চিত্রঃ এ আই
অফিসার: প্রচলিত ধর্মমত থেকে আমার বিশ্বাসটা একটু ভিন্ন।
ডিজিএম: ভিন্ন বলতে...
অফিসার: মানে সবার ধর্মবিশ্বাস আর আমার বিশ্বাস একটু আলাদা।
ডিজিএম: বিশ্বাস আলাদা হলেও আপনার "নামাজ" পড়তে কি কোনও বারণ আছে।
অফিসার: স্যার, সত্যি বলতে কি, নামাজ পড়াটা আমার নিকট ঠিক ফ্রুটফুল মনে হয় না।
ডিজিএম: আপনার কাছে কি এটা অপ্রয়োজনীয় মনে হয়?
অফিসার: আমার নিজের জন্য এটা কখনো কাজে আসছে বলে আমার মনে পরে না।
ডিজিএম: আচ্ছা নামাজ কি পড়তে হবে?
অফিসার: স্যার বলছিলাম, আমার বিশ্বাস্টা একটু ভিন্ন।
ডিজিএম: আচ্ছা, আপনি কি ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করেন?
অফিসারঃ করি, তবে আমার বিশ্বাস টা হয়তোবা আপনার থেকে একটু ভিন্ন।
ডিজিএমঃ আপনি কোরানে বিশ্বাস করেন?
অফিসারঃ এক্ষেত্রে অনেক বিষয়েই আপনাদের
অর্থাৎ প্রচলিত ব্যাখ্যা হতে আমার ব্যখ্যাটা ভিন্ন।
আনিচ সাহেবঃ স্যার, আমার আগের শাখায় ও একজন অফিসার ছিল,
সে ও এরকম অনেক কথা বলে, কথাগুলো বেশ লজিক্যাল,
অনেক ক্ষেত্রেই আমরা যার জবাব দিতে পারি না।
ডিজিএমঃ সে জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার জন্য; তা সে এখন কোথায় আছে?
অফিসারঃ ট্রান্সফার হয়ে সে এখন বরগুনা জেলার কোন শাখায় যেনো আছে।
ডিজিএমঃ মেহেদী সাহেব, আপনি বলেছিলেন, আপনি প্রচুর পড়াশোনা করেন,
হাদীস কোরান পড়েন?
অফিসারঃ জ্বী স্যার, সে নিয়মিতই পড়ি, তবে অর্থসহ, বুঝে পড়ার চেষ্টা করি।
ডিজিএমঃ আপনি কি আরবি পড়তে পারেন?
অফিসারঃ রিডিং পড়তে পারি।
ডিজিএমঃ তাতে তো আর মূল এসেন্স টা ধরতে পারেন না?
অফিসারঃ আমার কাছে কোরানের ৬ টা ইংরেজি অনুবাদ ও
১ টা বাংলা অনুবাদ আছে, আমার সন্দেহ বা সমস্যা ফিল হলে এসব গুলো দেখি;
এছাড়া ২ খান তাফসীর ও আছে।
ডিজিএমঃ দেখুন, এত পড়াশুনা করে ও যদি আপনি ভিন্নমত পোষণ করেন
বা আপনার বিশ্বাস বা ব্যাখ্যা ভিন্ন হয়, সেক্ষেত্রে আসলে কিছুই বলার নাই,
এই পড়াশুনার কোন ও মূল্যই রইল না।
যাক, এ বিষয়ে কথা বলার সময় নাই, এ বিষয়ে কথা বলতে হলে
আপনার সাথে অনেক সময় দিতে হবে, সে অন্য কোন ও এক সময়ে।
মেহেদী সাহেবের পড়াশোনাকে যে যুক্তিতে বাতিল করে দেয়া হল,
সেই একই যুক্তি তার বেলায় ও খাটানো যায়;
"এত পড়াশোনা করে যদি কেউ এত স্পষ্ট ও দৃশ্যমান ত্রুটি ও
বিচ্যুতি না ধরতে পারে, সে পড়াশোনার ও কোন ও মূল্য রইল না।"
বেশ খানিকক্ষণ বিরতি, চুপচাপ খাবার খাওয়া হচ্ছে।
আনিস সাহেব: স্যার, এই যে দেখেন, নাস্তিকরা নেকাবের বিরুদ্ধে কথা বলে,
এখন সবাইকেই মাস্ক পরতে হচ্ছে।
ডিজিএম: হ্যা, সেটা ই তো, আল্লাহ এক ভাবে না এক ভাবে শিক্ষা দিচ্ছে।
অফিসার: স্যার, এইখানটায় একটু সমস্যা আছে,
নেকাব আর মাস্ক এক না; মাস্কে নেকাবের কাজ সারা সম্ভব,
বাট নেকাব এ মাস্কের কাজ হবে না।
তাছাড়া, একটা নারী পুরুষ সবার জন্য অপরিহার্য,
আরেকটা শুধুমাত্র নারীদের জন্য অবশ্য, কোনওভাবেই এইটা মিলল না।
ডিজিএম: মেহেদী সাহেব, এই যে ধরেন আমরা খাবার খাচ্ছি,
সামনে সুস্বাদু খাবার আমাদের সামনে রাখা আছে,
এটা দেখে কি আমাদের এর প্রতি লোভ জাগ্রত হবে না?
অবশ্যই হবে।
তেমনি নারীরা যদি বেপর্দা হয়ে চলাফেরা করে,
সেক্ষেত্রে তাদের দেখে পুরুষদের ও একইভাবে লোভ ও।কামনা জাগ্রত হবে।
আল্লাহপাক আমাদের এভাবেই তৈরী করেছেন, এই লোভ, কাম ও কামনা সহ।
অফিসার: জ্বী স্যার, আপনার সাথে এই বিষয়ে একমত,
তবে স্যার, এই "বেপর্দা বা অসামাজিক" এর সীমাটা ব্যক্তি ও সমাজভেদে ভিন্ন।
আবার দেখুন স্যার, আল্লাহপাক ইনবিল্ড আমাদের মাঝে লোভ,
কাম ও কামনা দিয়ে দিয়েছেন, একই সাথে সেই আল্লাহপাক আমাদেরকে
এই রিপু নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা ও দিয়েছেন,
এছাড়া এটা তো আল্লাহর পরীক্ষা ও হতে পারে।
ঐ বেপর্দা নারী, অনেকের দৃষ্টিতে,
তাকে হয়তো আল্লাহই পাঠিয়েছেন,
তার মুমিন বান্দার ঈমান কতটা শক্তিশালী তা পরীক্ষা করার জন্য।
ডিজিএমঃ যাক এ বিষয়ে আমরা এ বেলায় আর কথা না বাড়াই,
তবে, আপনার সাথে বসব এই বিষয় নিয়া।
যেমন, হয়তোবা, আপনার সাথে আমার দেখা হয়েছে,
আপনার ঈমান পরীক্ষা করার জন্য, আপনার ধৈর্য্য পরীক্ষা করার জন্য,
হয়তো দেখতে চেয়েছেন, ভিন্নমত, যে সংখ্যালঘু বাট আল্লাহর সৃষ্টি,
আল্লাহর সেই সৃষ্টির সাথে আপনার আচরণ কেমন বা আপনি তাকে কিভাবে ট্রিট করেন।
মনে মনে স্বগতোক্তি করলেন ও প্রমাদ গুনলেন মেহেদী সাহেব।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১:০৬