প্রতিষ্ঠিত সফটওয়্যার শিল্পোদ্যক্তা জনাব মোস্তফা জব্বারের কিছু মন্তব্যের সূত্র ধরে সম্প্রতি বাংলা কম্পিউটিং নিয়ে যে তর্ক-বিতর্কের ঝড় উঠল, সেটা ভাষার মুক্ত প্রকাশের পক্ষে জনসমর্থনের প্রমাণ দেয়। পাশাপাশি এই বিতর্ক প্রযুক্তিবিদ হিসেবে আমাদের মনে করিয়ে দেয় কিছু কার্যকর এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা।
বাংলা কম্পিউটিং প্রযুক্তির পরিধি অনেক ব্যপক হলেও এর প্রথম ধাপ হল ভাষার লেখ্য রূপকে কম্পিউটারে প্রবেশ করানো। আর কম্পিউটারে লেখালেখির কাজে কী-বোর্ড যেহেতু এখন অব্দি সবচে স্বীকৃত মাধ্যম, প্রবেশ করানোর কাজটা কী-বোর্ড দিয়েই হওয়া সঙ্গত
সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভাষা-প্রকাশের সরাসরি মাধ্যম হিসাবে কী-বোর্ডের অক্ষর-বিন্যাস বা লে-আউট কে হাতে লেখার বর্ণমালার সাথে তুলনা করা যায়। আজ যেমন প্রথম শ্রেনীর শিশুকে আমরা হাতে বর্ণমালা লিখতে শেখাই, অদূর ভবিষ্যতে শিশুদেরকে বাংলায় কম্পিউটার ব্যবহার শেখাতে গেলে কোন একটি অক্ষর-বিন্যাস ব্যবহারে তাদেরকে অভ্যস্ত করাতে হবে। প্রশ্ন হল আমরা কোন অক্ষর-বিন্যাস শিশুদের শেখাব?
যদি একটু ইতিহাসের দিকে তাকাই, বাংলা ভাষাকে কম্পিউটারে ব্যবহারের প্রয়োজন প্রথম অনুভূত হয় প্রকাশনা শিল্পে, আশির দশকের মাঝামাঝি। তা মেটাতে তখনকার সফটওয়্যার নির্মাতারা বেশ কিছু সমাধান তৈরি করেন। সেগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল, প্রচলিত বাংলা টাইপরাইটারে ব্যবহৃত অক্ষর-বিন্যাসে যাঁরা অভ্যস্ত তাদের জন্যে শেখা সহজ কোন অক্ষরবিন্যাস কম্পিউটার কীবোর্ডের জন্য তৈরি করে তার মাধ্যমে লেখাকে কম্পিউটারে প্রবেশ করানোর ব্যবস্থা করা, এবং ছাপার যোগ্য কোন ফন্টের মাধ্যমে সেটাকে মনিটরে দেখানো বা প্রিন্টারে ছাপানোর ব্যবস্থা করা।
উল্লেখ্য কম্পিউটার সংখ্যা ছাড়া কিছু বোঝেনা, সেজন্য বর্ণমালার প্রতিটা বর্ণকে একেকটা সংখ্যাভিত্তিক কোড বা সংকেত দিয়ে প্রকাশ করার ব্যবস্থা করা হয়। যেহেতু ইংরেজীভাষীরা কম্পিউটার প্রথম তৈরী করে, শুরুর দিকে তাদের তৈরি ২৫৬ কোডের সংকেতমালা ascii তে ইংরেজী বা ল্যাটিন গোত্রের ভাষাগুলো ছাড়া অন্য ভাষা প্রকাশের জন্য কোন সংকেতের ব্যবস্থা তারা মাথায় রাখেনি। বিশ্বের সব ভাষার বর্ণমালাকে প্রকাশের জন্য সংকেতমালা ইউনিকোড এসেছে অনেক পরে। তাই প্রথম দিককার বাংলা-লেখনী সফটওয়্যারগুলোকে ২৫৬ সংকেতের সংকেতমালার মধ্যেই বর্ণমালাকে প্রকাশের চিন্তা করতে হয়। এছাড়াও পাশাপাশি আলাদা দুটি অক্ষরকে যুক্তাক্ষর হিসাবে প্রকাশের কোন ব্যবস্থা তখন কম্পিউটারে না থাকায় বাংলার প্রচলিত যুক্তাক্ষর গুলোকে আলাদা বর্ণ হিসেবে ধরে নিয়ে সংকেত মালা তৈরি করতে হয়।
