somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

না-মানুষ

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





আমি একজন না-মানুষ। সোজা কথায় না-মানুষ হলো সেই, যে মানুষ না। এই মানুষ না হওয়ার বেশ আনন্দ আছে। কোন প্রকারের পাপ-পূণ্যের দায়বদ্ধতা থাকেনা না-মানুষদের। আমারও নেই। এইজন্য অবশ্য লোকে আমাকে ঘৃণা করেনা। আমাকে অনেকেই সাধু সন্ন্যাসী বলে মনে করে। আমার কাছে মানুষজন এসে তাদের সমস্যার কথা জানায়। আমিও চেষ্টা করি তাদের সেসব সমস্যার সমাধান করে দিতে। অবশ্য এইসব সমস্যার সমাধানের জন্য আমি সম্মানী বাবদ কিছু অর্থকরী নিয়ে থাকি। কারণ না-মানুষ হলেও আমারও জীবিকা নির্বাহের প্রয়োজন রয়েছে। কিছুদিন আগে শফিক নামের একটি ছেলে এসেছিলো তার সমস্যা নিয়ে। তার স্ত্রীর নাকি অন্য একটি ছেলের সাথে সম্পর্ক রয়েছে। আমি তাকে তার স্ত্রীকে খুন করার পরামর্শ দিলাম। তার কিছুদিন পরেই তার স্ত্রীও এলো। আমি তাকেও খুন করার পরামর্শ দিয়ে দিলাম। দুই জনের কাছ থেকেই বেশ ভাল রকমের অর্থকরী উপার্জিত হয়েছিলো। আজকে আবার একজন এসেছে তার সমস্যা নিয়ে। নাম সুমন। ছেলেটা আমার সামনেই বসে আছে।

আমি কি এখানে একটা সিগারেট ধরাতে পারি ?

ধরান।

ছেলেটা একটা সিগারেট ধরিয়ে এত দ্রুত টানতে শুরু করল, যেন এখনই বাস ছেড়ে দিবে। সিগারেট শেষ না হলেও সমস্যা আবার বাসও মিস হবে। একবার বাস মিস হলে আর দ্বিতীয় বাস পাওয়া যাবেনা। আমি বললাম এত ব্যাস্ত হওয়ার কিছু নেই। আপনি ধীরে সুস্থে আয়েশ করেই সিগারেট টানুন। সিগারেট হলো আয়েশ করে খাওয়ার জিনিস। ধীরে সুস্থে আয়েশ করে না টানলে হঠাৎ একসাথে অনেক ধোঁয়া জমে হৃদ যন্ত্রের ক্রিয়ায় সমস্যা হয়ে মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

আমার মনে হলো ছেলেটা আমার কথা বুঝতে পেরেছে। এখন সে ধীরে সুস্থেই সিগারেট টানছে। তবে তার চোখে মুখে একটা অপরাধী অপরাধী ভাব কাজ করছে। বোঝাই যাচ্ছে ছেলেটা কোন কিছু নিয়ে ভয়ে খুব টেনশনের মধ্যে আছে। এবার আপনার সমস্যার কথা বলুন।

আমি একটা মেয়েকে খুব ভালোবাসি।

বেশত। ভালোবাসা খুব ভাল জিনিস। কিন্তু মেয়েটা আপনাকে ভালোবাসেনা এইতো ?

জী না, মেয়েটাও আমাকে প্রচন্ড রকম ভালোবাসে।

তাহলে সমস্যা কোথায় ?

সমস্যা হলো মেয়েটার হাসবেন্ড কে নিয়ে !

হুম ! পরকীয়া কেস।

আমাকে সাহায্য করুণ প্লীজ !

এটা কোন বিষয়ই না। আপনাকে শুধু একটা খুন করতে হবে।

খুনের কথা শুনে ছেলেটা চমকে উঠলো। খুন করতে হবে ! মানে মেয়েটার হাসবেন্ডকে খুন করার কথা বলছেন ?

