somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগারদের নিয়ে ঘুরে এলাম পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত সঙ্গে কিছু ছবি (সংশোধিত)

০৬ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভূমিকা: “ব্লগারদের নিয়ে ঘুরে এলাম পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত সঙ্গে কিছু ছবি ” পোষ্টটি লেখার পর ব্লগারদের মাঝে এটি নিয়ে খুব বিতর্ক ও সমালোচিত হয়। কেউ কেউ নানা বিষয়ে প্রতিবাদ তুলেন। তাই পোষ্টটির কিছু কিছু বিষয় ও লেখা সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধিত পোষ্টটিতে বিতর্কিত অংশগুলো বাদ দেয়া হয়েছে। সংশোধিত পোষ্টটি পুনঃ প্রকাশ করা হল। ধন্যবাদ।

ব্লগারদের সাথে কক্সবাজারে যাওয়ার ভ্রমণটি আমার জন্য অবশ্যই একটি বিশেষ স্মৃতি। ভাবছেন ব্লগারদের সাথে বেড়াতে গেছি, খুব আড্ডা দিয়েছি তাই। নাহ, আরও একটি কারণ আছে। এটিই আমার প্রথম সমুদ্র দেখতে যাওয়া। এই প্রথম আমি সমুদ্রের জলে নেমেছি। হাতে সময় ছিল খুব কম। ভিজতে চাইনি তবু ভিজে গেছি। গোসল করতে চাইনি তবু গোসল করে ফেলেছি। সমুদ্র কন্যা হয়তো ভেবেই রেখেছিল এই মহা পণ্ডিত বাজ দলটিকে ভিজিয়েই ছাড়বো। সমুদ্রের জয় হয়েছে। সে সাথে আমাদেরও জয় হয়েছে। সমুদ্র কন্যার সাথে একান্তে কিছু সময় কাটিয়েছি। তাঁর একান্ত কিছু ছবি তুলেছি। অনেক নতুন বন্ধু পেয়েছি। বাইরে গিয়ে ছবি তোলার মজা শিখেছি। সৈকতের বৃত্তের মাঝে গগণ ছুঁয়া লাফ দিয়েছি, চিৎকার দিয়েছি। বীচ বয় শুনিয়েছে সেই বিচ্ছেদের গান ‘কইলজার ভিতর গাঁথি রাইখুম তুয়ারে’। তাঁর সাথে হয়েছিল প্রথমে আড়ি, পরে বন্ধুত্ব।

দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। আষাঢ় মাস। আষাঢ়ের উথাল পাথাল এক জোছনার মধ্য রাতে রওয়ানা দিয়েছি আমরা কয়েকজন ব্লগার। অনেক আগেই আমি চলে আসি বাস-স্ট্যান্ডে, সঙ্গে ছিল ব্লগার আলোর সন্ধানে। এসে দেখি আর কেউ নেই। এরই মধ্যে দু দফা সিগারেট ফুঁকে ফেলেছি। সবাই যখন একসাথে হলাম তখন আমরা মোট আটজন ব্লগার। তারা হলেন, ব্লগার কৌশিক আহমেদ, ব্লগার আলোর সন্ধানে, ব্লগার মঞ্জুর মোর্শেদ, ব্লগার হাসান বিপুল, ব্লগার সুলতান মির্জা। আরও দুজন আছেন তারা আমার কাছে নতুন। তাদের চিনি না, তারা থাকেনও দূরে দূরে। নিচে ব্লগারদের নাম ও আমার চোখে তাদের কিছু কথা।

ব্লগার আলোর সন্ধানে –নাম আশিকুর রহমান ইমন। মানুষ হিসেবে খুবই ভাল। আমার মতই জীবন অভিজ্ঞতা খুবই কম। মন ভাল থাকলে মাঝে মাঝে গানে টান দেন। শুনতে মধুর লাগে। তবে কোন গান তিনি দুলাইনের বেশি পারেন না।

আমি – জীবন অভিজ্ঞতা কম। কোন পন্থী নই, তবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস আমার উপর খুবই প্রভাব ফেলেছে। বঙ্গবন্ধুর অবদান ও আদর্শ স্বীকার করি তবে বর্তমান আওয়ামী লীগের ধারেকাছে নেই। জামাত-শিবির’এ অ্যালার্জি আছে। কথা বেশি বলার স্বভাব আছে। কোন কথা পেটে থাকে না।

