আমরা অনেকেই নিজেদের সংশোধন পছন্দ করিনা। সবাই শুধু অন্যের সংশোধন নিয়ে ব্যস্ত। এমনকি কেউ যদি আমাদের দোষগুলো ধরিয়ে দেয় তখন নিজেও তার উপরে হয়ে যাই মহাক্ষ্যাপা।আসলেই কি এমনটা হওয়া উচিৎ !? আমাদের কেউ পার্ফেক্ট না। মানুষ হিসেবে আমাদের কিছু ভুলত্রুটি থাকবেই। কেউ এইসবের উর্ধ্বে নয়। কিন্তু এসব মানবীয় ত্রুটিগুলো কাটিয়ে ওঠা যায়। যে যতো ত্রুটিমুক্ত হবে তার জীবনও ততো সুন্দর হবে।
অন্য ধর্মের কথা জানিনা। কিন্তু ইসলামে এরজন্য সুব্যবস্থা আছে। কেউ যদি চায় তাহলে সহজেই এসব ত্রুটি থেকে মুক্ত হতে পারে। কারণ রাসূল সাঃ বলেছেন "একজন মু'মিন অপর মু'মিনের জন্য আয়নার মতো"। সে চাইলেই নিজেকে এই আয়নায় স্পষ্ট দেখতে পারে। নিজের ভিতরের যতো ঘাটতি কমতি সবই সে এই আয়নায় খুঁজে পাবে। এবং এইসব থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারবে। তাই অপর মু'মিনের উচিৎ তার ভাইয়ের ঘটতিগুলো কৌশলে তাকে জানানো। এরজন্য রয়েছে আলাদা ভাষা। আলাদা ভঙ্গিমা। মানুষের দোষ ত্রুটির কথাও এমন হৃদয়কাড়া ভাষা ও ভঙ্গিমায় বলা যায় যাতে হৃদয় বিগলিত হয়...চোখ অশ্রুসিক্ত হয়.... মাথা অবনবত হয়....। তবে সবসময়েই যে সবার ভাষা এমন হতে হবে তার কোনো অর্থ নেই। নিজেকে শোধরানোর যার ইচ্ছা আছে সে যেকোনো ভাষায় নিজের দোষ শুনতে পারে। চাই তাকে কেউ ধমক দিক বা কেউ নরম স্বরে বলুক দুটোই তার কাছে সমান।
আমাদের এমনই হওয়া উচিