somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কান্ডারি অথর্ব
আমি আঁধারে তামাশায় ঘেরা জীবন দেখেছি, আমার বুকের ভেতর শূণ্যতা থেকে শূণ্যরা এসে বাসা বেঁধেছে, আমি খুঁজেছি তোমাকে সেই আঁধারে আমার মনের যত রঙ্গলীলা; আজ সাঙ্গ হতেছে এই ভবের বাজারে।

স্রষ্টা যখন নিজেই পরলোক গমন করেছেন - শেষ পর্ব

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ স্যার আপনি যেখানেই আছেন দোয়া করি আল্লাহ আপনাকে তার রহমতের সবটুকু শান্তি যেন দান করেন ।

প্রথম পর্ব

বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে দেখে মিসির আলী আর বৃষ্টিতে কাক ভেজা হওয়ার লোভ সামলাতে পারলেন না । বৃষ্টিতে বেড়িয়ে পরলেন । হেটে হেটে মোড়ের এক চায়ের দকানে এসে থামলেন তিনি। ভাই এক কাপ চা হবে ? দোকানি ছেলেটির বয়স হবে বার কি তের এমনই। মিসির আলীর মত এমন একজন বয়স্ক লোকের মুখে ভাই ডাক শুনে ছেলেটি চমকে উঠল। কি ভাই চা হবে ? স্যার আমার নাম করিম আপনি আমারে করিম বইলা ডাকেন। ঠিক আছে আছে করিম তুমি আমাকে এক চা বানিয়ে দাও । করিম মিসির আলীর জন্য চা বানাল । তোমার দোকানে কি বেন সন সিগারেট আছে ? করিম একটা সিগারেট দিল । চায়ের কাপে বৃষ্টির পানি পরছে । জীবনে অনেক চা মিসির আলী খেয়েছেন কিন্তু আজ কেমন যেন অমৃত মনে হল চা খেয়ে সাথে সিগারেট অসাধারন এক অনুভূতি। মিসির আলী করিমের হাতে পঞ্চাশ টাকার একটা নোট দিয়ে চলে গেলেন । পেছন থেকে করিম ডাকছে স্যার আপনার বাকি টাকা নিয়ে যান । কিন্তু মিসির আলী আর পেছনে না তাকিয়ে হেটে চললেন । হটাত তার বদির কথা মনে হল । বদির পুরান ইতিহাস জানতে হবে। আজ স্রষ্টা বেঁচে থাকলে হয়ত উনাকেই সরাসরি জিজ্ঞাসা করা যেত! মিসির আলী কি করবে ? ভাবতে ভাবতে রুপার কথা মনে পরল । রুপাকে একটা ফোনকরল মিসির আলী । নাম্বারটা রুপাই একদিন এসে তার মোবাইল ফোনে তুলে দিয়ে গিয়েছিল । হ্যালো রুপা বলছ ? জি স্যার । আপনি কেমন আছেন? আমি ভালো আছি। এই কথাটা মিথ্যা বলা হল। কারন মিসির আলী ভালো নেই । স্রষ্টা ছাড়া ভালো থাকা যায় না । তবু নাকি বলতে হয় ভালো আছি । এটাই ভদ্রতা । রুপা তুমি কি একটু আমার সাথে দেখা করতে পারবে ? স্যার কিন্তু আজত আমার বিয়ে । তাহলে থাক । না ঠিক আছে স্যার আমি কিছুক্ষনের জন্য হলেও আসছি । তোমার বিয়ের তাহলে কি হবে ? কোন সমস্যা হবে না স্যার । তাহলে আস । মিসির আলী বাসায় ফিরে এলেন ।


রুপা বেড়িয়েছে এই ফাঁকে হিমু পালাবার পথ পেয়ে আনন্দে একটা সিগারেট ধরিয়ে মাজেদা খালার বাসা থেকে বেড়িয়ে এলো । গন্তব্য বদির অফিস। বদি ভাই কেমন আছেন ? ভালো নাই । বদি ভাই আমি একটা কথা বলতে এসে ছিলাম । হিমু আমি তোমার জন্য একটা চাকরী ম্যানেজ করেছি । আমি জানি আপনি আমার জন্য খুব ভালো একটা চাকরী ঠিক করেছেন। বলত কি সেই চাকরী ? সেটা যে আপনার অফিসে না এটা অন্তত বুঝতে পারছি। বদি ভাই আপনি আর বেশী দিন হয়ত বেঁচে নাও থাকতে পারেন । তোমার কি আধ্যাত্মিক কোন ক্ষমতা আছে নাকি! না আমার কোন ক্ষমতা নাই । শুধু অনুমান করতে পারি। দেখ হিমু অনুমান করে কিছু বলবা না । মরতে একদিন সবাইকে হবে । এগুলো অনুমান করে বলার কোন বিষয় না । তুমি এখন যেতে পার । বদি ভাই আমার চাকরীর ব্যাপারে কিছু বললেন নাত ? তোমাকে যে চাকরী দিতে চেয়েছিলাম সেখানে অনুমান চলে না । তুমি আসতে পার । বদি ভাই দেখেন আমি আর আপনি একই স্রষ্টার সৃষ্ট । তাই আপনি আমাকে একটা চাকরী দিবেন এটাই স্বাভাবিক ব্যাপার। আজ কাল মামা না থাকলে কিছুই হয় না । আর সেখানে আমি আপনি একই স্রষ্টার সৃষ্ট এর চেয়ে বড় রেফারেন্স আর কি হতে পারে। আপনাকে আমাকে একটা চাকরী দিতেই হবে আপনার স্রষ্টার দোহাই লাগে । হিমু তুমি এখন যাও না হলে আমি তোমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে বাধ্য হব। দেখেন বদি ভাই আজ যদি স্রষ্টা বেঁচে থাকতেন তাহলে আপনি আমার সাথে এমনটা করতে পারতেন না । স্রষ্টা শুধু এক কলম লিখে দিলেই আমাকে আপনি কেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী একটা চাকরী দিতে বাধ্য হতেন। তুমি আসতে পার হিমু। আমি আর তোমাকে টলারেট করতে পারছিনা । হিমু একটা হতাশা মূলক হাসি দিয়ে বদির অফিস থেকে বেড়িয়ে এলো।


স্যার আমি কি আপনাকে এক কাপ চা বানিয়ে দিব ? না রুপা আজ আমার মনটা খুব ভাল । আজ অনেক ক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজলাম । স্যার আমি আপনার জন্য আগে এক কাপ চা বানিয়ে দেই তারপর আপনার গল্প শুনব । না রুপা আমি আজ আর চা খাব না । আজ এক কাপ অমৃত চা খেয়েছি । তাই সেই স্বাদ আর মুছতে চাইছিনা। তাহলে কি স্যার আমি খুব খারাপ চা বানাই । না তা কেন হবে । তুমি রাগ করনা আমি আসলে সেভাবে কথাটা বলিনি । আজ মোড়ের দোকানের এক চা খেয়ে খুব ভালো লেগেছে সেটাই ভুলতে চাইছিনা । ঠিক আছে স্যার । মিসির আলী একটা সিগারেট ধরালেন । রুপা তুমিত আমাদের স্রষ্টার প্রায় সব সৃষ্টি সম্পর্কেই জান। আমাকে কি তুমি বদির ইতিহাস বলতে পারবে । হ্যা স্যার । আমি আপনাকে বাকের ভাইয়ের পুরো ইতিহাস দিতে পারব। আহা তুমি ভুল করছ । আমি বাকের ভাই না বদি ভাইয়ের ইতিহাস জানতে চাই। স্যার একই কথা আসলে আমাদের স্রষ্টার ওই কাহিনীটা ছিল মুলত বাকের ভাইকে নিয়ে সেখানে একটা চরিত্র ছিল বদি । ঠিক আছে রুপা তুমি তাহলে আমাকে সেটাই দাও দেখি কিছু তথ্য পাওয়া যায় কিনা। স্যার কি আমাকে কিছু বলবেন কি হয়েছে আমি যদি আপনাকে কোন তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে পারি তাহলে ভালো লাগত । না তুমি আমাকে বাকের ভাইয়ের সেই কাহিনীটাই আপাতত দাও দেখি ।


শুভ্রর কেবলই মনে পরছে দারুচিনি দ্বীপের দিন গুলির কথা । যতই দিন যাচ্ছে মিরার প্রতি তার ঘৃণা দিন দিন বেড়েই চলেছে । মনে হয় ইস যদি এখন একটিবারের জন্য দারুচিনি দ্বীপে যেতে পারতাম । জীবনের শেষ কয়েকটা দিন সেখানে কাটাতে পারলে খারাপ হতনা । কিন্তু মিরা কে সাথে নিতে চাই না । ওর সাথে আমার সম্পর্কের একটা ইতি টানতে চাই । মিরাকে আমি মুক্ত করতে চাই । না এভাবে আর চলতে পারে না । মিরা যাও তুমি চলে যাও । আজ থেকে তুমি মুক্ত। আর আমি চলে যাব আমার শেষ ঠিকানা দারুচিনি দ্বীপে । শুভ্র তুমি আমাকে এভাবে ছেড়ে যেতে পারনা । আমি তোমাকে বোঝাতে পারবনা আমি তোমাকে কত ভালোবাসি । মিরা কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসি না । আর তুমি আমাকে ছাড়া ভালই থাকবে বলে আমার ধারনা । জীবন কার জন্য থেমে থাকেনা । কিন্তু আমার জীবন থেমে থাকবে শুভ্র সেটা তুমি বুঝবেনা । আমি এখন আর অনেক কিছুই বুঝতে চাইনা । আমি শুধু তোমাকে বলতে চাই মিরা তুমি ভালো থেক

আমার জন্য বেদনারা দরজা খুলে দাড়িয়ে থাকে;
আমি ভেতরে ধুকতেই ওরা আমাকে জড়িয়ে ধরে,
আমাকে নিয়ে খেলা করে,আদর করে,চুমু খায়,
আর আমি নীরবে কেঁদে উঠি;
আজ কোথায় তুমি,ও আমার সুখ গৃহিণী।

মিরার দুচোখ দিয়ে দিয়ে শুধু অশ্রু নেমে এল । বুকের ভেতর অনেক অজানা ব্যাথা দানা বেঁধে উঠল । বাইরে বৃষ্টি নেমে এসেছে । বৃষ্টিতে ভিজতে পারলে মনটা ভালো হয়ে যেত। কিন্তু বৃষ্টির এই বিলাসিতা প্রেমিকের হাতে হাত না রেখে অবগাহন করলে শুধু রয়ে যাবে অপূর্ণতা । শুভ্র তুমি তাহলে কবে যাচ্ছ । জানিনা আজ এক্ষুনি যেতে পারলে ভাল হত । আমার একটা শেষ কথা রাখবে ? ঠিক আছে রাখব। তুমি আগে না হয় সুস্থ হয়ে উঠ তারপর না হয় যেও আমি তোমাকে একটুও বাধা দেবনা । তা কেন দিবে আমি চলে গেলেইত তোমার রঙ্গলিলা পূর্ণ হয়। মিরা বৃষ্টিতে বেড়িয়ে এলো বুক ভরা আর্তনাদ নিয়ে ।