ব্লগার কৌশিক আহমেদ – মানুষ হিসেবে খুবই ভাল। খেতে ভালবাসেন। খাওয়াতে ভালবাসেন। খুব আড্ডাবাজ মানুষ। জামাত-শিবির’এ অ্যালার্জি আছে। খুব সুন্দর করে কথা বলেন। চেইন স্মোকার, খুবই আত্মবিশ্বাসী।

ব্লগার অন্যমনস্ক শরৎ - মানুষ হিসেবে খুবই ভাল। জীবন অভিজ্ঞতা অনেক। মনে হয় জামাত-শিবির’এ অ্যালার্জি আছে। সারাদিন ফেইসবুক ও সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। আড্ডাবাজ মানুষ, মুহুর্তেই জমিয়ে ফেলেন। একটু পর পর ছবি তুলেন। চেইন স্মোকার, খুবই আত্মবিশ্বাসী।

ব্লগার সবাক - মানুষ হিসেবে খুবই ভাল। জীবন অভিজ্ঞতাও বেশ। চুপচাপ থাকেন। তবে ভাল আড্ডাবাজও। আওয়ামী পন্থী, জামাত-শিবির বিরোধী। বাস্তবে নিরীহ হলেও লেখালেখিতে বেশ উগ্র। চেইন স্মোকার। তিনি তাঁর কোন কিছু লুকাতে পছন্দ করেন না।

ব্লগার সুলতান মির্জা –রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী মানুষ। আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। রাজনৈতিক ব্লগিং করার জন্য রাজনৈতিক ব্লগার হিসেবে তাঁর বেশ পরিচিতি রয়েছে। চুপচাপ ধরণের মানুষ। কিছুটা নিজের মধ্যে গুটিয়ে থাকেন।

হাসান বিপুল - মানুষ হিসেবে খুবই মজার। জীবন অভিজ্ঞতা বেশ। মেপে মেপে কথা বলেন। খুবই আড্ডাবাজ মানুষ। সবকিছু নিয়েই মজা করেন। সেন্স অফ হিউমার প্রচণ্ড। বই পড়া মানুষ। ছবি তুলতে ভালবাসেন। ফটোগ্রাফি জগতে স্টার খ্যাতি পেয়েছেন।

ব্লগার মঞ্জুর মোর্শেদ – তিনি মানুষকে খুব সহজেই বিশ্বাস করে ফেলেন। মানুষ হিসেবে ভাল। গল্প করতে পছন্দ করেন।

যখন আমরা বাসে করে রওয়ানা দিয়েছি তখন ঢাকা শহরে ভারা জোছনা। কিন্তু শহরের আলোতে সে জোছনা বোঝার উপায় নেই। বাস যাত্রা আরম্ভ না করতেই কাপের পর কাপ চা খেয়ে ফেললাম, আর সঙ্গে টানের পর টান। হঠাৎ শুরু হল প্রিয় কৌশিক দা’র ভূতের গল্প। কোন কারণ ছাড়াই এই মানুষটিকে আমার খুব পছন্দ। এক সময় গাড়ি শহর ছেড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর এসে দাঁড়িয়ে গেল। সামনে প্রচুর জ্যাম। জায়গার নাম, ভবের হাট। নেমে দেখি জোছনার বান ডেকে যাচ্ছে। এমন জোছনায় বনে যেতে হয়।

আবার শুরু হল কৌশিক দা’র ভূতের গল্প। গল্পের মাঝখানে কৌশিক দা তাঁর যুবক বয়সে একটি মেয়েকে ভাল লাগার কথা বলে ফেললেন। সেসময় শুরু হল আষাঢ়ের ঝুম বৃষ্টি। বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে আমরা যেতে লাগলাম। সারারাত ঘুম হল না। চেয়ে দেখি বিপুল ভাই বই পড়ছেন ই-বুক। কৌশিক দা টানা ভূতের গল্প বলে চলেছেন সেটা শরৎ ভাই আধো ঘুমের ফাকে ফাকে শুনছেন। হঠাৎ শুনতে পেলাম দেশের রাজনীতি নিয়ে পেছন থেকে গরম হাওয়া আসছে পেছনে ছিলেন সবাক ও সুলতান (মীর হোসেন) ভাই। মঞ্জুর ভাই ও ইমন দুজনই নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। হঠাৎ আমাদের কাছে আইরিন আপার ফোন এলো। আইরিন আপাকে বুঝিয়ে দিলাম তাঁর সাথে কথা বলার সময় আমাদের কম ব্যস্ত আছি।

