somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কান্ডারি অথর্ব
আমি আঁধারে তামাশায় ঘেরা জীবন দেখেছি, আমার বুকের ভেতর শূণ্যতা থেকে শূণ্যরা এসে বাসা বেঁধেছে, আমি খুঁজেছি তোমাকে সেই আঁধারে আমার মনের যত রঙ্গলীলা; আজ সাঙ্গ হতেছে এই ভবের বাজারে।

রহস্যাবৃত পিরামিড আর মায়ানমারের প্যাগোডা অঘোরে অনুরূপ

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




আজব! এই দুনিয়া, আজব! এই দুনিয়ার মানুষ; মানুষের মাঝে শুধুই বিরাজ করে ভেদাভেদ।

ভেদাভেদ ধর্ম নিয়েও- ধর্মীয় রীতিনীতি, প্রার্থনাগত নিয়ম-শৃঙ্খলা সবকিছুতেই ভিন্নতা। কিন্তু ভেবে দেখার বিষয় হলো- এইযে এত ভেদাভেদ; অথচ বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোর মাঝে গঠনশৈলীগত মিল বিন্যাস বিদ্যমান। পিরামিড কত সহস্রাব্দীর স্থাপত্য শৈলী! পিরামিড নিয়ে রহস্য, জল্পনা-কল্পনা কোনকিছুরই কমতি নেই। অথচ ত্রিভুজাকৃতির এই পিরামিডের সাথে মিল রয়েছে গীর্জা, মন্দির, প্যাগোডা, মসজিদের কাঠামোগত নির্মাণশৈলীর। কোনটা হয়ত গম্বুজ আকৃতির কিন্তু হলেও সেগুলো শীর্ষ থেকে ভূমি পর্যন্ত ত্রিভুজাকারেই বিন্যস্ত। খুব সম্ভবত, পৃথিবীর আদি স্থাপত্যগুলোর মধ্যে পিরামিড সবচেয়ে আদিমতম স্থাপত্য নিদর্শন। এরও বহু পরে নির্মিত হয়েছে বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়। অর্থাৎ মতের অমিল থাকলেও মানুষ তার পবিত্র স্থানগুলোকে ভিন্ন নামে ডাকলেও আকার-আকৃতিতে পার্থক্য করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেনি। এই যেমন- পারেনি HEAVEN or HELL ধারনাতে খুব একটা ভিন্নতা প্রকাশ করতে!

মিশরের আদিমতম সভ্যতার পুরাকীর্তি পিরামিড নির্মাণের বহু বছর পর গৌতম বুদ্ধের আগমন এবং তারও অনেক পরে নির্মিত হয়েছে প্যাগোডা। বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৫৬৩ অথবা ৪৮০ অব্দে আর পিরামিডের ইতিহাস খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ৫০০০ বছর আগের। এশিয়ার মধ্যে এক মায়ানমারেই রয়েছে হাজারটা প্যাগোডা! আর এইসব প্যাগোডাগুলোর নির্মাণশৈলীর সাথে মিল রয়েছে পিরামিডের নির্মাণশৈলীর। অথচ মায়ানমারের প্যাগোডাগুলোর নির্মাণ ইতিহাস কিন্তু খুব একটা বেশী পুরাতন নয়! তারপরেও মিল থাকার কারণ কী? নিশ্চয় অনুকরণ বা অনুসরণ নয়! কারণ মানুষ আসলেই তার পবিত্র স্থান এবং অস্তিত্বের স্বরূপে আমূল পরিবর্তন আনতে ইচ্ছা পোষণ করেনি। আধুনিক স্কলারদের পক্ষে আদিম স্থাপত্যশৈলীর ব্যতিক্রম কিছু নির্মাণ না করার কারণ অনুধাবনে অপারগতা থাকলেও যুগে যুগে পুরো পৃথিবী জুড়েই নির্মিত হয়ে আসছে প্রায় একই পিরামিড আকৃতির নির্মাণশৈলী।

