রাত ২ টা!
এত রাতে জেগে থাকে নিশাচর পাখি, প্রার্থনাকারী, আর চোর ডাকাত বা সুযোগ সন্ধানী অপরাধীরা।
এই কথাটা আজ থেকে ১৫-২০ বছর আগে বললে কেউই দ্বিমত করত না।
অবশ্য এই লাইনে আর দু-চারটা ক্যারেক্টার যোগ করে নিলেই হবে, যেমন সদ্য প্রেমে পরা তরুন তরুনী, ওহ সরি, কিশোর কিশোরী হবে, ফ্রেন্ডযোনড, যার কেউ নাই তার ভিপিএন আর অমিত সম্ভাবনাময় মেধাবী কেউ, যে হুদাই মোবাইল টেপে।
আজকাল অবশ্য দিনে দুপুরে যে পরিমান অপরাধ হয়, তাতে রাতও লজ্জা পায়, রাত লজ্জায় আরও গভীর হয়; অপরাধ জাস্টিফাই ও করার সে কি বাহারি যুক্তি, আর কারো জন্য অপরাধ না করতে পারাটই বরং অপরাধ।
এর যে বাহারি ফলন, যেন মৌসুমটা ও বরাবর সারা বছর ভাদ্র মাস!
আহম্মদ চোর না, বা খারাপ মানুষ ও না, তবু সে রাত জেগে আছে, তাহাজ্জুদ নামায আদায় করবে বলে।
নামাযি হিসেবে তার খুব সুনাম, বাল্যকালে নিয়মিত নামায পড়ে ১টা বাইসাইকেল ও পেয়েছিল মসজিদ কমিটির নিকট থেকে।
তাই এত রাতে যখন সে মসজিদে নামায পড়তে আসল, কেউ ই বাকা চোখে তাকালো না।
অবশ্য তাকে বাইরে দেখে খানিক সন্দেহ ইমাম আর মোয়াজ্জিন সাহেবের ছিল। ইমাম আর মুয়াজ্জিন সাহেব আহম্মেদকে দেখেও আর বের হলো না, তারা ভাবছে, আহম্মদের নামায পড়া হলে গোসলে যাবে, ফজরের সময় ও তো হয়ে আসল!
আহম্মদ মসজিদ এ ঢুকল, এসিটা ছাড়ল, মহান আল্লাহপাকের অশেষ রহমত এসির সুশীতল বাতাসে দিল ও শরীর দুটোই শান্ত হলো, যেটুকুন ছিল দ্বিধা দ্বন্দ্ব সেও কেটে গেল। অতঃপর গভীর নিমগ্নতায় দুই রাকাত নামাজ আদায় করল। নামায শেষে মোনাজাত ধরল, মোনাজাতে সে মুসলিম উম্মাহর কল্যানে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করল, শাপান্ত করল ইহুদী নাসার আর মুশরিকদের-নাস্তিকদের। অতঃপর সে তার নিজের কিছু কথা বলল।
সব থেকে জরুরী কাজটা বাকী আছে, আগে থেকেই তার জানা ছিল, মসজিদের দানবাক্স কৈ থাকে, উঠে সেদিকে গেল, দানবাক্সটা হাতে নিল, পকেট থেকে রুমাল বের করে পরম মমতায় রুমাল দিয়ে মুছল। রুমালে করেই সে বাক্স থেকে কিছু টাকা নিয়া নিল।
ভাবছেন, সে চুরি করেছে! ভাবছেন, এইটা ভন্ডামী!
তার বক্তব্যটা তো আগে শুনবেন।
"সে তো ঘরের মালিকের কাছে বইলাই নিচ্ছে।"
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৭