somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেসিডেন্ট জিয়ার বাসভবনের অতিথি আপ্যায়ন, ডিবি স্যারের কাছে আমার ম্যাংগো জুস আর বিরিয়ানি খেতে চাওয়া এবং হারুন স্যারের ভাতের হোটেল

২৭ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি প্রায়ই ইউটিউবে নানা কিছু দেখি, ইতিহাস, পাখি, বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক, ভূ-তাত্ত্বিক কার্যক্রম, বুরকিনা ফাসোর বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাওরে -এর কাজকর্ম দেখে প্রেসিডেন্ট জিয়ার কথা মনে পড়ে। তাই উনার ব্যাপারে আর জানতে ইউটিউবে উনাকে নিয়ে নাঞ্জনের স্মৃতিচারণ শুনতে থাকি। অভিনেতা রাজীব থেকে শুরু করে উনার প্রাক্তন সহকর্মী ও পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এবং এরকম আরো কইয়েকজন স্মৃতিচারণে উঠে এসেছে, প্রেসিডেন্ট হাউজের সাদামাটা দুপুরের খাবারের কথা। আপনারাও ইউটিউবে বা জিয়াকে নিয়ে লেখা নানান বইতে এই কথাগুলোর উল্লেখ পাবেন।





অনেকেরই আগ্রহ থাকে প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রীরা, রাজা রাণীরা কি খায়? ছোটবেলায় আমারো এ ব্যাপারে অনেক আগ্রহ ছিল। তখন এরশাদ সাহেব প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আমি আব্বাকে জিজ্ঞ্যেস করতাম, উনি কি খান? আব্বা বলতেন, কেন? আমাদের মতো ভাত – মাছ- ভর্তা সবই খান! আমার বিশ্বাস হতো না। আমার ধারণা হতো, প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী এনারা সব বেলায় পোলাও, কোর্মা, রেজালা, রোষ্ট, কাবাব - এরক ম্রাজকীয় খাবারই খায়! মোঘলদের মতো।

ভাত-মাছ-ডাল – ভর্তা এসব তো গরীবের খাবার। জিয়াকে নিয়ে সবার স্মৃতিচারণ শুনলে উনাকে আমার কল্পনার সেই গরীব রাজার কথাই মনে হয়! আহা! কত গরীব ছিলেন! কত সাধারণ! বোধ হয় নিজের বেতনের টাকাতেই খেতেন! সরকারী কোষাগার থেকে খরচ করতেন না!এটা নিয়ে অবশ্য কেউ কিছু বলেননি।

মনে পড়ে ২০১৩ -১৪ তে যখন শাহবাগে আন্দোলন হচ্ছিল, যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে, খুব জোরালোভাবে একটা অভিযোগ উঠেছিল, সেখানে নাকি বিরিয়ানি খেতে দেয়া হচ্ছে। পরে এটাও শুনেছি একেকজনকে দৈনিক পাঁচশত টাকা করে দেয়া হতো। সত্য মিথ্যা জানি না, তবে আলোচিত ছিল বিষয়গুলো। ওইসময়ে আমি একজন এক্টিভ ব্লগার ছিলাম। আমার ব্যপারে গুরুতর অভিযোগ! আমি নাকি যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচাল করার চেষ্টা করছি, ব্লগে লেখা আমার নানান কমেন্ট নাকি জামায়াত শিবিরকে খুব প্রশ্রয় দেয়। তাই সাইবার ডিবি, এনএসআই, ডিজিএফআই আমাকে নিবিড়ভাবে পাহারা দিচ্ছিল, আমি যেন বেফাঁস কথাবার্তা না লিখি। এমনকি ভারতের সাইবার পুলিশদের কাছেও আমার নামে অভিযোগ গিয়েছে! ভাবুন একবার, কি সাংঘাতিক অভিযোগ!

তো, কি আর করা! মাঝে মাঝে এসব পুলিশদের ফোন বা ফেইসবুক কথোপকথনে আমাকে হাই হ্যালো করতে হয়। তবে আমিও কিছুই হয় নাই, এমনভাবে চলি। উনারা সরাসরি পুলিশ পরিচয়তা দিতেন না, কেন জানি! তাই আমি তাদের ভাই বেরাদারই ডাক্তাম, সহব্লগার হিসেব কথা হতো। আমি দেখতাম শাহবাগে অনেক ডিবি কোট পরা পুলিশ থাকতো, আন্দোলনকারীদের মাঝখানে, তাই আমি সাইবার ডিবি ভাইকে আবদার করলাম, আমাকেও এক প্যাকেট বিরিয়ানি এনে দেন। আমরাও তো অনলাইনে এই আন্দোলনের পক্ষে কত ক্তহা লিখি! উনি বললেন, আপনি শাহবাগে গিয়ে খেয়ে আসেন, আমি হতোদ্যম হলাম না। আরেকদিন বললাম ম্যাংগো জুস খাওয়াতে। বলা বাহুল্য, তখন আমাদের সকল ব্লগারকেই ওই আন্দোলনের সাথে তাল মিলিয়ে শ্লোগান দিতে হতো ফেইসবুকে, একাত্মতা প্রকাশ করতে হতো, রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকি বা না থাকি। এটা সবার জন্য সাধারণ অনুরোধ বা এক ধরনের অবশ্য করণীয় ছিল। না হলে জামাত সংশ্লিষ্ট বলে ট্যাগ করা হতো। ভাষাগুলো অনেক খারাপ ছিল, আমার নাম ছিল রঙ্গিলা ছাগু, মনস্টার, মানে ভেজাইল্যা, বন্য পশু, সাপ, বিড়াল, মীরজাফর … এরকম অনেক কিছু…দুই তিন বছর পরে জঙ্গী গালিও খেয়েছি! যাক্‌, সেসব আজ ইতিহাস!

ফিরে আসি খাবারের গল্পে! কিছুদিন আগে ডিবিপ্রধান হারুন স্যারের অফিসে খাবার খাওয়ানো হতো অনেককেই। কোথাও বলতে শুনেছি ডিবির অফিসারদের কাছে এরকম খাবারের অনুরোধ এসেছিল বিধায় হারুন স্যার এটা শুরু করেছেন। আমি মনে মনে প্রমাদ গুণি, স্যার আমার কথা জেনে ফেলেননি তো! কারণ, আমিও তো খেতে চেয়েছি! হয়তো আর অনেকে এরকম অনুরোধ করেছে। একটু একটু ভয়ে ভয়েই ছিলাম, না জানি সাইবার ডিবি কোনদিন আমার নামটাই বএল ফেলে, আর হারুন স্যার আমাকে খেতে ডাকে! বুঝতেই পারছেন, যেরকম আয়নাঘরের আলাপ চলে চারপাশে…

যাক, স্যারের ভাতের হোটেলে পোলাও, কোর্মা খাওয়ানো হলেও বা সোনারগাঁ হোটেলের সবজি খেতে দিলেও আমি সেই বিখ্যাত দাওয়াতিদের তালিকায় পড়িনি, আলহামদুলিল্লাহ!

এই ডিবির ভয়ে আমি রাজনীতি নিয়ে টুকটাক যাই-ই লিখতাম, সেটা বন্ধই করে দিয়েছি একপ্রকার! আতংকে আমার হাত -পা আজো…
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ২:২৫
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×