- তোমরা যে বলো সৃষ্টিকর্তা নামে একজন আছেন কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ তো তাঁর চাক্ষুস পরিচয় দিতে পারল না। যাঁকে দেখা যায় না, যাঁর কোন দৃশ্যমান অস্তিত্ব নেই কেন তাঁকে নিয়ে এত মাতামাতি?
- কে বলেছে সৃষ্টিকর্তার কোন দৃশ্যমান অস্তিত্ব নেই? সূরা হাদিদে তিনিই তো বলেছেন যে তিনি দৃশ্যমান। তবে এমনি এমনি তাঁকে দেখা যাবে না। পৃথিবীতে অনেক কিছুই দৃশ্যমান নয় কিন্তু তাদের অস্তিত্ব অস্বীকার করা যাবে না।
- তুমি অণু-পরমাণুর কথা বলছ তো। ওসব তো বিজ্ঞানের কল্যাণে আমরা দৃশ্যমান পাচ্ছি। তোমাদের সৃষ্টিকর্তাকে দৃশ্যমান করতে তোমরা কী করছ?
আস্তিক-নাস্তিক দু’জনের বাদানুবাদ চলছিল। এমন সময় সে পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন একজন ফকির ধরনের মানুষ। তিনি তাদের বচসা শুনে দাঁড়ালেন।
- আপনারা কী বিষয়ে তর্ক করছেন?
আস্তিক: সে আপনি বুঝবেন না। আপনি আপনার পথ মাপুন।
ফকির: বুঝতে চেষ্টা করি। সমাধানে আসতে না পারলে কেটে পড়ব, কথা দিচ্ছি।
নাস্তিক: আপনি কি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী?
ফকির: আমি মানুষে বিশ্বাসী।
আস্তিক-নাস্তিক: মানে?
ফকির: মানুষ নেই কিছুই নেই।
আস্তিক: বুঝিয়ে বলুন।
নাস্তিক: হ্যাঁ।
ফকির: কিয়ামত পর্যন্ত বকবক করলেও বুঝবেন না। আসুন একটা কাজ করি।
আস্তিক-নাস্তিক: কী কাজ?
ফকির: শুধু পাঁচটি মিনিট নেব, আমি যা বলি তাই করবেন। রাজি?
আস্তিক-নাস্তিক: রাজি।
ফকির: হাঁটু গেড়ে বসুন।
এ বলে তিনজন হাঁটু গেড়ে বসলেন।
ফকির: এবার চোখ বন্ধ করে নিজের মনের দিকে খেয়াল করুন আর আমার সাথে সাথে বলুন, ফকির বাবার ক্বলব হতে আমার ক্বলবে ফয়েজ আসুক।
আস্তিক-নাস্তিক উভয়ে ফকির বাবার কথা মত মন্ত্রটি আওড়ালেন। সাথে সাথে উভয়ে জ্ঞান হারালেন। পাঁচ মিনিটের কিছু আগে তাদের হুঁশ আসল।
আস্তিক: ফকির বাবা, আপনি কোথায়?
নাস্তিক: ফকির বাবা, আপনি কোথায়?
নাস্তিক: হায় হায়! কী ভুলের মধ্যেই না ছিলাম। এখন দেখছি সৃষ্টিকর্তা তো …
আস্তিক: চুপ করো। শরীয়ত আছে। লোকে শুনলে তোমাকে ভুল বুঝবে। সত্যি কথা বলতে আমিও ভুলের মধ্যে ছিলাম। ফকির বাবা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছেন। চল, ওনাকে আগে খুঁজে বের করি।
নাস্তিক: চল। ওনাকে লাগবেই। উনি নেই কিছুই নেই।