদে বাড়ি ফেরা। ঢাকায় সুস্থ দেহে না ফেরা পর্যন্ত আতংক, হঠাৎ কোন দুর্ঘটনা কোথায় ঘটে? নাকি লঞ্চ ডুবে?!

এ বছর আরেক আতংকের নাম হলো চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, রামদার ঝনঝনানি। যে কোন মুহূর্তে এক কোপে জীবন চলে যাচ্ছে, যেতে পারে যে কোন মুহূর্তে। ঈদে ঢাকা ফাঁকা হলে খালি বাড়ি বা ব্যাংকের ভল্ট বা এটিএম বুথ ভাঙতে পারে, ডাকাতি হতে পারে, এই আতংক ফিবছর! এ বছর যেন আরো বেশি! স্বর্ণের দোকানিরা তো নিত্য আতংকে আছে, না জানি কোনদিন বেঘোরে কোপ খাওয়া লাগে! স্বর্ণ তো যায়-ই, সাধের প্রাণও যায়!

এই যে এখন পর্যন্ত বেঁচে আছি আর দু লাইন লিখছি, আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া!

এক সময়ে বেশ আলোচনায় এসেছিল, খাবারের বা বিভিন্ন পণ্যের মানদন্ড নির্ণয়ে বিএসটিআই তাদের ফরেনসিক ল্যাবে যে পরীক্ষা নিরীক্ষগুলো করে, সেখানে আরো অনেক ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে। আরো উন্নয়ন দরকার ল্যাবগুলোর। জানি না তা আর হয়েছে কিনা! মানে বিএসটিআই-এর মানদন্ডই এখন পর্যাপ্ত নয়। এ ব্যাপারে সরকারের আশু পদক্ষেপ আশা করছি। আমরা সাধারণেরা অন্ততঃ দুটো ভাল খেয়ে পরে বাঁচি, যে ক’দিন বেঁচে থাকা!

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৬
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের জাতির কপালে শনি আছে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:১১



একাত্তরে যারা স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে তারা বলেছে স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখা সম্ভব না, সুতরাং ভারতের অধীন হওয়ার চেয়ে পাকিস্তানের অধীন থাকা ভালো। তারা মনে করেছে অধীকাংশ নাগরিক তাদের দলে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি কি লড়াকু সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৬

হাদি কি লড়াকু সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতা ?

জুলাই আন্দোলনে তিনি প্রথম সারির নেতা ছিলেন না , তাকে কেউ চিনতো না কয়েক মাস আগে ও ।

জুলাই জংগীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

লিখেছেন গ্রু, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৮



ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।

মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ৩০ দেশের দুষ্ট আমেরিকান রাষ্ট্রদুত বদলায়ে দিচ্ছে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২৩



আইয়ুব পাকিস্তানকে ধ্বংস করার পর, বাংগালীদের লাথি খেয়ে সরেছে; জিয়া, কর্নেল তাহের ও জাসদের গণ বাহিনী আমাদের দেশকে নরক (১৯৭৫ সাল ) বানিয়ে নিজেরা নরকে গেছে। আমাদেরকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×