খেয়াল করলে দেখবেন- পৃথিবী সূর্যকে অনুসরণ করে এবং তার চারপাশে ঘোরে। চাঁদ ও পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে এবং তাকে অনুসরণ করে। এমনকি পুরো সৌরজগৎ সিস্টেমটাই একটি বৃহৎ গ্যালাক্সির চারপাশে ঘোরে। আর এটা শুধু মহাকাশে নয়। অনু পরমাণুতেও বিদ্যমান। অতি ক্ষুদ্র ইলেকট্রন পরমাণুর কেন্দ্রবিন্দু নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঘোরে। প্রকৃতিতে এ নিয়মের কোনো ব্যতয় হয় না।
একই নীতি সমাজ এবং পরিবারেও দেখা যায়। পিতা একটা পরিবারে সবচেয়ে বড় ভরসা। সন্তানরা তাকে মেনে চলে। ছোট ভাইয়েরা বড় ভাইয়ের পদাঙ্ক অনসুরণ করে। শিষ্য গুরুকে, সিপাহী সেনাপতিকে মেনে চলে।
এগুলো হলো প্রকৃতি ও পরিবারের ডিসিপ্লিন। চাঁদ পৃথিবীকে, পৃথিবী সূর্যকে অনুসরণ না করলে- পুরো সৌরজগতেই ভয়ানক বিপর্যয় অনস্বীকার্য। মহাজাগতিক নিয়ম শুধু মহাকাশেই নয় বরং মানুষের সমাজ ও সম্পর্কের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
শিষ্য যখন গুরুকে অমান্য করে, সন্তান যখন পিতার অবাধ্য হয়, সিপাহী সেনাপতির নির্দেশ না মানে, ছোটরা বড়দের অশ্রদ্ধা করে, সম্মানীত ব্যক্তিরা গাল মন্দ খায় তখন সমাজের ভারসাম্য ভেঙে পড়ে।
আজকে দেখলাম এক শিক্ষক ছাত্রকে নেশা না করতে নির্দেশ দেয়ায় ছাত্র শিক্ষকের উপর চড়াও হয়েছে। এক অবাধ্য সন্তান তার বৃদ্ধ পিতাকে ঘর থেকে টেনে হেচড়ে বের করছে, রংপুরে এক সাংবাদিকের বৃদ্ধা মাকে উচ্ছৃঙখল জনতা বেদড়ক মারছে - এগুলো সামাজিক বিপর্যয়ের লক্ষণ। আমাদের সময় সন্ধ্যার পর বাইরে থাকলে মুরুব্বিরাই ধমক দিয়ে ঘরে পাঠাতেন। স্যাররা রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসলে আমরা সাইকেল থেকে নেমে যেতাম। এগুলো হলো শ্রদ্ধা, গুরুজনের প্রতি ভক্তি এবং সম্মান।
আপনি হয়তো বলবেন- এগুলো সেকেলে নিয়ম। এসব এখন অচল। বর্তমান জেনারেশন অনেক স্মার্ট।
আমি বলবো - স্মার্টন্যাস আর বেয়াদবিকে মিলিয়ে ফেলা ঠিক না। জেনারেশান স্মার্ট হওয়া ভালো কিন্তু বেয়াদব হওয়া ভালো না। "জেনারেশন জি" চোখে চোখ রেখে কথা বলে। আর "জেনারেশন জেন্টলম্যান" গুরুজনের সামনে মাথা নত করে থাকে। এই লেখাটি গুরুজনদের সামনে, মাতা পিতার সামনে মাথা নত করে থাকা সব জেনারেশন জেন্টলম্যানদের উৎসর্গ করা হলো।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:১৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