মায়ানমারের প্রায় অধিকাংশ বুদ্ধ মন্দির-প্যাগোডা স্থাপিত রয়েছে পাগান বা বাগান রাজ্যে। পাগানে নির্মিত হয়েছিলো প্রায় দশ হাজার পিরামিড আকৃতির মন্দির-প্যাগোডা। কিন্তু দুঃখজনক হলো এগুলোর মধ্যে প্রায় অর্ধেক এখন পর্যন্ত টিকে আছে।

শ্বেসান্ডা প্যাগোডা



রাজা আনাওরাহতা মিনসো ১০৫৭ সালে এটি নির্মাণ করেছিলেন। এটির নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে টেরাকোটা। গম্বুজ থেকে ভূমি পর্যন্ত পিরামিডের মত ধাপে ধাপে এর বিন্যাস।

দহ্ম্মায়ণ গাই মন্দির



পাগানের সবচেয়ে বৃহৎ মন্দির যা নির্মিত হয় ১১৬৭-১১৭০ সালের রাজা নরথুর সময়কালে। কিন্তু রাজার মৃত্যুর পর অজ্ঞাত কারণে এর নির্মাণ বন্ধ হয়ে যায়। মন্দিরটির একটি বিশেষ অংশ ইট দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়।



ঠিক যেমনটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল মিশরের বিখ্যাত খুফুর পিরামিডের একটি বিশেষ অংশ এবং সেটির কারণও অজ্ঞাত রয়েছে আজ অবধি।

বুলেঠি মন্দির



শ্বেসান্ডা প্যাগোডার মতই এটির নির্মাণশৈলী। কিন্তু এখানে রয়েছে মিশরীয় পুরাকীর্তির অবিকল এক পুরাকীর্তি দুটি সিংহের পশ্চাদ্দেশ লাগিয়ে বিপরীত মুখো হয়ে বসে থাকার মূর্তি।



সুলামণি মন্দির



১১৮৩ সালে নরপতিশীথু এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন। এর নির্মাণশৈলীতে রয়েছে ট্রিপটিচ (পাশাপাশি আটকান তিন তক্তার উপর অংকিত ছবি)অর্থাৎ একসারিতে তিনটি দরজা যা অনেক মসজিদ কিংবা গীর্জাতেও দেখা যায় কিংবা দরজা না হলেও উপাসনালয়গুলোর দেয়ালে কিংবা গীর্জায় যেখানে যীশুর মূর্তি স্থাপিত হয় সেখানে এমন ট্রিপটিচ আকারে খোদাই করে ফাঁকা স্থান রাখা হয়।



বাইয়েন নিউউ

প্রায় ১২০০ সালে রাজা আলাউংশীথুর রাজত্বের সময়কালে এটি নির্মিত হয় যার বিন্যাস কৌশলে রয়েছে পিরামিডের বিন্যাসগত মিল। এখানেও রয়েছে ট্রিপটিচগত মিল।

গাওডাও পালিন



পাগানে এটি হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহৎতম মন্দির যার নির্মাণ শুরু হয়েছিল রাজা নরপতিশীথুর সময়কালে এবং ১২২৭ সালে রাজা হিটলোমিনলোর সময়কালে শেষ হয়। এর নির্মাণ শৈলীতেও বাইয়েন নিউউর মতই কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে।

আনন্দ মন্দির



গুরুত্বের দিক দিয়ে পাগানে সবচেয়ে বেশী পবিত্র মনে করা হয় আনন্দ মন্দিরকে যা নির্মিত হয়েছিল ১১০৫ সালে রাজা কায়ানযিত্থার সময়কালে।

যদিও, ১৯৭৫ সালের ভূমিকম্পে এইসকল মন্দির-প্যাগোডার বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল; পরবর্তীতে এগুলোর হারানো ঐতিহ্য পুনরায় ফিরিয়ে আনা হয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৫৭
১৯টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×