somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাধীন পেশায় দুই বছর!

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০১২ তে বিবিএ শেষ করে একটা আইটি ফার্মে প্রথম জয়েন করি ২০১৩ এর জুন মাসে । এরপর এমবিএ শেষ করে একটা হেলথ প্রোজেক্ট এ চাকরি নিয়ে ঢাকা ছেড়ে দেই। তারপর ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে সে চাকরিটাও ছেড়েছুড়ে বাড়ি চলে আসি। কিন্তু ব্যবসা আর করে ওঠা হয়না শেষ পর্যন্ত। ফলশ্রুতিতে আবার জয়েন করি চাকরিতে। তবে এবার মাইক্রোফাইন্যান্সে। ২০১৪ এর ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ এর মার্চ মাস পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন বছর এই সেক্টরে থেকে আবারও চাকরি ছেড়ে দেই। এবারে চাকরি ছাড়ার উদ্দেশ্যটা শুধুমাত্রই ব্যক্তি স্বাধীনতার জন্য।

স্বাধীন চাকরি! সেটা আবার হয় নাকি? বাবাকে ছোটবেলা থেকেই দেখেছি চাকরি করেন। কিন্তু নিজের ইচ্ছেমত। তাই নিজের আগ্রহের কথাটা বাবাকে জানাই। প্রথমে অনীহা দেখালেও পরে সম্মতি জানালে আমি আগের কোম্পানিতে রিজাইন দিয়ে বাবার সুপারভিশনে ২০১৮ সালের এই দিনে জয়েন করেই ফেলি স্বাধীন পেশা ইন্স্যুরেন্স এ!



শুরুর দিকটা খুব পজেটিভ ছিল না। যদিও এর পেছনে নানা ফ্যাক্টর রয়েছে। বাহিরের দেশের ঠিক উলটো চিত্র আমাদের দেশের বীমা খাতে। আমাদের দেশের বীমা শিল্পের শুরুটা ভালো হলেও মাঝে খুব খারাপ গিয়েছে। ২০১০ সালে আইডিআরএ (বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর) গঠনের পর বীমা খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা অনেকটা ফিরে এলেও কিছু কিছু কোম্পানির কারণে এখনও সাধারণ মানুষের মনে বীমা সম্পর্কে একটা নেগেটিভ ধারণা রয়েছে। আর যার ফলে ভালো কোম্পানিগুলিকেও কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। আশা করি সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। যেহেতু মুজিব বর্ষ থেকে ০১ মার্চকে জাতীয় বীমা দিবস ঘোষণা করা হয়েছে, সেহেতু এখন থেকে এই সেক্টরে সরকারের সুনজর থাকবে সেটাই আমাদের কাম্য। যাই হোক যা বলছিলাম, ফিক্সড স্যালারির চাকরি ছেড়ে এমন একটা চাকরিতে জয়েন করেছি যেখানে ইনকামটা হয় সেলস বেইজড! এমন কোন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি নেই যে আপনাকে ফিক্সড স্যালারি দিবে। আর আপনি যতো বড় মার্কেটিং (উন্নয়ন) কর্মকর্তাই হোন না কেন আপনি যদি ডিরেক্ট সেলিং না জানেন তাহলে আপনি এই পেশায় বেশিদিন টিকে থাকতে পারবেন না। যেহেতু চাকরি ছেড়ে ফুলটাইম এই পেশায় এসেছি সেহেতু আমাকে এটার আয়ের উপর ই ডিপেন্ড করতে হবে। তাই একটু টেনশন হচ্ছিল। পরে আবার চিন্তা করলাম ০৬ বছর মার্কেটিং পড়ে যদি এখন মার্কেটিং করতে ভয় পাই তাহলে তো হবে না। যেভাবেই হোক এ পেশায় টিকে থাকতেই হবে। কারণ এর মতো স্বাধীন চাকরি আর নেই। আর বাবা যদি ২৫ বছর এই পেশায় টিকে থাকতে পারে তবে আমি কেন পারবো না? এসব চিন্তা করতে করতেই প্রথম পলিসি সেল করলাম ১৫০০০/- টাকার। এরপর থেকে কনফিডেন্স বেড়ে গেলো। আরও বড় বড় পলিসি সেল করতে থাকলাম। প্রথম বছর ক্লোজিং এ ২০,০০,০০০/- (বিশ লক্ষ টাকা) প্রথম বর্ষ প্রিমিয়াম সেল করলাম। দ্বিতীয় বছর এসে কাজের মজা আরও বেড়ে গেলো। কারণ চলতি বছরের সেলিং কমিশনের সাথে প্রথম বছর যা সেল করেছিলাম তার রেন্যুয়াল বিল আসা শুরু করলো। এখন মনে হচ্ছে নিজের ইচ্ছেটা ধরে রাখলে এ পেশায় উপরে উঠতে বেশি সময় লাগবে না। আজ আমার এই সেক্টরে দুই বছর পূর্তি হলো।

নেগেটিভ দিক বলতে আপনি যদি কোম্পানিতে জয়েন করার আগে কোম্পানি সম্পর্কে ভালো করে খোঁজ নিয়ে তারপর জয়েন করেন তাহলে কোন সমস্যা নেই। আর নিজেকে অবশ্যই সৎ থাকতে হবে। কারণ, পাবলিকের টাকা আপনার হাতে আসবে। আপনি সৎ না হলে এ পেশায় বেশিদিন টিকে থাকতে পারবেন না। নিকট আত্মীয় সহ অনেকেই অনেক সময় নাক সিটকাতে পারে আপনার এ পেশার কারণে। কিন্তু আপনি কনফিডেন্ট থাকলে কোন সমস্যা থাকবে না। কারণ কোন সৎ পেশাই ছোট নয়। আর যারা নাক সিটকাবে তারা কিন্তু আপনাকে বা আপনার ফ্যামিলিকে খাওয়াবে না। আপনার ফ্যামিলি আপনাকেই ম্যানটেইন করতে হবে।

আর পজেটিভ দিক হলো এ পেশায় আপনার স্বাধীনতা আর আয় দুটোই সীমাহীন। আমাদের দেশের জিডিপির মাত্র ০.৫৭% আসে এই সেক্টর থেকে। যেখানে ভারতের প্রায় ৪% থাইল্যান্ড এর প্রায় ৫.৫%! তার মানে হলো আমাদের জন্য মাঠ ফাঁকা। নিজের একটু ইচ্ছা থাকলেই আপনি এ পেশায় সফল হতে পারবেন।





লেখাটা ডেডিকেট করছি আমার বাবাকে। যার হাত ধরে আমার এ পেশায় আগমন ।


০১/০৪/২০২০ ইং
বিকাল ০৫:৪০
গৌরনদী, বরিশাল।

wordpress site
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫১
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×