বাবা দিবস পালিত হল গত সপ্তাহে। আমরা জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে পালন করলাম। বাবা দিবসে সকল বাবাদের প্রতি রইল আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা।যতদিন যাচ্ছে আমরা বিদেশী কালচারের প্রতি ঝুঁকছি।মা দিবস,বাবা দিবস, ভালবাসা দিবস,পানি দিবশ,মাছ দিবস,গাছ দিবস দিবসের আর অবসান নাই।কিন্ত আমাদের নিজেদের ঐতিহ্যময় দিনগুলোর প্রতি আমরা কতটুকু আত্নমর্যাদাশীল। আমরা জাতিগতভাবে সবসময় অনুকরণপ্রিয়।বাইরের দেশগুলোতে নতুন কোন ফ্যাশান প্রচলন হলেই তা আমাদের দেশেই প্রথম অনুকরণ করা হয়।বিদেশি কালচার তো আমাদের ঘরে ঘরে পালিত হচ্ছে।মুসলিম দেশ হিসেবে ধর্মীয় কিছু রীতিনীতি,রেওয়াজ আমাদের মাঝে প্রচলিত আছে,কিন্ত আমরা সেটা পাশ কাটিয়ে এরিয়ে যাই। অথচ অন্য দেশের বিশেষ করে আমাদের পাশের দেশের ধর্মীয় রীতিবোধ তাদের নাটক,চলচিত্র ইত্যাদি জায়গায় এমনভাবে প্রচার করে যা আমাদের দেশের মানুষের আচার আচরনের মধ্যে প্রকাশ পায় না।এখন আরবি কি মাস জিজ্ঞাসা করলে অনেকেই বলতে পারবে না।আরবি মাসের ফজিলত অনুযায়ী অনেক রীতি নেওয়াজ আমাদের ধর্মীয় জীবনে রয়েছে।আগে ছোটবেলায় দেখতাম আমার দাদা দাদি বা বিভিন্ন মুরব্বীরা রজবমাসে নফল রোজা রাখতেন।মহরম মাস এলে রোজা রাখতেন,মিসকিন খাওয়াতেন।মুসলিম জীবনের রীতিনীতি একজন পালন করলে অন্য একজন তা দেখে জানবে শিখবে,অনুকরন করবে।কিন্ত তা না করে আমরা বাঙ্গালিরা বাইরের দেশে কিছু দেখলে লাফায়া উঠি। যাহোক অনেক কথা বলা হল,যা বলতে চেয়েছিলাম তা বলেই আজ শেষ করছি। আমার কথা হল,এইযে আমরা বাবা মা দিবস পালন করছি,একদিনে তাদের খুব খেয়াল রাখলাম,তাদের পছন্দের খাবার বা জিনিসপত্র উপহার দিলাম কিন্ত সারা বছর আর কোন খবর নেই।আমাদের ঘরে ঘরে বাবা মায়ের প্রতি অবহেলা তো একটি কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আকদিন খুব আদরযত্ন করলাম আর রেখে আসলাম ওল্ডহোমে। যথার্থ কৃতার্থ সন্তান আমরা। অবশ্য এভাবেই চলে আসছে যুগে যুগে।ছোট বেলায় একটা গল্প পরেছিলাম এরকম যে, এক দম্পতি তাদের এক সন্তান নিয়ে ণতুন ঘরে বসবাস করে।তাদের সংসারে আরও একজন বারতি মানুষ আছে সে হচ্ছে বাচ্চাটির দাদি তাকে থাকতে দেয়া হয়েছে তাদের পরিত্যক্ত একটি রান্না ঘরে।এ ঘরের চাল এবং বেড়া কোনটাই ঠিক নেই।তাই খুব কষ্টে বুড়োমায়ের দিন পার হচ্ছে।দিনের শেষে একটি মাটির পাত্রে করে ভাতের মার ছোটবাঁচ্চাটিকে পাঠিয়ে দেয়। তো একদিন সন্ধায় হাত থেকে পরে মাটির পাত্রটি ভেঙ্গে গেল। বাচ্চাটি পা ছড়িয়ে কাঁদতে শুরু করল। বাবা মা দৌড়ে এসে কি হয়েছে দেখতে।বাবা সব দেখে বলল,কেদনা আমি বাজার থেকে আর একটি মাটির পাত্র আনব।কিন্ত বাচ্চাটি কাঁদতে কাঁদতে বলল যে, তার এই পাত্রটিই লাগবে কারন প্রতিদিন সে দাদিকে এটাতে করে ভাতের মার নিয়ে দেয়।বড় হলেও সে এটাতে করেই বাবা মাকে ঐ পরিতাক্ত ঘরে নিয়ে ভাতের মাড় খাওয়াবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৫