ছেলেটা ঘামতে শুরু করেছে। কপালের রেখাগুলো মোটা করে ভাঁজ হয়ে ফুলে উঠেছে। আবার একটা সিগারেট ধরাল। এবার আগের চেয়ে আরও দ্রুত সিগারেট টানা শুরু করেছে। এরই মধ্যে সে সিগারেট টানা সম্পর্কে আমার জ্ঞানদানের কথা ভুলে গেছে। অবশ্য টেনশনে থাকলে মানুষের মস্তিষ্কের সাধারণ চিন্তা শক্তি কাজ করেনা। তখন সে কয়েক সেকেন্ড আগে কি হয়েছে ভুলে যায়। সামনে কি হবে সেটাই তখন মূখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। অনেকের আবার হিতাহিত জ্ঞান থাকেনা। তখন তার পক্ষে অনেক কিছুই করে ফেলা সম্ভব হয়। এই ছেলেটাও তেমন প্রকৃতির। এই জন্য মানুষ খুন করার কথা শুনে তার ভেতর ভীতি কাজ করছে। আমার মত না-মানুষ হলে এমনটা হত না। মানুষ খুন করার কথা শুনে স্বাভাবিক থাকতে পারত।

আপনি দেখছি গভীর চিন্তার মধ্যে পরে গেছেন ? এত চিন্তার কিছু নেই। খুনটা করতে হবে খুব ঠাণ্ডা মাথায়। কোন রকম ক্লু রাখা যাবেনা। এবং সাথে সাথেই মেয়েটার সাথে থাকা যাবেনা। মেয়েটাকেও বলে দিবেন যেন কিছুদিন ঘরে থেকেই নিজ স্বামীর হত্যাকান্ডে শোক পালন করে। তারপর সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে এলে দুজনে মিলে নিজেদের অভিসার পূর্ণ করবেন। ছেলেটা মনে হলো আমার কথায় ভরসা পেল। আমাকে ধন্যবাদ জানিয়ে সিগারেট টানতে টানতেই উঠে চলে যেতে লাগল। এইযে মশাই, দাঁড়ান। আপনি দেখছি আমার ফিস না দিয়েই চলে যাচ্ছেন !

ওহ ! দুঃখিত। আসলে মাথাটাই কাজ করছেনা। আপনার ফিসটা পকেটেই রেখেছিলাম। দুঃখিত
এই নিন।

জী ধন্যবাদ !

মাঝে মাঝে আমার ঘরে আমার গুরুজী আসেন। তার মৃত্যুর পর থেকেই মূলত আমার জন্য এই পরম সৌভাগ্যের সূচনা হয়। গুরুজী এসে আমার সাথে কথা বলেন। নানারকম জ্ঞান দান করেন। আমাকে দীক্ষা দেন। অনেক দিন পর আজকে আমার ঘরে গুরুজী এসেছেন। কি কেমন চলছে তোমার দিনকাল ?

স্যার ভাল না ! আমি আমার গুরুজীকে স্যার বলেই সম্বোধন করি।

সেটা অবশ্য না চলারই কথা। এই, কি ব্যাপার লেবু দিয়ে মাংস রান্না করা হয়েছে মনে হচ্ছে ? বেশ গন্ধ পাচ্ছি ! কিন্তু মনে হচ্ছে লেবুর পরিমাণটা অনেক বেশি দিয়ে ফেলছ ? মাংসের চেয়ে লেবুর গন্ধটা বেশি আসতেছে। মাংস আর লেবুর গন্ধ সমান আসতে হবে। না হলে সুস্বাদু হয়না। আজকে মনে করবাত; তোমাকে অবশ্যই রান্নাটা ঠিক ভাবে শিখিয়ে দিয়ে যাব।

জী স্যার। স্যার আপনার ভাগ্যটা খুব ভাল। আজকে অনেকদিন পর আপনি এসেছেন। আর আজকেই লেবু দিয়ে মাংস রান্না করিয়েছি।

এক কাপ চা খাওয়াতে পারবা ?

জী স্যার অবশ্যই !

শোন দুধ চা কর। আর দুধ কিন্তু অবশ্যই গাভীর দিবা।

স্যার কি সাথে সিগারেট খাবেন ?

ঘরে থাকলে একটা দাও খাই।

স্যার বেনসন কিন্তু ?

