১. বিশ্বে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কৌশল পরিবর্তন হচ্ছে দিন দিন। নানা ধরনের সংঘাত বাড়ছে। বাংলাদেশকে আমরা এই সংঘাত থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছি। বিষয়টি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।’ - এসএসএফ এর ২৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
২. গত দুই বছরে ইরাক, সিরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জঙ্গি তৎপরতার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনদের নানা কার্যক্রমে এ দেশেও জঙ্গি তৎপরতায় অনেকে উৎসাহিত হচ্ছে। . . . জঙ্গিবাদ এ দেশ থেকে একেবারে নির্মল করা সম্ভব নয়। তবে আমাদের (আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর) অভিযানের কারণে তা নিয়ন্ত্রণে আছে। - ডিএমপির যুগ্মকমিশনার মনিরুল ইসলাম।
৩. তার দেশে (বাংলাদেশে) জঙ্গিবাদ দমনে ব্রিটিশ সরকারকে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর (বিবিসি বাংলা, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫)
৪. বাংলাদেশে ইসলামী মৌলবাদ দমনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। 'ওয়াশিংটন টাইমস' নামের একটি পত্রিকায় একটি প্রবন্ধ লিখে তিনি এ আহ্বান জানান।
অতঃপর ১৮০ ডিগ্রী কোণে গতিপথ পরিবর্তন করে-
নিরাপত্তা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার আশঙ্কা ভিত্তিহীন, বাংলাদেশের সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ নেই- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব নেই- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
এমতাবস্থায়, কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা সেটাই চিন্তার বিষয়। কিন্তু চিন্তা করার সুযোগটাও বোধহয় পাওয়া যাবে না এবার। বাংলাদেশে জঙ্গি আছে কি নাই সেটা আমাদের জাতিগত বিষয়। আমাদেরকেই তার মোকাবেলা করতে হবে। আমেরিকা-ব্রিটেন কবে কোথায় কার জঙ্গিবাদ সমস্যার সমাধান করেছে? তাদের হিস্ট্রি কি আমাদের নেতা-নেত্রীরা জানেন না? সব জেনে বুঝেও কেন তারা না জানার ভান করেন? এতদিন জঙ্গিবাদের আশঙ্কার কথা প্রচার করে, নিজেরা দমন করতে পারছেন না, পশ্চিমের সহায়তা আবশ্যক- এমন ভাব প্রদর্শন করে, নিজেদের ব্যর্থতার বেলুনে হাওয়া ভরে এখন জঙ্গি নেই, আইএস নেই- এসব বলার কোনো মানে হয়? কোথাকার কোন অস্ট্রেলিয়া দল খেলতে আসলো কি না আসলো তাতে আমাদের কী?
পরিষ্কার বোঝা যায়, এখানে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র আছে। সেই ষড়যন্ত্র কারা করছে, কেন করছে, কার স্বার্থে করছে, কার বিপক্ষে করছে, একটু চিন্তা করুন নিজেরাই বুঝতে পারবেন। মাথার উপরে ছাদ থাকলেই হয় না, পায়ের নিচে মাটিও থাকতে হয়। বিদেশি প্রভুরা ছাদের মতো, এ কারণে কে কার ছায়ায় আশ্রয় নিবে তার প্রতিযোগিতা চলছে, কিন্তু পায়ের নিচে যে কারও মাটি নেই সে খেয়াল কারও আছে বলে মনে হচ্ছে না। এখনও আপনারা জনগণের শক্তিকে বুঝতে শিখলেন না। জনগণকে ভরসা করতে শিখলেন না। এখনও আপনারা ভাবেন- আমেরিকা, ব্রিটেনকে সন্তুষ্ট না রাখতে পারলে সমস্যা আছে। কিন্তু এই দেশের ১৬ কোটি মানুষের রক্ত শুষে খেলেও যে ওই আমেরিকা-ব্রিটেনের পেট ভরবে না, সন্তুষ্ট হবে না, তা কি চিন্তা করেছেন কখনও?
যে বৃক্ষের শিকড় মাটির ভেতরে যত গভীরে প্রোথিত থাকে, সে তত বড় ঝড়-ঝঞ্চাকে টেক্কা দিতে পারে। সামান্য একটু ঝড়েই যেভাবে আপনারা কাত হয়ে পড়ছেন তাতে আপনাদের শেকড়ের গভীরতা নিয়ে সন্দেহ হতেই পারে।
সরকার যদি বৃক্ষ হয়ে থাকে, জনগণ তার শেকড়। দেশ ও জাতির স্বার্থে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করুন। নিজেরা বাচুন, জাতিকে বাচান। অন্যথা, জাতির সাথে সাথে নিজেরাও ধ্বংস হবেন।