(গত পর্বের পর)
ইলমের গুরুত্বপূর্ণ ফযীলতের মধ্যে রয়েছেঃ
1. ইলম নবীদের মীরাস। কেননা, নবী-রাসূলগণ কোন দীনার অথবা দিরহাম ওয়ারিস করেন নি। তারা শুধু মাত্র ইলম ওয়ারিস করেছেন। যে ব্যক্তি ইলম চায়, তবে সে যেন নবী রাসূলদের বিরাট মীরাস নিয়েছে। বর্তমানে একবিংশ শতাব্দির কেউ যদি আলেম হয়, তবে সে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওয়ারিস হবে। আর এটিই সবচেয়ে বড় ফযীলত।
2. ইলম সব সময়েই থাকবে কিন্তু সম্পদ শেষ হয় যাবে। উদাহরণ স্বরূপ, আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ছিলেন গরীব সাহাবাদের থেকে একজন। সে এমন গরীব ছিল যে, সে রাস্তার উপর বেহুশ হয় পড়ে যেত ক্ষুধায়। এখন প্রশ্ন হল, আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর স্মরণ বর্তমানে রয়েছে কি? হ্যা, বর্তমানে আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর স্মরণ অনেক হয় থাকে। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত হাদীসসমূহ দ্বারা যারা উপকৃত হয়, তাদের সওয়াব আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু পায়। কিন্তু তাদের সওয়াবের কোন কমতি হয় না। আর এটা এজন্য যে, ইলম বা জ্ঞান সবসময়ই থেকে যায় কিন্তু সম্পদ কোন সময় স্থায়ী হয় না। হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যদি কোন ব্যক্তি মারা যায়, তবে তার সমস্ত আমল বন্ধ হয় যায় শুধুমাত্র তিনটি আমল ব্যতীত। যথাঃ সদকা-ই-জারিয়াহ (চলমান সদকা), এমন ইলম যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয় এবং এমন এক কল্যাণকামী সন্তান যে তার জন্য দো‘আ করতে থাকে”। [সহীহ মুসলিমঃ (৩০৮৪), সুনান আবু দাঊদঃ (২৪৯৪)]
3. ইলমকে পাহারা দেয়ার কষ্ট আলেমদেরকে করতে হয় না। কেননা, আল্লাহ্ তা‘আলা মানুষকে যখন ইলম দান করেন তখন ইলমের অবস্থান থাকে বুকের ভেতরে। এর জন্য কোন সিন্দুক, তালা, চাবি ইত্যাদির প্রয়োজন হয় না। এটি মনের মধ্যে পাহারারত অবস্থায় হেফাজত রয়েছে। কিছু কিছু সময় ইলম ইলমধারী ব্যক্তিকে পাহার দেয়। এ ইলম বিভিন্ন রকমের বিপদ থেকে আল্লাহর ইচ্ছায় আত্নাকে হিফাজত করে। সুতরাং, মাঝে-মধ্যে ইলমও আলেমকে পাহারা দেয়। কিন্তু সম্পদকে পাহারা দিতে হয়। সম্পদকে সিন্দুকের ভেতরে তালার পিছনে রেখে দিলেও চিন্তিত থাকতে হয়; কখন কে এসে নিয়ে গেল।
4. জ্ঞানী ব্যক্তি ‘ইলমের মাধ্যমে সত্য বিষয়ের উপর সাক্ষী থাকতে পারে। এর দলীল হচ্ছে, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনঃ
﴿شَهِدَ اللَّهُ أَنَّهُ لا إِلَهَ إِلَّا هُوَ وَالْمَلائِكَةُ وَأُولُو الْعِلْمِ قَائِماً بِالْقِسْطِ لا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ﴾
“আল্লাহ্ সাক্ষ্য দেন যে, নিশ্চয়ই তিনি ছাড়া কোন হক ইলাহ্ নেই, ফিরিশ্তাগণ এবং জ্ঞানীগণও (সাক্ষ্য দেন); আল্লাহ্ ন্যায়নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত, তিনি ছাড়া অন্য কোন হক ইলাহ্ নেই, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়”। [সূরা আলে ইমরানঃ ১৮]
আল্লাহ্ তা‘আলা এখানে জ্ঞানীদেরকেও উল্লেখ করেছেন। ইলমধারী ও জ্ঞানীদের অবশ্যই এটি একটি গুরূত্বপূর্ণ ফযীলত।
(চলবে)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