তথাপি, একটি সর্বজনগ্রাহ্য প্রমিত কীবোর্ড-অক্ষরবিন্যাস এবং ২৫৬ সংকেতের একট প্রমিত সংকেতমালা তৈরীর ব্যাপারে কোন কারিগরী বাধা তখন ছিলনা। আর ভাব প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে বর্ণমালার সাথে তুলনীয় হওয়ায় এরকম কোন অক্ষর বিন্যাসের পেটেন্ট অনুমোদনও সচেতন প্রযুক্তিবিদরা নীতিগতভাবে সমর্থন করেননি। কিন্তু বাস্তবে কিছু প্রতিষ্ঠান নিজেদের মত ভিন্ন ভিন্ন অক্ষরবিন্যাস ব্যবহার করেন, এবং সরকারী মহলে জানাশোনার সুবাদে, একদিকে তাদের নিজস্ব অক্ষরবিন্যাস ও সংকেত মালাকে পেটেন্ট করিয়ে নেন, এবং অন্যদিকে নিজেদের অক্ষরবিন্যাস ও সংকেতমালাকে প্রমিত সংকেত হিসেবে চালু করার জন্য বিভিন্ন চতুর বিপনন পদ্ধতি এবং যোগসাজসের আশ্রয় নেন। কিছু ব্যক্তির এধরণের স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক আচরণের ফলেই প্রযুক্তিগত কোন বাধা না থাকা সত্ত্বেও সর্বজন গ্রাহ্য, মুক্তভাবে বিতরণযোগ্য এবং বিজ্ঞানসম্মত কোন অক্ষরবিন্যাস আমরা পাইনি। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এক-পর্যায়ে “ন্যাশনাল কীবোর্ড লে-আউট” নামে একটি অক্ষরবিন্যাসকে প্রমিত হিসেবে ঘোষণা করলেও এর কার্যকারিতা বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে প্রমাণিত হয়েছে বলে জানা নেই। তদুপরি, অন্যান্য অক্ষরবিন্যাস প্রনেতাদের কৌশলী বিপননের সাথে পাল্লা দিয়ে এটি জনপ্রিয় হতেও ব্যর্থ হয়।
আরো কয়েক বছর পরে, এই শতকের গোড়াতে বা তার কিছু আগে, বাংলাদেশে ইন্টারনেট প্রযুক্তি জনগণের নাগালে আসার সাথে সাথে সেখানে নিজের ভাষায় যোগাযোগের প্রয়োজনে ব্যবহারকারীরা প্রচলিত ইংরেজী কী-বোর্ডের মাধ্যমে রোমান হরফে বাংলা লিখতে শুরু করেন। কয়েক বছরের ব্যবধানে মোটামুটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তরুণ প্রজন্ম প্রায় সর্বাংশে এরকম রোমান হরফে বাংলা লিখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন।
এর মাঝেই, বাংলাদেশীদের উদ্যোগে না হলেও বাংলা-হরফ ব্যবহারকারী অন্যভাষাভাষীদের উদ্যোগে, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সংকেতমালা ইউনিকোডের একটি অংশে বাংলা বর্ণমালার জন্য প্রমিত সংকেতমালা তৈরী হয়। কিন্তু প্রথম দিককার বাংলা সফটওয়্যারের স্বত্বাধিকারীরা তাদের ইতোমধ্যে দখলকৃত বাজার ধরে রাখার স্বার্থে ইউনিকোড ভিত্তিক সফটওয়্যারের আগমনকে ঠেকিয়ে রাখেন, বা নিদেন পক্ষে ইউনিকোড-সম্মত বাংলা লেখনী সফটওয়্যার তৈরিতে গড়িমসি করেন।
