somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসঙ্গে,স্বেচ্ছায় রক্ত দানঃ রক্ত দান করতে মনের দিক দিয়ে ভীত হই কেন?রক্ত দান কমিয়ে দিতে পারে আমাদের হার্ট এটাক এবং ক্যান্সার হওয়ার সম্ভবনা

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৪ ভোর ৫:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বেচ্ছায় রক্ত দেওয়া একটি মহৎ কাজ।আপনার এই ডনেট করা রক্ত দিয়ে কত মুমূর্ষ রুগীর জীবন রক্ষা পাচ্ছে।কত প্রসূতি মায়ের জীবন রক্ষা হচ্ছে।সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের ফলে উনি মারা যেতে পারতেন,কিন্তু আপনার দান করা রক্তে উনার জীবন রক্ষা হল সাথে একটি নতুন জীবনের সূচনা :)! একবার চিন্তা করে দেখেন,ভাবতেই মনের ভিতর একটা শান্তির পরম শীতল পরশ প্রবাহিত হয়।প্রতিটা নিউরনে একটা তৃপ্তির পরশ বুলিয়ে যায়।রক্তের প্রতিটা কণিকায় তৃপ্তির ঘুম ঘুম ভাব চলে আসে :)।শুধু কি তাই এই রক্ত দিয়ে কত বাবার,কত সন্তানের,কত ভাইয়ের,কত বোনের জীবন রক্ষা করছেন একবার কি চিন্তা করে দেখেছেন?
এটা লিখছি এই জন্যেই যে,অনেকেই দেখেছি এবং দেখছি রক্ত দিতে চান না বা ভয় পান।পোরপুরি শারীরিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও অনেকেই আছেন রক্ত দিতে ভয় পান।আবার অনেকেই মনে করেন আরে আমার রক্ত দিয়ে দেব তাইলে আমার শরীরের রক্ত কমে যাবে,শরীর দুর্বল হয়ে পরবে।এটা যে কি পরিমান ভুল একটা ভাবনা সেটায় একটু পরে আসছি।
আবার অনেকেই স্রেফ দিতে চান না,কেন দিতে চান না হয়তবা উনি নিজেই জানেন না!

অনেকেই আছেন নিজের পরিবারের সদস্যর রক্ত প্রয়জন হলে ব্লাড ব্যাঙ্ক এ দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেন,বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ শুরু করেন।কিন্তু একবার চিন্তাই করেন না আরে আমার ও রক্ত আছে গ্রুপ মিলে গেলে আমিওত দিতে পারি,নিজেরটা না হলে না হয় অন্য জায়গায় দৌড়ালাম।আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি এই কথাটা।তবে সবাই যে এইরকম এটা বলব না তবে এর সংখ্যা নেহাত কম নয়।কিছুদিন আগে এফবিতে দেখলাম একজন লিখছেন রক্তের প্রয়োজন।
যিনি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তিনি পরবর্তীতে যিনি রক্তের জন্য সাহায্য চাইসিলেন উনার আত্মীয় এর জন্য,উনাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন আপনার রক্ত ট্রাই করে দেখসেন?
উনার উত্তর ছিল আগে দেখেন না কেউ পাওয়া যায় কিনা নাহলে দেখা যাবে!যার রক্ত প্রয়োজন ছিল লোকটি হচ্ছেন উনার পরিবারের সদস্য!আর যিনি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তিনি মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন একজন অসুস্থ লোককে সাহায্য করতে।
লোকটির কাছ থেকে এই উত্তর পাওয়ার পরে স্ট্যাটাসটি মুছে ফেলেন উনার ওয়াল থেকে।এটা স্বাভাবিক,আরে নিজের পরিবারে লোক অসুস্থ একবার অন্তত আপনার নিজের রক্তটা ট্রাই করে দেখেন,তা না করে সরাসরি সাহায্য চাওয়া! এরকম মানসিকতার পরিবর্তন দরকার আমাদের।

তবে আশার কথা হচ্ছে বর্তমান প্রজন্ম মানে তরুণ প্রজন্মদের নিয়ে ওরা এখন অনেক সচেতন।বর্তমান প্রজন্মের তরুণ তরুণীদের মধ্যে এইসব কুসংস্কার আর নেই বললেই চলে আর যদি কিছুটা থেকেও থাকে তা ধীর ধীরে চলে যাচ্ছে :)।আর এখানে বিশাল অবদান রাখছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুল।প্রায়ই দেখি রক্তের প্রয়োজন,এরকম পোস্ট দেখা মাত্র অনেকই এগিয়ে আসছে রক্ত দানে স্বেচ্ছায়।অনেকেই স্বেচ্ছায় রক্ত দিচ্ছে ভিবিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্কে।এটা খুবই আনন্দের আর আশার কথা।আশা করছি যাদের রক্ত দান নিয়ে ভীতি আছে তা খুব তাড়াতাড়িই কেটে যাবে :)

