হিজবুত তাহরীর নামের একটি দলকে সম্প্রতি সরকার নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের কর্মকান্ড জননিরাপত্তার পরিপন্থী। বাংলাদেশের সরকার মোটামুটি অসীম ক্ষমতার অধীকারী। সরকারের কর্মকান্ডকে প্রশ্ন করার অধিকার আম জনতার নাই। তাই এ পথে আমি পা বাড়াচ্ছি না।
হিজবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ করায়, ব্লগের অনেকেই দেখলাম মহাখুশী। এখন পর্যন্ত সরকারের যা পারফরমেন্স, তাতে আশাব্যান্জক কিছু না থাকলেও, এ বিষয়টি তাদের খুবই পছন্দ হয়েছে। খুশীর চোটে এমন ব্লগও লিখেছেন, "হিজবুত তাহরীর নিষিদ্ধ: কে কে খুশী?" একটা লেখা দেখলাম, তাহরীর নিয়ে মোটামুটি থিসিস করে ফেলেছে, যার তথ্য সুত্র নিয়ে প্লাস দাতারা, এমনকি 'প্রিয়তে' নেয়া সমমনারাও সন্দিহান। এসব ব্লগাররা বেশীরভাগই বাম ঘরানার, অন্তত তাদের লেখা থেকে এটাই বোঝা যায়।
কোন বিষয়ে খুশী হওয়া যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে অনেক সময় আমরা অকারনে ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মত লাফাই। আপত্তিটা ওখানেই। কোন ছাগলের তিনটা বাচ্চা হলে নাকি দুইটা দুধ পায় আর তিন নম্বরটা অকারনেই লাফায়। তাহরীর নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন পড়ল কেন? বামদের কথায় তো সরকার একে নিষিদ্ধ করেনি। তাহলে জামাতকে আগে করত। আর দশ মাসের আওয়ামী সরকার পরনের পায়জামা সামলাতেই ব্যস্ত। আ লীগের জন্য তাহরীর এমন কোন বিপজ্জনক শক্তি হয়ে দাড়ায়নি যে, তড়িঘরি করে একে নিষিদ্ধ করতে হবে। তাহলে কার ইন্গিতে এটা হল?
বাংলাদেশের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি বুঝতে হলে, চলমান বিশ্বের আদর্শিক সংঘাতটা আগে বুঝতে হবে।আমেরিকা-বৃটেন হল বর্তমান বিশ্বে পুজিবাদী আদর্শের দুই মোড়ল। ভারত, বাংলাদেশের ক্ষমতালিপ্সু রাজনৈতিক দলগুলি মূলত তাদেরই তাবেদারী করে। তবে ভারতের অবস্থান কিছুটা ভাল, কারন তাদের দলগুলো তাবেদার হলেও জাতীয় স্বার্থ জ্বলান্জলি দেয় না। কারন ভারতের নিজেরই আন্চলিক পরাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার খায়েশ রয়েছে। তাই ভারত নিজেই বাংলাদেশের উপর প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে। আর বাংলাদেশের দলগুলো এই তিন শক্তির মধ্যে সাধ্যমত ব্যালান্স প্রতিস্ঠার মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে বা থাকতে চেষ্টা করে। এই হল বাংলাদেশের রাজনীতির চালচিত্র।
এখন আপনআর যদি ভিন্ন একটি আদর্শিক অবস্থান থাকে, তা ইসলাম বা সমাজবাদ- যাই হোক না কেন, পুজিবাদের মোড়লরা তা মেনে নিবে না। তাবেদার সরকারগুলো দিয়ে আপনার কন্ঠকে থামিয়ে দিবে। তাহরীরের ক্ষেত্রে এটাই হয়েছে। এ দলটি না হয়ে অন্য কোন দলও যদি তার আদর্শিক অবস্থান থেকে সমাজ, রাস্ট্রের পরিবর্তন চাইত, পরিনতি ভিন্ন কিছু হত না। পুজিবাদের এই খেলাটা হয় আমরা ধরতে পারছি না, আর নাইলে পুজিবাদের সামনে দাড়ানোর নৈতিক সাহসটাই হারিয়ে ফেলেছি। তাই ইসলামী দলগুলোকে গালিগালাজ করে যদি কিছু আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়, সেটাই বা মন্দ কি?
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ৯:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