আরে দাওত !

স্যার চায়ের কাপ থেকে পিরিচে একটু একটু করে চা ঢেলে নিয়ে চুমুক দিচ্ছেন। চা শেষ করে
সিগারেট ধরালেন। কি ব্যাপার তুমি সিগারেট ধরাচ্ছনা ?

স্যার না, মানে !

ধুরও ! ধরাওত। আমার এসব প্রেজুডিস নাই।

স্যারের সাথে সাথে আমিও একটা সিগারেট ধরালাম।

জীবন খুব সাধারন একটা বিষয়। এই বিষয়টাকে আমরা মানুষরা খুব জটিল করে ফেলাই। অবশ্য তোমার ক্ষেত্রে এইটা প্রযোজ্য না। তুমিত আবার মানুষ না। তুমি হইলা না-মানুষ। এই না-মানুষ হওয়ার আইডিয়াটা কিন্তু চমৎকার। বৃষ্টি হবে আর সেই বৃষ্টিকে উপভোগ করতে পারলানা, এরচেয়ে হতভাগ্য আর কিছু নাই। সর্দি লাগবে, জ্বর আসবে, এইসব অজুহাত দেখান হলো যতসব মানুষের জটিলতা। বৃষ্টি হবে, উপভোগ কর। শর্দি জ্বরের জন্য ডাক্তার আছে। ডাক্তারের কাছে যেন যেতে না হয়, এইজন্য সব এড়িয়ে চললাম, তাহলে ডাক্তাররা খাবে কি ?

জী স্যার, একদম ঠিক বলেছেন।

একটা কাগজ আর কলম নিয়ে আস। তোমাকে লেবু দিয়ে মাংস রান্না করার রেসিপিটা লিখে দিয়ে যাই। এরপর আসলে যেন তৃপ্তি ভরে খাওয়াতে পার।

স্যার খুব আগ্রহ নিয়ে লিখছেন।

এক কেজি মাংস, অল্প পরিমানে পুদিনা পাতা, আদা তিন টেবিল চামচ, আস্ত রসুন কুঁচি তিন চারটা, গোল গোল করে পেঁয়াজ কুঁচি, লবন পরিমান মত, কাঁচা ঝাল মরিচ লম্বা করে কেটে দিতে হবে (তবে কোন হলুদ আর মরিচের গুঁড়া দেয়া যাবেনা), দেড়টা বাতাবী লেবু। কোন ঝোল রাখা যাবেনা। ভূনা ভূনা করে রান্না করবা।

হঠাৎ কলিং বেলের শব্দে ঘুম ভাঙল। দরজা খুলতেই দেখি রাজুর মা দাঁড়িয়ে আছে। রাজুর মা প্রতিদিন বিকাল বেলায় এসে আমার জন্য রান্না করে দিয়ে যায়। তাছাড়া ঘরের কিছু টুকটাক কাজ থাকলেও করে দিয়ে যায়। রাজুর মার বয়স খুব বেশি না। মনে হয় এখনও তিরিশও হয়নি। বিয়ের পর দুই বছরের মাথাতেই ছয় মাসের ছেলেটাকে সহ রেখে তার স্বামী আরেকটা বিয়ে করে তাকে ছেড়ে চলে যায়। এখন ছেলেটাকে নিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে পাশের বস্তীতেই থাকছে। বাড়ি বাড়ি কাজ করে যা রোজগার করে তাই দিয়ে ছেলেকে নিয়ে তার জীবন চলে।

রাজুর মা শোন, আজকে লেবু দিয়ে মাংস রান্না করবা। লেবু দিয়ে মাংস রাঁধতে পারত ? না পারলে বল শিখিয়ে দিচ্ছি।

ভাইজান, এইডা আর এমন কঠিন কি ! মাংস রান্না কইরা হের মইধ্যে লেবু চিইপ্প্যা দিয়া দিলেই হইব।