হিমুর সাথে পথে মিরার দেখা হয়ে গেল । আরে মিরা আপনি এই বৃষ্টিতে ভিজে কোথায় যাচ্ছেন । হিমু ভাই আপনাকে পেয়ে ভালই হল । চলুন এক সাথে আমরা আজ বৃষ্টিতে ভিজব । তারপর গাউসিয়া মার্কেটে যেয়ে ফুচকা খাব । ওখানকার ফুচকাটা আমার খুব ভালো লাগে। কিন্তু মিরা আমার যে এক্ষুনি একবার থানায় যেতে হবে। থানায় কেন ? আর বলনা বাদলকে আজ সকালে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে । বাদলতা আবার কে ? আমার এক খালাত ভাই । সকাল বেলা গাঁজার পুটলি সহ ধরা খেয়েছে । ছি আপনার ভাই গাঁজা খায় । ঠিক করেছে ওকে পুলিশ ধরবেনাত কি আদর করবে । আর আপনি যাচ্ছেন ওকে ছাড়াতে ! আহা তুমি বুঝতে পারছনা বাদল এমন ছেলে না । আমি ওকে বলে ছিলাম যে আমি সিগারেট আর খাব না এখন থেকে গাঁজা খাব। আর ও হল আমার অন্ধ ভক্ত । তাই যা আমি করি সেও তা অন্ধের মত অনুসরন করে । আপনি গাঁজা কেন খাবেন । আপনার মত মানুষ যদি গাঁজা খায় তবে এই সমাজের কি হবে হিমু ভাই । কেন আমি কি কোন মহাপুরুষ নাকি যে আমি গাঁজা খেতে পারবনা । আমারত মনে হয় জগতের সব মহাপুরুষরাই জীবনে কোন না কোন সময় গাঁজা খেয়েছে । মিরা আমি যে তোমাকে সেই তখন থেকে তুমি তুমি করে বলছি তুমি আবার মনে কিছু করছনাত । না মটেও না বরং ভালই লাগছে ।
হিমু ভাই আমার সংসার ভেঙ্গে যাচ্ছে । শুভ্র আমাকে ছেড়ে দিবে বলে বলেছে আপনি আমার জন্য কিছু করতে পারবেন ? আমি কি করতে পারি ! আর কি হয়েছে তোমাদের দুজনার মাঝে ? সেটা আগে বল । শুভ্র মনে করে আমি কারো সাথে অবৈধ সম্পর্ক করেছি । কিন্তু বিশ্বাস করুন এমনটা কিছুই হয়নি। মিরা তুমি এখন বাসায় ফিরে যাও । শুভ্র কোথাও যাবেনা । তোমাকে ছেড়ে যাবেনা কখনো । তোমাকে অনেক বেশী ভালো বাসবে । কিন্তু সেত ডিভোর্সের সব কাগজ রেডি করে ফেলেছে । এখন যাও তুমি । শুভ্রর কাছাকাছি থাকাটা তোমার জন্য এখন বেশী জরুরী । কিন্তু হিমু ভাই আপনি কি একবার শুভ্রর সাথে দেখা করবেন? না। এভাবে আপনি না বলতে পারছেন । আমার মনের অবস্থ্যা একবার ভাবুন আপনার কি একটুও খারাপ লাগছেনা । দেখ মিরা হিমুদের মন খারাপ বলে কিছু নাই । আর আমার স্রষ্টার পরলোক গমনের পর আমিত মন খারাপ কি সেটা ভুলেই গেছি । উনিত আমারও স্রষ্টা ছিলেন । আচ্ছা হিমু ভাই স্রষ্টা ছাড়া আমাদের জীবনের এখন কি হতে পারে ? কখনো দেখেছেন সৃষ্টির আগে স্রষ্টার মৃত্যু হতে । স্রষ্টা হয় অমর ।আর সৃষ্টি সেত ক্ষণিকের । জন্ম হবে তারপর মৃত্যু এটাই স্বাভাবিক নিয়ম । কিন্তু স্রষ্টা মরতে পারেনা । স্রষ্টা হবে অমর । তাহলে আমাদের স্রষ্টার সাথে এমন কেন হল। আমাদের জীবন কি তবে থেমে যাবে । না মিরা তুমি দেখে নিও আমরা বেঁচে থাকব আজীবন । স্রষ্টা নিজে চলে গেছেন মৃত্যুর কোন এক অচিন দেশে কিন্তু আমাদের অমর করে গেছেন তার সৃষ্টির মাঝে। উনি আমাদের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন আমাদের অমরত্তের মধ্যে দিয়ে । এটাই বা আমাদের জন্য কম কিসের । স্রষ্টা নিজে মৃত্যুর অন্ধকার ঘরে চলে গিয়ে তার বদলে দিয়ে গেছেন আমাদের অমরত্ত সেই সাথে তিনি বেঁচে থাকবেন আমাদের হৃদয়ের মনি কোঠায় চিরতরে ।