পরবর্তীতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রেখে ইউনিকোড-সম্মত বেশ কিছু বাংলা লেখনী সফটওয়্যার বাজারে আসে। ইউনিকোড সম্মত হবার পাশাপাশি, রোমান-হরফে বাংলা ব্যবহারকারীদের কথা মাথায় রেখে এসব লেখনীতে ফোনেটিক বা উচ্চারণ প্রতিবর্ণীকরণ পদ্ধতিতে বাংলা বর্ণ লেখার ব্যবস্থা রাখা হয়। মনে রাখা দরকার যে, এটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের লেখা রোমান হরফে বাংলা থেকে বাংলা হরফে বাংলায় উত্তরণের একটা অন্তর্বর্তীকালীন পদ্ধতি, এবং ইংরেজী বর্ণমালা জানলেই কেবল এটি ব্যবহার করা সম্ভব। তথাপি, পেশাদার মুদ্রাক্ষরিকদের বাইরে এই পদ্ধতিই এখন সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে সবচে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কিছু প্রভাবশালী শিল্পোদ্যক্তার ভাষা-প্রযুক্তি কুক্ষিগত করার কলাকৌশলের বিরুদ্ধে প্রযুক্তিবিদ ও প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রবল জনমত আগে থেকেই বিদ্যমান ছিল। তবে সাম্প্রতিককালে জনাব জব্বার মূলত অভ্র নামের জনপ্রিয় একটি ফোনেটিক বাংলা লেখনীর বিরুদ্ধে কটু মন্তব্য করায় অভ্র-ব্যবহারকারীদের অভ্রের প্রতি ভালবাসার প্রকাশ এবং বিজয়ের সাপেক্ষে অভ্রকে শ্রেয় প্রমাণের ব্যাপারটিই মনোযোগের কেন্দ্রে স্থান পায়। স্পষ্টতই এতে এবিষয়ে জনমতের মূল যে চরিত্র, মানে ভাষা-প্রকাশের ক্ষেত্রে কোন বাধা-বিপত্তির (যেমন ব্যবসা-স্বার্থসংশ্লিষ্ট আইনি বাধা পেটেন্ট এর) বিরোধিতা, সেটা আড়াল হয়ে যায়।
আমরা যদি পরবর্তী প্রজন্মের শিশুদের বাংলা ভাষায় কম্পিউটার শিক্ষার কথা চিন্তা করি, এবং যদি ৫০ এর দশকে নীতিগতভাবে রোমান বা উর্দু হরফে বাংলা লেখার বিরোধিতা করে থাকি, তবে আমাদেরকে সর্বসম্মতভাবে মুক্তভাবে ব্যবহারযোগ্য একটি বিজ্ঞানসম্মত বাংলা কীবোর্ড অক্ষর বিন্যাসের কথা ভাবতে হবে।
এই অক্ষরবিন্যাসের নিম্নোক্ত বৈশিষ্টগুলো থাকা বাঞ্ছনীয় -
১) এটা সর্ব-সম্মত এবং বাস্তব-সম্মত কীবোর্ড অক্ষরবিন্যাস, যেটা সরকারী, একাডেমিক কিম্বা গণ উদ্যোগে করা হবে এবং এটি কখনো পেটেন্ট আইনের আওতায় আসবে না বা কোন পেটেন্ট ভঙ্গ করেছে বলে গণ্য করা যাবে না।
২) শিশুশিক্ষার কাজে এই অক্ষরবিন্যাসের ব্যবহার অনুমোদন এবং সরকারী/বেসরকারী প্রকাশনার কাজে এর ব্যবহার বাড়ানোর পক্ষে নীতিমালা তৈরী করতে হবে।
৩) এই অক্ষরবিন্যাস বিজ্ঞান সম্মত হতে হবে, অর্থাৎ বাংলা লেখায় সচরাচর যেসব বর্ণপরম্পরার প্রাচুর্য দেখা যায়, তাদের অনুলিখন সহজ হয় এমন হতে হবে। প্রচলিত বাংলা টেক্সট এর ভিত্তিতে এর যথার্থতা প্রমাণ করতে হবে।