শুয়ে আছি। রাতের বেলা স্বপ্নে দেখলাম নিমাইঝুরি নদী দিয়ে নৌকো করে কোথাও যাচ্ছি। নৌকো হেলছে দুলছে। হঠাৎ বৃষ্টি। বৃষ্টি এতো বেড়ে গেল যে বৃষ্টির ছাঁট নৌকার ছইয়ের ভেতর চলে এলো। সবাই বৃষ্টির ছাঁট উপভোগ করতে লাগলো। এক সময় ঘুম ভেঙ্গে গেল দেখি এসির পানি টপ টপ করে পড়ছে। আমার পাশে মঞ্জুর ভাই তাঁর কম্বল অর্ধেক ভিজে গেছে। বাসের বয়টা বেশ স্মার্ট, কিছুটা রগ চটা। তাঁর এ স্বভাবের কারণ সে একটা ভাল বাসে চাকরি করে। তাঁর কাজ বাসের যাত্রীদের গাইড করা। কিন্তু যাত্রীরা তাকে বুঝতে ভুল করে। তাকে এটা ওটার জন্য হারা দেয়। তাই সে আগে থেকেই কিছুটা সজাগ। আমি দেখলাম আমার ব্যাগপ্যাকটা নিচে পড়ে রয়েছে ঘুমের অলসতায় উঠতেও পারছিনা। সে কাছে আসতেই আমি তাকে বললাম, এক্সকিউজ মি, আমার ব্যাগটা কি একটু উপরে তুলে দিবেন। সে নগদ জানিয়ে দিল এটা তাঁর কাজ না। অপর পাশ থেকে ভিজে একাকার হয়ে যাওয়া মঞ্জুর ভাই ঘুমের মধ্যে চোখ বন্ধাবস্থায়ই তাকে খুঁচা দিয়ে উপরের দিকে দেখাল, একবার, দু’বার, তিনবার। সে তড়িঘড়ি করে ব্যাগটা উপরের স্টোরে রেখে দিল। রাখার পর বুঝতে পারলো তাকে আমার ব্যাগ উপরে রাখতে বলা হয়নি। উপর থেকে পানি পড়ে তিনি ভিজে গেছেন এটাই দেখানো হয়েছে। বুঝতে পেরে হোস্টেজ নিজের উপরই খেপে গেল। হোস্টেজের নাম অনিক।

আবার বৃষ্টি। দিনের আলো উঁকি দিয়েছে। শরৎ ও বিপুল ভাই দুজন ফটাফট ছবি তুলতে লাগল। হঠাৎ শরৎ ভাই আমার সাথে অনেক কথা বলতে লাগল। বুঝে গেলাম এই মানুষটা খুব মিশুক, দূরের মনে হল না। তবে আমার একটা সমস্যা তাঁর চোখে ধরা খেল অন্য সবার মত তিনিও সেটাকে ভুল বুঝলেন। আমার সমস্যা হল আমি মানুষের চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারি না। যখন তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকি তখন সে কি বলছে অনেক কিছুই শুনতে পাই না। যখন জোর করে তাকাতে যাই তখন মাঝে মাঝে কিছুটা সমস্যা হয়ে যায়। এ অস্বাভাবিকতা মানুষ ধরে ফেলে এবং ভুল বুঝে। একটু পর বিপুল ভাই শুরু করলেন মজার মজার কথা। তিনি বলেন আর আমরা হাসি।

একসময় আমাদের বাস কক্সবাজার এসে থামল। আমরা একটি হোটেলে গিয়ে উঠলাম। আমাদের হাতে সময় খুব কম। আমরা আমাদের সব কাজ প্ল্যান করে সাজিয়ে নিলাম। নাস্তা খেয়ে পাঁচ মিনিটের জন্য সৈকতে নেমে এলাম। এটি আমার প্রথম সমুদ্র সৈকতে আসা। দিলাম আমরা কজন গগণ ছুঁয়া লাফ। সেই লাফ বন্দি হয়ে গেল শরৎ ভাইয়ের ক্যামেরায়।

