ইলম এবং এ সম্পর্কে বিভিন্ন আলোচনা= পর্ব (১/৫)
(গত পর্বের পর)
৫. ইলম হল জান্নাতের রাস্তা। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি ইলমের সন্ধানে কোন পথ ধরে; আল্লাহ্ তা’আলা জান্নাত পর্যন্ত তার পথ সহজ করে দেবেন”। [সহীহ মুসলিমঃ]
৬. মু’আবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ্ যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বীনের ইলমে নিখুত জ্ঞান দান করেন”। [সহীহ বুখারীঃ (৬৯), সহীহ মুসলিমঃ (৩৫২৯)]
৭. আলেমরা নূর বা আলো,যাদের আলোকে মানুষরা তাদের দ্বীন ও দুনিয়ার কাজে সঠিক পন্থা অবলম্বন করতে পারে। এর দলীলঃ হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “তোমাদের আগে যারা ছিল, তাদের মধ্যে একজন লোক ছিল। সে নিরানব্বইটি নফস হত্যা করেছিল। তখন সে বিশ্বের সবচেয়ে আলেম ব্যক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করতে লাগল। তাকে একজন আবেদের কাছে নিয়ে যাওয়া হল এবং আবেদকে বলা হল যে, সে নিরানব্বইটি নফস হত্যা করেছে। তার কি কোন তাওবা আছে? তখন আবেদ লোকটি এ বিষয়টিকে বেশ বড় মনে করল এবং বললঃ না। ঐ লোক তাকে হত্যা করে এক’শ পর্যন্ত পৌছাল। তারপর আবার সে বিশ্বের সবচেয়ে আলেম ব্যক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করতে লাগল। তাকে একজন আলেমের কাছে নিয়ে যাওয়া হল এবং আলেমকে বলা হল যে, সে এক’টি নফস হত্যা করেছে। তার কি কোন তাওবা আছে? সে বললঃ হ্যা, আছে। আলেমকে জিজ্ঞাসা করা হলঃ সে কীভাবে তাওবা করবে? তখন আলেম তাকে বললঃ ‘তুমি অমুক স্থানে যাও, ওখানের মানুষরা আল্লাহ্র ইবাদত করে। তাদের সাথে ইবাদত করো। আর এ স্থানে ফিরে এসো না। কেননা, এ স্থানের জাতিরা খারাপ।’ সে রওনা দিল এবং যখন সে মধ্যপথে আসল, তখন সে মারা গেল। রহমতের ফিরিশতা ও আযাবের ফিরিশ্তা তাকে নিয়ে ঝগরা করতে লাগল। রহমতের ফিরিশ্তা বললঃ সে তাওবা করে এবং তার মন আল্লাহর কাছে নিয়ে এসেছে। আযাবের ফিরিশতা বললঃ সে কোনদিনই ভাল কাজ করেনি। তখন তাদের কাছে একজন মানুষরূপী ফিরিশ্তা আসল, তারা তাকে বিচারক হিসেবে মেনে নিল। সে বললঃ তোমরা ঐ স্থান ও ঐ স্থান মেপে আনো, যে স্থানের কাছে হবে তাকে সে স্থানের বলে ধরে নেয়া হবে। তারা যখন মাপল, তখন দেখল, সে যে স্থানে যাবে সে স্থানের কাছে এক বট পরিমাণ কাছে মারা গেছে। তখন তাকে রহমতের ফিরিশ্তা কবয করল।” [সহীহ বুখারীঃ (৩৪০৭), সহীহ মুসলিমঃ (৪৯৬৭)]
এ থেকে আলেম ও অনালেম ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য বুঝা গেল।
৮. আল্লাহ্ তা’আলা আলেমদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে উচ্চ স্তরে উঠাবেন। আখিরাতে তিনি তাদেরকে তাদের কাজ ও দাওয়াত অনুযায়ী জান্নাতের উচ্চ স্তরে উঠাবেন। আর দুনিয়ায় তাদের ইলম দিয়ে তাদেরকে উচ্চ স্তরে উঠাবেন।
৯. আলেমরা আল্লাহকে তার অন্যান্য বান্দা অপেক্ষা বেশী ভয় করে। আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ
﴿إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ﴾
“”। [সূরা ফাতিরঃ (২৮)] আর এতে সে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবে। আল্লাহ্র সন্তুষ্টির চেয়ে বড় আর কী আছে?
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০০৭ বিকাল ৩:৫৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