৪) বর্তমানে প্রচলিত বিভিন্ন অক্ষরবিন্যাস ব্যবহারকারীদের কাছে এটা সহজে শেখার যোগ্য হতে হবে।
৫) কী-বোর্ড হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে সহজলভ্য ১০১/১০৪/১০৫ কী এর প্রচলিত কীবোর্ড কে প্রমিত হিসেবে ধরে নিয়ে তাতে অক্ষর-বিন্যাস সাজাতে হবে, যাতে বাড়তি কোন হার্ডওয়্যার কিনতে না হয়, এবং একই কীবোর্ডে বাংলা, ইংরেজী এবং আরো অন্যান্য ভাষা একই সাথে ব্যবহার করা যায়।
৬) এর পাশাপাশি, প্রচলিত ইংরেজী qwerty অক্ষর বিন্যাসের মাধ্যমে রোমান হরফে লেখা বাংলাকে কম্পিউটারে ব্যবহার্য ইউনিকোড বাংলায় রূপান্তরের অন্তর্বর্তী-পদ্ধতি হিসেবে একটি সর্বসম্মত ফোনেটিক অক্ষর-বিন্যাস চালু রাখা যেতে পারে, যেটিও একই ভাবে সর্বজন গ্রাহ্য, মুক্তভাবে ব্যবহার্য এবং পেটেন্ট-আযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
তথ্য-প্রকৌশলী, শিক্ষক/শিক্ষাবিদ, বাংলাদেশ সরকারে তথ্য-প্রযুক্তি নীতির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ, এবং প্রযুক্তিকে জনপ্রিয় করার কাজে নিয়োজিত যারা আছেন -- আসুন, উপরোক্ত প্রস্তাবনার ভিত্তিতে এখনই একটি বাস্তবায়ন যোগ্য প্রকল্প হাতে নেয়া যায় কিনা, এব্যপারে আলোচনা করি।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিভিন্ন অংশ বা ধাপগুলো এরকম হতে পারে –
১) একটি বিজ্ঞানসম্মত এবং বাস্তব-সম্মত কীবোর্ড অক্ষরবিন্যাস ডিজাইন করা। এটা গবেষণাধর্মী কাজ। একাজে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা দেশের অন্য যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকবৃন্দ অবদান রাখতে পারেন। বানিজ্যিক বা সরকারি প্রতষ্ঠান ও চাইলে এ-কাজে সহায়তা করতে পারেন, তবে গবেষণার রিপোর্ট মুক্তভাবে প্রকাশ করতে হবে, এবং এতে এ বিষয়ে পূর্বে যে গবেষণাগুলো হয়েছে সেগুলোর তথ্যও সংযুক্ত করতে হবে। এই অংশের ধাপগুলো হবে নিম্নরূপ -
১ক) বাংলা লিখিত ভাষায় বিভিন্ন বর্ণ-পরম্পরার প্রাচুর্যের একটা তুলনামূলক বিশ্লেষণ করতে হবে।
১খ) বর্ণ-পরম্পরার ভিত্তিতে কী-বোর্ডের অক্ষরবিন্যাসগুলোর কোনটি কতটা সহজে ব্যবহার্য সেটা বিবেচনার আন্তর্জাতিক মানদণ্ডগুলো তুলনা করে এক বা একাধিক মানদণ্ড নির্ধারণ করতে হবে, এবং ঐ মানদণ্ডের ভিত্তিতে বর্তমানে প্রচলিত এবং বহুল-ব্যবহৃত অক্ষরবিন্যাস গুলোর তুলনা করতে হবে।
১গ) ক ও খ তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রচলিত কী-বোর্ড গুলোর যথেষ্ট কাছাকাছি এবং বর্ণ-পরম্পরার মানদণ্ডের ভিত্তিতে যথেষ্ট মানসম্পন্ন একটি অক্ষরবিন্যাস তৈরি করতে হবে
