বিজয় দিবসে ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) এক শিক্ষকের নির্ধারিত ক্লাস করতে এসে ছাত্রলীগের কর্মীদের হাতে মার খেয়েছেন ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি কৃষি অনুষদের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী বায়েজিদ হক। এ ঘটনায় বায়েজিদকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের কক্ষসহ বেশ কয়েকটি কক্ষ ভাঙচুর করেছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আজ শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ১০টার দিকে ক্যাম্পাসে বিজয় দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠান চলাকালে কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের গ্যালারিতে ওই বিভাগের প্রধান উজ্জ্বল কুমার নাথ ক্লাস নিতে আসেন। অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বায়েজিদ হকও ক্লাস করতে আসেন। বিজয় দিবসে শিবিরের সভাপতি ক্লাস করতে এসেছেন, এ খবর পেয়ে ছাত্রলীগের ২০-২৫ জন নেতা-কর্মী তাঁকে মারধর করার জন্য ওই বিভাগের গ্যালারিতে আসেন। তাঁদের উপস্থিতি টের পেয়ে বায়েজিদ ক্লাস থেকে বেরিয়ে পার্শ্ববর্তী উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রধান কামরুল হাছানের কক্ষে আশ্রয় নেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ওই কক্ষ থেকে বায়েজিদকে বের করে আনার চেষ্টা করলে ওই কক্ষে থাকা শিক্ষক কামরুল হাছান তাঁদের বাধা দেন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ওই কক্ষে ঢুকে বায়েজিদকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকেন। পরে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর উপস্থিত হয়ে বায়েজিদকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। এদিকে শিবিরের সভাপতিকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ওই শিক্ষক কামরুল হাছানের কক্ষসহ বিভাগের আরও কয়েকটি কক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর চালান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা বিভাগীয় প্রধানের কক্ষে থাকা টেলিভিশন, ফ্রিজ, কম্পিউটার ভাঙচুর করাসহ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়িয়ে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন কামরুল হাছান।
ক্লাসে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘স্যার মাঝেমধ্যেই ক্লাসে উপস্থিত থাকেন না। তিনটি গ্রুপের ক্লাস আলাদা আলাদভাবে নেওয়ার কথা থাকলেও তিনি সব গ্রুপকে একসঙ্গে করে সপ্তাহে একটি ক্লাস নেন। এ কারণে স্যার বিজয় দিবসের দিনে আমাদের ক্লাস করতে বাধ্য করেছেন।’
বিজয় দিবসের দিন ক্লাস দিয়েছেন কেন, এ প্রশ্নের জবাবে শিক্ষক উজ্জ্বল কুমার নাথ বলেন, ‘আমি আসলে ক্লাস দিইনি, ব্যবহারিক খাতা সই করার জন্য আসতে বলেছিলাম।’ তবে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে কুত্সা রটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
এদিকে ছাত্রলীগের সভাপতি শামছুদ্দিন আল আজাদ অভিযোগ করে বলেন, শিবির পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছিল। বিজয় দিবসে ক্যাম্পাসের সর্বস্তরের মানুষ যখন আনন্দ করছিল, তখন শিবিরের সভাপতিকে সঙ্গে নিয়ে ক্যাম্পাসের বিএনপিপন্থী শিক্ষক কামরুল হাছান গোপন বৈঠক করছিলেন। এ খবর পেয়ে বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়।
এ বিষয়ে কামরুল হাছান বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক সুলাইমান হোসাইন বলেন, ‘এ ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এম এ সালাম বলেন, ‘পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’
মুল লেখা:
View this link
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৫২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