বদি আজকেও এক প্যাকেট সিগারেট নিয়ে এসেছে মিসির আলীর জন্য । স্যার কেমন আছেন? বদি তোমার যে সমস্যা সেটা আমি সল্ভ করতে পারবনা । কারন আমার স্রষ্টা বেঁচে নাই। উনি জীবিত থাকলে হয়ত তোমার সমস্যা সল্ভ করা যেত । এখন আমার ব্রেন আর কাজ করেনা । তবু তোমাকে কয়েকটা কথা বলি । আমি তোমার ইতিহাস পড়েছি । বাকের ভাই যখন জেলে ছিল তার ফাঁসির পূর্বে একবার তোমাকে জোর করে সিগারেট চিবিয়ে খেতে বাধ্য করা হয়েছিল । তারপর যেহেতু তুমি বাকের ভাইকে প্রচুর স্রদ্ধ্যা করতে তাই তার ফাঁসিটাকে তুমি মেনে নিতে পারনি । আর বাকের ভাইয়ের ফাঁসিটা ছিল অনেকটা মিথ্যা প্রহসন । সব মিলিয়ে তোমার মনের ভিতর একটা ভীতি আর ঘৃণার জন্ম হয় । যার কারনে তুমি এসব ভুলতে পারনা আজো। তাই আজো তুমি সেই ক্ষোভ নিয়ে সিগারেট চিবিয়ে খাও। এভাবে বহু দিন সিগারেট চিবিয়ে খাওয়ার কারনে তোমার মারাত্মক ক্যানসার হয়েছে । তুমি যে আর বেশী দিন বাচবেনা এটাও তুমি নিজেই ভালো করে জান । আর সে কারনেই তুমি মিরাকে ভালবেসেও বিয়ে করতে পারনাই । মিরা যখন শুভ্রকে বিয়ে করে ফেলে সেটাও তুমি মেনে নিতে পারনি । আর তাই প্রতিশোধের জন্য মিরার সুখের সংসারে তুমি ষড়যন্ত্র করলে । তুমি চাইলেনা ওরা সুখে থাকুক। আর মিরাকে ঠিকই তোমার অফিসে চাকরীতে বহাল রাখলে। স্যার আমার কি উচিত হবে ওদের কাছে ক্ষমা চাওয়া ? অবশ্যই তুমি ক্ষমা চাইবে । ঠিক আছে স্যার আমি তাহলে এখন মিরার কাছে যাচ্ছি । না বদি তুমি যাবে শুভ্রের কাছে । যেন মিরা সেখানে না থাকে । তুমি শুভ্রকে সব কিছু বুঝিয়ে বোলে ক্ষমা চাইবে । এটাই তোমার সব সমস্যার সমাধান হতে পারে।

