বাবা বলত , বাবু একদিন সত্যিই
অনেক বড় হবে, হবে মানুষের মত মানুষ ।
না হয় হেরে যাবে
পিতৃত্বের অগাধ বিশ্বাস পরম স্নেহ।আর
মায়ের আচলভেজা অশ্রুশিক্ত নির্মল ভালবাসা,
সত্যিই আমাকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করে মানুষ হবার
দৃড়সংকল্পে। কচিপ্রাণ তখন মাতৃস্নেহে সিক্ত,
বুঝিনি তখনও ধুসর পৃথিবী আসলে কতটা কালো।
জানিনা তখনও মানুষ কি ? কি তার সংজ্ঞায়ন ?
তবু দৃড়প্রত্যয়ে হৃদয়ে ধারণ করি
মানুষ হবার মহান মন্ত্র। হঠাৎ তখন,
নিয়্যতির নিষ্ঠূর ষড়যন্ত্র এলোমেলো করে দিল সব !
প্যারালাইজড হয়ে যায় বাবা। অতঃপর;
একদিন বাবা ডেকে বলে,
বাবু সব বাবাই চলে যায় একদিন,
মৃত্যূ পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম কঠিণ সত্য"
আমাকেও এবারের মত নিতে হবে বিদায় ।
চোখে টলমল জল আর বুকের ভেতর হৃদয়ফাটা
কম্পন স্তব্ধ করে দেয় আমার পৃথিবী , চিৎকার
করি বলি বাবা এ কথা বলোনা, এ ব্যাথা বইতে পারবনা।
অবাক করে দিয়ে বাবা হাসিমুখে বলে, এটাই চিরন্তন
মৃত্যূর কাছে আবেগ অনুভুতি এসব কিছুই নয়।
কেদোনা বাবু, কান্না পুরুষের জন্য নয়,
নিজেকে শক্ত করো, বাস্তবতা কঠিণ হলেও মেনে নিতে হয়।
মানুষ হতে হয় সত্যে ইস্পাত কঠিণ, ক্ষমা আর
ভালবাসায় জলের মত কোমল।।
কথা দাও বাবু, কাউকে ঠকাবেনা কভু জেনে,
মিথ্যা বলবেনা, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে আর অহংকার
তব প্রাণে না যেন রয়। প্রতিশ্রুতিতে বেধে,
বাবা তুমিতো চলেই গেলে মৃত্যুঘুমচুমে,
কিন্তূ মানুষ হবার প্রেরণায় এই মানুষের পৃথিবীতে
বাবু আজও শুধু হেরেই যায়। বাবা, জানতে বড়
ইচ্ছে হয়, কতটা হারালে মানুষ হওয়া যায় ?
বাবা কত ব্যাথা নীরবে সইতে হয়
মানুষ হওয়ার এ খেলায় ? বাবা একবার শুধু বলও
প্রতিশ্রুতি রাখা না রাখার দুনিয়ায়
আমি একা আর কত মেনে নিব বিশ্বাসের করুণ মৃত্যূ ?
মানুষের নখর আচরে বিদীর্ণ হৃদয় আজ
ভালবাসা শুন্য। বাবা ক্ষমা করো বাবা বড্ড ক্লান্তি
পেয়েছে আমার, ব্যাথায় পাজর ভেংগে যায়,
বাবা ভাঙ্গাচোরা বুক নিয়ে কত আর চলা যায় ?
আমিও থেমে গেছি আজ, ক্ষমা করে দিও আমায়
মানুষ হবার স্বপ্ন বাবা সত্য হলোনা মানুষের দুনিয়ায় ।
এবারের মত আমিও ফিরব বুকে নিয়ে বেদনায় ।
বাবা আবার যদি জন্ম পাই, আসি যদি ফিরে
নব্ জন্মে হইনা যেন মানুষ, এই মানুষেরই ভীরে।