আর এখানে আরকেটা কথা বলা উচিত মনে করছি।আপনি যদি রক্ত দাতা হন তাইলে আপনার রক্তের দরকার হলে প্রয়োজনীয় রক্ত,রক্ত দাতাকে ব্লাড ব্যাঙ্ক রক্ত জোগাড় করে দিতে সর্বচ্ছ চেষ্টা করে।
এবং আপনি রক্ত বিনিময় ও করতে পারেন।যেমনঃ আপনি আপনার রক্তে দান করলেন আর ওরা আপনাকে আপনার যে গ্রুপের রক্ত প্রয়োজন সেই রক্তের জোগাড় করে দেবে।

আর ঐযে রক্ত দিলে আপনার রক্ত কমে যাবে শরীর দুর্বল হয়ে যাবে এটা সম্পূর্ণই নিজের মনের ভিতরের ভয় থেকে আসছে,এর কোন বাস্তব ভিত্তি নেই।রক্তের কণিকা একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর এমনিতেই নষ্ট হয়ে যায় সেখানে নতুন রক্ত কণিকার জন্ম হয় এভাবেই সাইকেল চলতে থাকে।বিশেষ করে শ্বেত রক্ত কণিকার জীবনকাল খুবই কম আর লোহিত রক্ত কণিকার জীবনকাল একটু বেশী। নতুন উৎপন্ন রক্ত কণিকা পুরাতন রক্ত কণিকার জায়গা দখল করে নেয় স্বাভাবিক নিয়মে।
তাহলে ভাল থাকা অবস্থায় এই রক্ত দিয়ে দিলে অন্য আরকজন মানুষের জীবন রক্ষা হল।এখানে নিজের তো কোন ক্ষতি হলই না,আপনি আরেকজনের জীবন রক্ষা করলেন।
স্বাভাবিকভাবে প্রতি ২ মাস পরে পরে রক্ত দেয়া যায়।এর মানে হল প্রতি বছরে আপনি অন্তত ৬ বার রক্ত দিতে পারবেন।আপনি যদি ৬ বার নাও দিতে চান বছরে অন্তত ৩-৪ বার তো দিতে পারবেন।

তাছারা এখন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে রক্ত দান করলে হার্ট অ্যাটাক ও ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে যায় এছাড়া ক্যালরি বার্ন তো আছেই যা আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রচুর সহায়ক এবং শরীরের কলেস্টরেল ও ওজন কমাতে প্রচুর ভূমিকা রাখে।
এই লিংক থেকে পড়ে আসতে পারেন এই বিষয়েঃ
হার্ট অ্যাটাক ও ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি প্রসঙ্গে
হার্ট অ্যাটাক প্রসঙ্গে

এখন একবার ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখুন-আমরা যারা সুস্থ বা শারীরিক ভাবে রক্ত দিতে সক্ষম সবাই যদি রক্ত দিতে শুরু করি তাহলে একটা নীরব বিপ্লব ঘটে যাবে।আমি হলফ করে বলতে পারি দেশে আর রক্তের এত অভাব থাকবে না,রক্ত পেতে আমাদের আর এত কষ্ট পেতে হবে না।
একবার ভাবুনতো,রক্তের অভাবে আর কোন প্রসূতি মা মারা যাবেন না।কারো মা,বাবা,ভাই,বোন,সন্তানের আর রক্তের অভাবে অকাল মৃত্যু ঘটবে না।একবার শুধু চিন্তা করে দেখুন।ভাবতেই তৃপ্তির পরশে পুরা শরীর জুড়িয়ে যায়।আর যখন এর বাস্তব প্রয়োগ হবে কি হবে একবার ভেবে দেখেন :)
আর এটা যে শুরু হয়ে গেছে এটা আমরা সবাই ই দেখতে পাচ্ছি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে
আশা করছি খুব শীঘ্রই রক্ত দানে আমাদের ভীতিটা দুর হবে।আমরা স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে আর সামান্যতম দ্বিধা বোধ করব না।আসেন আজ থেকেই রক্ত দিব বলে নিজে নিজের সাথে পণ করি,রক্ত দান শুরু করি।
রক্ত দেয়ার পরে দেখবেন নিজের মনের ভিতর একটা শান্তির ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে।নিজেকে অনেক সুখী একজন মানুষ মনে হচ্ছে।
বিশ্বাস করুন একটুও বাড়িয়ে বলছি না,নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি
তবে আর দেরি কেন?
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৪ ভোর ৫:৫৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×