এত সহজ হলেত, হয়েই যেত তাইনা ? শোন, আমি শিখিয়ে দিচ্ছি কিভাবে রান্না করবা লেবু দিয়ে মাংস। মাংসের সাথে অল্প পুদিনা পাতা নিবা, আদা দিবা তিন টেবিল চামচ, আস্ত রসুন কুঁচি দিবা চারটা, গোল গোল করে পেঁয়াজ কুঁচি নিবা, অল্প একটু লবন দিবা, কাঁচা মরিচ লম্বা করে কেটে দিবা, কিন্তু কোন হলুদ আর মরিচের গুঁড়া দিবানা, দেড়টা বাতাবী লেবুর রস দিয়ে ভূনা ভূনা করে রান্না করবা। কোন ঝোল রাখবানা। রান্না হলে আমার জন্য সামান্য কিছু রেখে, বাকিটা তোমার আর তোমার ছেলের জন্য নিয়ে যাবা।

হয়, ভাইজান বুঝতে পারছি।

নাহ ! রাজুর মা রান্নাটা ঠিক মত করতে পারেনি। মাংসের চেয়ে লেবুর গন্ধটাই বেশি আসছে। একগাদা লেবু দিয়ে ফেলছে। খেতেও মোটেও সুস্বাদু হয়নি। কাল আবার আসুক রাজুর মা, তার আর আমার এখানে কাল থেকে কাজ করতে হবে না।

নাহ ! গল্পটা ঠিক জমছেনা। এমন গল্প লিখলে আজকাল পাঠক খাবেনা। আর পাঠক না খেলে একজন লেখকের কোন সার্থকতা থাকেনা। একজন লেখক হিসেবে নিজের কাছে আত্মতৃপ্তি থাকলেও পাঠক সমাজে পুরো মাত্রায় একজন ফ্লপ লেখক হিসেবেই দুর্নাম কামাই করতে হবে। পাঠকের রুচির প্রতি জ্ঞান রেখে লিখতে হবে। তবে আবার নিজের মত করে রুচি তৈরি করে দেয়ার মাঝেও সার্থকতা আছে। সোজা কথা পাঠককে খাইয়ে দিতে হবে। সেটা বিড়িই হোক অথবা চুরুট। একজন লেখক হলো তার নিজ সাহিত্যকর্মের স্রষ্টা। যার লেখনীতে সৃষ্টি হয় বিভিন্ন চরিত্র আর সেইসব চরিত্রকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কাহিনীর।

গল্পের নায়িকার নাম দিলাম শ্রাবণী। রুপের বর্ণনা হিসেবে প্রথাগত নিয়ম অনুযায়ী পরীর মত অনিন্দ্য সুন্দরী কল্পনা করে নিলাম। নায়িকা সব সময় শাড়ি পরে থাকে। বেশিরভাগ শাড়িই প্ল্যাস্টিক এর মতো কাপড়ের। হালকা সাজসজ্জা থাকা আবশ্যক। এই যেমন ঠোঁটে লিপস্টিক, কপালে টিপ, হাতে রেশমি চুড়ি, উঁচু হিলের জুতা ইত্যাদি। গল্পের নায়ক এখানে দুইজন। একজনের নাম দিলাম সুমন। সুমন একজন সুপ্রতিষ্ঠিত সাহিত্যিক। গল্পের অপর নায়ক শফিক। সেও একজন সাহিত্যিক। তবে সুমনের মত সুপ্রতিষ্ঠিত নয়। পাঠক সমাজের কাছে সুমনের মত কদর তার নেই। আর এই শফিকের স্ত্রীই হলো গল্পের নায়িকা শ্রাবণী।

