(গত পর্বের পর)
প্রথম পর্ব: জ্ঞানের সংজ্ঞা, ফযীলত ও ইলম অর্জনের বিধান
> জ্ঞানর সংজ্ঞা
> জ্ঞান শব্দের শাব্দিক অর্থঃ
জ্ঞান শব্দের অর্থ জানা। এটি অজ্ঞতা, মূর্খতা প্রভৃতির বিপরীত। আর তা হলঃ কোন কিছু সম্পর্কে তা বাস্তবে যেরূপ, সেরূপভাবে জ্ঞান অর্জন করা।
> পারিভাষিক অর্থঃ
মুসলিম উম্মাহর কাছে ইলম বা জ্ঞান বলতে বেশীরভাগ অবস্থায় শর'য়ী ইলম বা জ্ঞানকেই বুঝানো হয়ে থাকে। ইলমে শর'য়ী বা শরীয়তের জ্ঞান-এর অর্থ হল আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর রাসূলের উপর যে হিদায়াত ও পথনিদর্শণসমূহ নাযিল করেছেন, তার সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করা। আর যে জ্ঞান শুধুমাত্র প্রশংসিত হয়েছে, তা হল ওহীর জ্ঞান, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তার জ্ঞান।
জানা দরকার যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের কাছে যে জ্ঞান পৌছেছিল, তা আল্লাহর ইলম ব্যতীত অন্য কোন ইলম নয়। তিনি মানুষের কাছে ঘর-বাড়ি বানানোর জ্ঞান পৌছান নি। তিনি যখন মদীনায় এসেছেন, তখন মদীনাবাসীদেরকে খেজুর গাছে খেজুর উৎপাদন করতে দেখলেন। তখন তিনি তাদের কষ্ট দেখে বললেনঃ যদি এ কাজ না করো, তবে ভালো হবে। তখন তারা এ কাজ আর করল না, কিন্তু খেজুর গাছ নষ্ট হয়ে গেল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ "তোমরাই তোমাদের দুনিয়া সম্পর্কে বেশী জ্ঞাত" [সহীহ মুসলিমঃ (৪৩৫৮), মুসনাদ আহমাদঃ (৩/১৫২)]। যদি এ জ্ঞান প্রশংসিত জ্ঞানের মধ্যে পড়ত, তবে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সম্পর্কে অন্যের চেয়ে সর্বাধিক জ্ঞানী হতেন।
সুতরাং, ইলমে শর'য়ী হচ্ছে ঐ ইলম, যা প্রশংসিত হয়েছে এবং এর কর্তাও প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য ইলম বা জ্ঞানেও যে উপকার নেই, তা বলা যায় না। কিন্তু ঐ উপকারগুলো দু’ভাগে বিভক্ত করা যায়। প্রথমতঃ যদি ঐ জ্ঞান আল্লাহর আনুগত্য করতে এবং তাঁর দ্বীনের উপর অটল থাকতে উৎসাহ দেয়, তবে তাতে ভাল এবং বরকত থাকবে। দ্বিতীয়তঃ কয়েকটি ইলম শেখা ওয়াজিব হবে, যদি তা আল্লাহ্ তা'আলা যা বলেছেন, তার ভিতরে ঢুকে। তিনি বলেনঃ
(وَأَعِدُّوا لَهُمْ مَا اسْتَطَعْتُمْ مِنْ قُوَّةٍ وَمِنْ رِبَاطِ الْخَيْلِ)
"তোমরা তাদের মুকাবিলার জন্য যথাসাধ্য প্রস্তুত রাখবে শক্তি ও অশ্ব-বাহিনীকে"। [সূরা আল-আনফালঃ ৬০] । এ সমস্ত বিষয় সম্মন্ধে যে জ্ঞান রয়েছে, সেগুলো শিক্ষা করা একান্ত জরূরী।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০০৭ ভোর ৬:২৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




