আমি খুব দরিদ্র পরিবারে জন্মছিলাম তাই
আমি আজীবন মাথা নিচু করে রেখেছি লজ্জায় ।
ইশ্বর !
আমিতো বেছে নেয়নি জন্মস্থান ,পিতৃ পরিচয় ?
দরিদ্র পিতার সাম্যর্থ্য ছিলনা তাই , স্বাভাবিক
নিম্নমানের পোশাক পড়তাম, ঈদের নতুন
জামা
জোটতনা সবসময় ,
তাই শৈশবেই ছিলাম একঘরে ।
সেই থেকেই উন্নত মস্তিষ্ক নিয়ে জন্মানো
বিত্তশালী পরিবারের ভদ্র মানুষগুলোর সম্মুখে
নিজেকে পিপড়ার মত ছোট মনে হত ।
এমনিতেই সংসারের নানা চাহিদা , মায়ের ঔষুধ,
আমার পড়ালেখার খরচ , প্রাইভেট টিউটরের খরচ,
ভার্সিটি কোচিং , তার সাথে
বোনের বিয়ে দিতে হলে যৌতুকের টাকা , এতসব
বাবার পক্ষে ম্যানেজ করা ছিল বিষণ অসম্ভব ।
তাই অর্থাভাবে কলম ছেড়েছিলাম সেদিন ।
এখানেও শেষ হলোনা নিষ্ঠুরতার ইতিহাস ,
হঠাৎই একদিন বাবার স্ট্রোক , তারসাথে মুমুর্ষ
প্যারালাইসিস হয়ে শয্যাশায়ী অতঃপর
চিকিৎসাহীন করুণ মৃত্যু ।
তাতে কি আসে যায় কিছু কারো ?
গল্পের মত নয় জীবনের নিয়ম , বাস্তবতা তারও কঠিণ
তাই বাবার ঋণের দায়ে যা ছিল বাকি
এমনকি ঘরটাও বিলিয়ে দিয়ে , হয়েছিলাম পথবাসী ।
অথচ চারিপাশের মানুষগুলো করেছিলো উপহাস,
সমবেদনা নয় ।
কবিতা ? গল্প ? না বলছি জীবনের কথা
অসহায় চোখে দেখেছি আর করেছি অনুভুব
সভ্য পৃথিবীর ব্যস্ত মানুষগুলো আজ যন্ত্রের মতই নির্দয়,
বিবেকহীন জন্তূর মত কত ভয়ানক স্বার্থপর ।
কিন্তূ ; কবি তুমিও কি চাটুকার ?
তবে কবিতার চরণে চরণে কেন ওদেরই বন্দনা ?
কবি তুমিও কি হারেয়ছি মানবতাবোধ ?
বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে মগ্ন হয়েছ নেশায় ?
সময়ের প্রয়োজনে তবু জাগতে হবে , কবি আজ
ইমারতের কারুকার্যের গল্প, উচু ভবনের বন্দনা
কিংবা নারীর প্রেমের টান এসব তুলে রাখো
এখন কবিতায় দিতে হবে সেই বিবরণ ;
আধুনিক সভ্য সমাজে মানব হৃদয়ের
হয়েছে কি উন্নয়ন ?
নাকি মানবহৃদয় আজ জন্তূ-জানোয়ারের খাদ্য ।
কবিতা তুমি এবার আমার কথা বলো,
আমি শুধু গরীব ঘরে জন্মেছিলাম বলে
আজীবন মাথা নিচু করেছিলাম লজ্জায় ।
তাই আজ কবিতায় লিখো মানুষের কষ্টের বিবরণ ।
অতঃপর ,
আমি আজ পড়ব মাথা উচু করে সেই কবিতা
গোটা পৃথিবী মাথা নিচু করে রাখবে লজ্জায় ।