শফিকের সাথে তার স্ত্রী শ্রাবণীর দাম্পত্য সম্পর্ক ভাল না। মূলত সুমনের সাহিত্যকর্মের প্রতি ভক্তি থেকে শ্রাবণীর সুমনের প্রতি দুর্বলতা থেকে গভীর প্রণয়ের সূচনা হয়। তার উপর নিজের স্বামীকে নিয়ে আত্মগ্লানিতো রয়েছেই। কাহিনীর সমাপ্তি এভাবে করা যেতে পারে শফিক শেষ পর্যন্ত সিদ্ধ্যান্ত নেয় তার সুমনকে খুন করার। তার স্ত্রী অর্থাৎ শ্রাবণীও ঠিক করে যে সে তার স্বামীকে খুন করবে। অন্যদিকে, সুমন মনে মনে ভাবতে থাকে সে একজন সুপ্রতিষ্ঠিত লেখক। অথচ শ্রাবণীর মত এমন অপরূপ সুন্দরী একটা মেয়ে কিনা তার না হয়ে; হলো শফিকের মত একজন অখ্যাত লেখকের স্ত্রী। তার ভেতর অহংকার বোধ থেকে ক্রমশ শফিককে খুন করার বাসনা চেপে বসে। এভাবে একে অপরকে খুন করার পরিকল্পনা থেকে এক পর্যায় শফিক ও সুমন দুইজন একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে অবশেষে দুইজনই মারা যায়। আর বেচারি শ্রাবণী শেষ পর্যন্ত তার স্বামী ও প্রেমিককে হারিয়ে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে।

কিন্তু কাহিনীটাকে যদি এভাবে না লিখে, অন্যভাবে লেখা যায়। তাহলে কেমন হয় সেটাই এখানে বিবেচ্য বিষয়। গল্পের নায়ক এখানে একজনই। শফিক। জীবন যুদ্ধে ক্লান্ত। আত্মগ্লানিতে ভোগা একটি চরিত্র। অনিন্দ্য সুন্দরী স্ত্রীর সাথে কোনভাবেই দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে না পারা একটি চরিত্র। যার কাছে তার সাহিত্যকর্মের সৃষ্টি অথবা ধ্বংসের পটভূমি তার স্ত্রী শ্রাবণী।

কি ভাবছো ?

আরে স্যার যে; কখন এলেন স্যার ? একদমই টের পায়নি স্যার !

টের পাবা কিভাবে ? তুমিত আর কোন সাধারণ মানুষ নও। তুমি হোলা না-মানুষ। সাধু সন্ন্যাসী। গভীর ধ্যানে মগ্ন থাকো সারাদিন। তা এখন কি নিয়া ধ্যানে মগ্ন ছিলা ?

স্যার ভাবছি আপনার মত লেখক হব।

বেশত ! কিন্তু লেখক হওয়ার যে যাতনা আছে সেটা কি সহ্য করে নিতে পারবা ?

স্যার আমি না-মানুষ। আমার কাছে এইসব যাতনা কোন বিষয়ই না।

বেশ ! তা কী লিখবা কিছু কি ঠিক করছ ?

স্যার, একটা খুনের গল্প লিখতে চাই।

চমৎকার ! তা সমস্যা কোথায় ?

সমস্যা স্যার, কীভাবে গল্প লিখলে পাঠক খাবে সেইটা বুঝতে পারতেছিনা।

শোন এখন থেকে এমন স্যার স্যার আর করবানা। তোমার মত না-মানুষ এমন স্যার স্যার করবে এটা মানায় না। তুমি হবা এইসব প্রেজুডিস আর ভদ্রতার ঊর্ধের।

বুঝতে পারছি; বলেই ভদ্রতার কোন তোয়াক্কা না করে স্যারের সামনেই এবার একটা সিগারেট ধরালাম। স্যার আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছেন।

কি গল্পের বিষয়ে কী কিছু মাথায় আসলো ?

হুম ! এসেছে। আচ্ছা, আপনি কি মানুষের মাংস রান্না সম্পর্কে কোন বিশেষ রেসিপি জানেন ?

স্যার তার ভ্রুযুগল কুঁচকিয়ে আমার দিকে একবার তাকিয়ে কী যেন ভাবলেন ! তারপর বললেন, মানুষের মাংস নোনতা হওয়ার কথা !

মাংস রান্না করাই আছে। আমিত আর রাঁধতে জানিনা। কাজের বুয়ার হাতের রান্না। যদিও আপনার রেসিপি অনুযায়ী তেমন একটা সুস্বাদু হয়নি, মাংসের সাথে লেবুর পরিমাণটা ঠিক মত মিশ্রিত হয়নি। তারপরেও কি একটু খেয়ে দেখবেন ?

সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৬
৩৯টি মন্তব্য ৩৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×