তারপর নেমে গেলাম আমাদের আসল কাজে। যার জন্য আমরা কক্সবাজার এসেছি। আমরা কক্সবাজার এসেছি সেখানকার বন্যার্তদের সাহায্য করার জন্য। বিডিনিউজ ব্লগ থেকে নেয়া এই উদ্যোগে আমরা ব্লগারদের দেয়া সাহায্যগুলো নিয়ে এসেছি। সেই গল্প অন্য কোন সময় বলব। আজ শুধু হাসির কথা কান্নার গল্প অন্য কোন ক্ষণে।

ফেরার ঠিক আগে আগে নেমে এলাম লাবনী পয়েন্টে। কিছুক্ষণ কথা হল লাবণীর সাথে। হঠাৎ দেখি সমুদ্রের অনেক গভীরে একটি লোক কনুই জাল দিয়ে মাছ ধরছে। লোকটি প্রতিবারই অপেক্ষা করে কখন উঁচু উঁচু ঢেউ গুলো আসবে, উঁচু উঁচু ঢেউ আসা মাত্রই সে জাল ছুড়ে ফেলে। দূর থেকে আমার সাধারণ ক্যামেরায় তা আসবে না। তাই আমি বেশ ঝুঁকি নিয়ে তাঁর কাছে গেলাম। সৈকত থেকে আমাকে ডাকাডাকি শুরু হয়ে গেল। আমি থোড়াই কেয়ার করছি। লোকটিও অপেক্ষা করছে আমিও অপেক্ষা করছি কখন সেই উঁচু বিশাল ঢেউ আসবে লোকটি জাল ফেলবে আমি ছবি তুলব। কিন্তু উঁচু উঁচু ঢেউ আসে লোকটি জাল ফেলে না। হঠাৎ লোকটি সরে যেতে লাগলো। আমিও নাছোড়বান্দা। লোকটির পেছন পেছন যেতে লাগলাম। হঠাৎ লোকটি ক্ষেপে গেল। যাচ্ছেতাই বলছে। আমাকে চলে আসতে হল ছবি তোলা হল না। তবে দূর থেকে একটি ছবি নিয়েছি। স্লো করে নেয়া হয়নি বলে ভাল আসেনি। আমি বুঝতে পারলাম এখানে আসা ফটোগ্রাফারদের প্রতি লোকগুলো কতটুকু বিরক্ত। ফটোগ্রাফাররা এই দরিদ্র মানুষগুলোকে খেলনা বানিয়ে ছবি তুলেন অথচ তাদের দুটি টাকা দেয়ার সময় হয় না।

সমুদ্র থেকে উঠতেই সন্ধ্যা পড়ে গেল। এখানে সৈকতে সবাই আছে। একটি বার-তের বছর বয়সের বীচ বয় আমাকে এসে বলল - আপনি দেখতে আপনার মায়ের মতো হয়েছেন। চেংড়া এই ছেলেকে আমি জিজ্ঞেস করতে সেই আবারও একই কথা বলল। আমি তাকে বললাম – তুমি কি করে জানলে, তুমি কি আমার মাকে দেখেছ। সে জানাল সে দেখেছে। মজাটা শেয়ার করার জন্য আমি কৌশিক ভাইকে ডেকে বললাম দেখেন কি বলে এই ছেলে। হঠাৎ ছেলেটি সামনে থেকে চলে গেল। আমি কৌশিক ভাই, শরৎ ভাইকে বললাম এই কথা। ছেলেটি তার প্রতিবাদ জানালো, বলল সে এই কথা বলেনি। তখন আমার মনে হল মানুষজনের ইমোশনকে প্রভাবিত করে দু’টাকা হাতিয়ে নেওয়াই হয়তো ওর কাজ। মুহূর্তেই ছেলেটির আবার উদয় হল, এবার সে ফিরে এসে ভিনদেশী ভাষায় উগ্রভাবে হাত-পা-শরীর নাড়িয়ে কত কি বলে চলে গেল। ও একটি কথা ছেলেটি কফি বিক্রি করে। আমরা তাঁর কাচ থেকে কফি খাচ্ছিলাম। আমি কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলাম তাই শরৎ ভাই ছেলেটির কথার মানে কৌশিক দা’কে শুনালো। আমি বেটা দূর থেকে কিছুটা শুনে ফেলেছি। ছেলেটি খাটি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় আমার মাকে নিয়ে নোংরা কথা বলেছে। ছেলেটি একটু পর পর ফিরে ফিরে আসছে আর মজা করছে। আবার চলে যায় আবার আসে। এবার ছেলেটি চলে যাবে তাঁর কফির কাপ আমার হাতে রয়েছে। সে বলছে তাঁর কাপটি যেন আমি দিয়ে দিই কিন্তু আমি দিচ্ছি না। এখানে আমি কাপুরুষের মতো একটি কাজ করে ফেলেছি। ছেলেটির সাথে কথাবার্তার মাঝে তাকে একটি চড় বসিয়ে দিলাম। ছেলেটির কান্না আর থামেনা। কৌশিক ভাই, শরৎ ভাই মিলে অনেক আদর আর ভালবাসা দিল ছেলেটিকে। সঙ্গে কৌশিক ভাই দিল আরও একশ টাকা। ছেলেটি যখন কিছুটা শান্ত হল তখন কৌশিক ভাই ছেলেটিকে আমার কাছে নিয়ে এলো এবং বলল আমি যেন তাকে সরি বলে দিই। আমি বললাম। সেই বলাই আমার জন্য সান্ত্বনা।