১ঘ) প্রচলিত বিন্যাস গুলোর ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন বিন্যাসে স্থানান্তর কষ্টসাধ্য হবে না সেটা ব্যবহারকারীর সংখ্যা এবং ব্যবহারকালের তথ্য বিবেচনা করে বিজ্ঞানসম্মতভাবে প্রমাণ করতে হবে।
২) প্রাপ্ত অক্ষরবিন্যাসটিকে সর্বজনগ্রাহ্য করতে বর্তমান যেসব বাংলা লেখনী সফটওয়্যার বাজারে আছে, তাদের নির্মাতা/উদ্যোক্তাদের নিয়ে আলোচনা করতে হবে। বাংলাদেশ কম্পিটার কাউন্সিল বা সরকারের প্রযুক্তি-মন্ত্রণালয়ের অন্য কোন সংস্থা একাজটির সমন্বয় করতে পারে। আলোচনায় অবশ্যই (১) এ বর্ণিত গবেষকরা উপস্থিত থাকবেন, এবং তাঁদের ডিজাইনের সাথে অন্যান্য নির্মাতাদের মতামত সমন্বয় করবেন।
৩) প্রাপ্ত অক্ষরবিন্যাসটিকে জনপ্রিয় করতে এবং শিশুশিক্ষায় সমন্বিত করতে বাংলাদেশ সরকারের সংশিষ্ট মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবেন। এটিকে পেটেন্ট আইনের আওতা বহির্ভুত ঘোষণা করতে সংশ্লিষ্ট সরকারী সংস্থা সহায়তা করবেন।
৪) প্রাপ্ত অক্ষরবিন্যাসের ভিত্তিতে কম্পিউটারে ইউনিকোডসম্মত ভাবে বাংলা লেখা যায় এমন একটি লেখনী সফটওয়্যার নির্মাণ করতে হবে। এটির নির্মাণ-শৈলী এবং কোড উন্মুক্ত (ওপেন-সোর্স) ভাবে প্রকাশ করতে হবে এবং এটি মুক্ত-ভাবে বিতরণ এবং পরিমার্জনযোগ্য হিসাবে মুক্ত-সফটওয়্যারের লাইসেন্সের (GNU-GPL)অধীনে বিনামূল্যে বিতরণ করতে হবে। এর নির্মাতা বা অন্য কেউ একে এই মুক্ত-উন্মুক্ত পদ্ধতি ব্যতিরেকে অন্য কোনভাবে বিতরণ করতে পারবে না, এই শর্ত লাইসেন্সে থাকতে হবে। তবে এই শর্ত ভঙ্গ না করে, অর্থাৎ সফটওয়্যারের এই অংশকে মুক্ত ও উমুক্ত রেখে, এই সফটওয়্যার বা এর ভিত্তিতে নির্মিত পরিমার্জিত বা পরিবর্ধিত কোন সফটওয়্যার কেউ বানিজ্যিকভাবেও বিতরণ করতে পারেন।
এই ধাপটি স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে গণ-প্রচেষ্টায় করতে হবে। সম্ভব হলে কম্পিউটারকৌশলের ছাত্রদের শিক্ষা-প্রজেক্ট হিসেবে একে নির্মাণ করা যেতে পারে।
আসুন আর দেরি না করে উপরের প্রস্তাবিত প্রকল্প হাতে নিই এবং বাংলা কম্পিউটিং প্রযুক্তির এই প্রাথমিক ও মৌলিক ধাপকে নিয়ে আর কোন স্বার্থান্বেষী চক্রান্ত হবার সুযোগ চিরতরে বন্ধ করি। বাংলা কম্পিউটিং প্রযুক্তি নিয়ে আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। এই প্রাথমিক ধাপটি নিয়ে টালবাহানা অনেক হয়েছে, আর নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০১০ রাত ১:৪৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