হিমু বসে আছে থানার অসির সামনে । অসি সাহেব কেমন আছেন ? হিমু আপনি আবার এসেছেন । আপনার যন্ত্রণায় আমার জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে । এবার ভাবছি আপনাকে এমন ধলাই দিব যে আপনি আপনার স্রষ্টার কথা চির তরে ভুলে যেতে বাধ্য হবেন । অসি সাহেব রাগ করবেন না প্লিজ । আমাকে আগে এক কাপ চা খেতে দিন তারপর আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি আমি চা খেয়েই চলে যাব । আপনাকে এত টুকু বিরক্ত করব না । ঠিক আছে চা খেয়েই চলে যাবেন । এরই মধ্যে ফোন এলো । অসি সাহেব আমি বদি বলছি ।জি স্যার কেমন আছেন ? আমি কেমন আছি সেটা পরে হবে আগে আপনি বাদল নামে যে ছেলেটিকে ধরে এনেছেন ওকে ছেড়ে দেন । কিন্তু স্যার সেত ধরা খেয়েছে গাঁজা সহ । তাতে কি ওকে হাজতে এনে ধুকাতে হবে । আপনি ওকে ছেড়ে দিন । সেদিন যদি আমার এমন ক্ষমতা থাকত আমি বাকের ভাইকে এভাবে মরতে দিতাম না । ঠিক আছে স্যার আমি ছেলেটিকে ছেড়ে দিচ্ছি । হিমু বদি স্যার আপনার কে হন ? দেখুন অসি সাহেব আপনি হয়ত ভুলে গেছেন আমরা সবাই একই স্রষ্টার সৃষ্টি । হিমু বাদলকে সাথে নিয়ে থানা থেকে বের হয়ে এলো।


ময়ূরাক্ষী নদীর ঠিকানা রুপা পেয়েছিল হিমুর কাছ থেকে । আজ অনেক দিন পর মনে হল সেই নদীতে যদি একটু গোসল করা যেত। তবে জীবন থেকে সব না পাওয়ার ব্যাথা গুলো ধুয়ে মুছে যেত। চারিদিকে বইছে আজ যেন শোকের ব্যাথাতুর ধোওয়া ময় বাতাস । নদীর পানি যেন নীরব হয়ে আছে । কোথাও কোন স্রোত নাই । আজ মনে হচ্ছে রুপার কাছে সত্যি আজ কোথাও কেউ নেই । চোখে যেন চিরকালের ঘুম নেমে এসেছে । এমন সময় হিমুর ফোন আসাতে রুপার ঘুম ভেঙ্গে গেল। হ্যালো রুপা আমি হিমু বলছি । শোন আজ রাতে আমি শ্রীপুর চলে যাচ্ছি । কেন শ্রীপুর কেন যাচ্ছ ? বদি ভাই আমাকে সেখানে যেতে বলেছেন । কেন যেতে বলেছেন সেটা আমি নিজেও জানিনা । শুধু ওখানকার একটা ঠিকানা উনি দিয়ে বলেছেন আমি ওখানে গেলেই জানতে পারব । হ্যালো রুপা তুমি কি কাঁদছ ? না কাঁদব কেন ! হিমু তুমি কি আজ টেলিভিশন এর খবর দেখেছ? না আমি টেলিভিশন পাব কোথায় !
হিমু বদি ভাই আর নেই । হিমু তুমি কি যাবার আগে আমাকেও তোমার সাথে করে নিয়ে যাবে ? রুপা আমার হাতে খুব বেশী সময় নাই । আর একটু পরেই ট্রেন ছেড়ে দিবে । আমি কমলাপুর থেকেই তোমাকে ফোন দিয়েছি । সে কি তুমি বদি ভাইয়ের দাফনে যাবেনা ! রুপা আমি আমার স্রষ্টার মৃত্যু দেখেছি । আমি দেখেছি মৃত্যুর যন্ত্রণা কতটা কষ্টের হতে পারে। তাই আমি আর নতুন করে কোন মৃত্যুর ছবি দেখতে চাইনা । অন্তত আমার স্রষ্টার সৃষ্টিগুলোর । আর আমার মত হিমুদের কোন কষ্ট বুকের ভেতর স্থান দিতে নেই । রুপা তুমি ভালো থেক । আর আমি যেখানেই থাকি জানবে আমি আছি তোমার এবং তোমাদেরই চির হিমু হয়ে । রুপার চোখে এক পরম সুখের তৃপ্তি ফুটে উঠল যেন ।


সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:২৯
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×