ছাত্র: স্যার আমি আজ পড়ব না।
আমি : কেন?
ছাত্র: স্যার , বলেন আমি আর কত পড়ব?
আমি : পড়া শেষ না হ্ওয়া পর্যন্ত পড়বে।
ছাত্র : স্যার পড়া তো কখনো শেষ হবে না। আমি একটু খেলতে পারি না । সারাদিন খালি পড়া আর পড়া।
আমি : শুক্রবার তো ছুটি সেই দিন খেলবা।
ছাত্র: কিসের ছুটি? গানের ক্লাস , অঙ্কন ক্লাস আবার বিকালে আম্মুর কাছে পড়া। বলেন স্যার আমি কি একটু খেলব না?
এই প্রশ্নের পর আমি চুপ হয়ে গেছি। এই ছেলে টা সকাল আট টায় স্কুলে যায় । স্কুল শেষে কোচিং করে বাসায় আছে ৪ টায় । খাওয়া শেষ করেতে না করতে বাসার স্যার আছে ৫ টায়। সেই স্যার ৫ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত পড়ায়। তারপর ঠিক ৭ টায় আমি যাই , আমি ৯ টা পর্যন্ত পড়াই। তারপর আসে হুজুর .........
এখন প্রশ্ন হলো এত কেন পড়া ? কারন হলো স্কুল আর বাবা মা। স্কুল গুলো প্রতি সপ্তাহে ক্লাস টেষ্ট দিয়া রাখে । আর বাবা মা হলো এমন যে , ছেলে মরে যাক তাতে সমস্যা নাই, কিন্তু ভালো ফলাফল করতে হবে। তা না হলে বাকি মা বাবা দের কাছে তাদের সম্মান হানি হবে।
এই সম্মানের জ্বালায় নিজের ছেলের শৈশব টা শেষ করে। তারা বুঝতেও চান না তাদের ছেলের কি দরকার ।
প্রত্যেক টা শিশু খেলাধূলা করবে । এই টা তাদের অধিকার । এর মাধ্যমে শিশু সামাজিক হয়ে উঠে। একটা শিশু খেলাধুলা মাধ্যমে বন্ধুদের সাথে একটা বোঝাপড়া তৈরি করে । যা শিশুকে বাস্তব জীবনে সম্পর্কের গুরুত্ব বোঝাবে। শিশুর মাঝে মানবিক গুন গুলো প্রকাশ পাবে।
যদি এমন না হয় তবে একটা সময় শিশু নিয়ন্ত্রন এর বাইরে চলে যায় । বাবা মা এর প্রতি তীব্র ঘৃনা বোধ কাজ করে । আমি নিজে দেখছি , আমার ৩য় শেনিতে পড়া ছাত্র বলে সে তার মাকে মেরে ফেলবে।
একবার চিন্তা করে দেখুন ওই বাচ্চার ওপর কি পরিমান মানসিক চাপের পর সে তার নিজের মাকে মেরে ফেলতে চায়।
কি হবে এত পড়ালেখা দিয়ে যদি তা শিশুর সুস্থ মানসিক বিকাশ না ঘটায়?
এখনও সময় আছে শিক্ষা ব্যবস্থায় আরও নজরদারি দরকার । এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে । না হলে আমাদের শিশুরা মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে বড় হবে । যা সমাজের জন্য হুমকি।
বাবা মাকে বলবো । আপনার সন্তানের সাথে সম্পর্ক টা ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করবেন না। প্লিজ। আপনি যা চান তা কেন হবে আপনার সন্তান? আপনি জন্ম দিয়েছেন তাই? আপনার সন্তান জন্মগত ভাবে স্বাধীন । তাই ওকে একটু মুক্ত ভাবে বড় হতে দিন । পৃথিবী সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ন শিক্ষাগুলো মানুষ মুক্ত ভাবে এ শিখে, বই পড়ে নয় ।
ধন্যবাদ
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:১৯