ফেরার শুরুতেই রাতের বেলা শরৎ ভাই মজার মজার টেস্ট শুরু করলেন। বিভিন্ন গল্পের মাধ্যমে সবার মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করা। সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনছেন আমি কিছুই শুনছি না। অর্ধেক শুনি তো আর অর্ধেক শুনি না। শরৎ ভাই আমার উপর যথেষ্টই বিরক্ত হলেন। বাসে উঠার পর আমাকে সামনে পাঠিয়ে একলা করে দেয়া হল। কারণ বক্তারা চান ভাল শ্রোতা। আমি ভাল শ্রোতা নই। আমি এসে ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুম ভেঙ্গে দেখি শরৎ ভাই নেই। আমাকে অনেক ডাকাডাকি করা হয়েছে। কিন্তু ঘুমিয়ে ছিলাম। গাড়ি এসে থামল একটি রেস্টুরেন্টের সামনে। আমাদের চা-পানের বিরতি দেয়া হল ১৫/২০ মিনিট। নেমে দেখি কৌশিক ভাই নাই। আমার পকেটে নাই টাকা। তাকে খুঁজতে খুঁজতে চলে গেল ১০ মিনিট। পড়ে সবাক ভাই সিগারেট খাওয়ালেন।

গাড়ি আবার চলতে শুরু করেছে হঠাৎ উপর থেকে আবার টপ টপ করে পানি পরতে লাগলো। ঘুম হল না। পেছনে তাকিয়ে দেখি বিপুল ভাই জেগে। বাই পড়া মানুষ। কাছে গেলে বিরক্ত হতে পারেন ভেবে গেলাম না। এক সময় দেখি মোবাইল নিয়ে টিপাটিপি করছেন। কাছে গেলে দেখালেন, এই মাত্র আমরা ভারত-বাংলাদেশ বর্ডার পাস করলাম। শুরু হল কথা। এক সময় ভোর হয়ে এলো। তিনি কথা বলছেন কিন্তু আমার দিকে তাকাচ্ছেন না। তাকাচ্ছেন বাইরের দিকে। হাতে ক্যামেরা। তিনি ছবি তুলছেন আর কথা বলছেন। আমি তাঁর কথা শুনতে পাচ্ছি। তাকে আমার নিজের মতো মনে হল। তিনি ছবি তুলছেন আর আমি একটার পর একটা প্রশ্ন করে যাচ্ছি। তিনি উত্তর দিয়ে যাচ্ছেন। হঠাৎ তিনি তুমি থেকে তুই’তে চলে গেলেন। আমার তাকে খুব মজার মানুষ মনে হল।

আরিফ হোসেন সাঈদ, ৩০ জুলাই ২০১২

আরও দেখুনঃ ব্লগারদের নিয়ে ঘুরে এলাম পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত সঙ্গে কিছু ছবি (ছবি পর্ব)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৪৯
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×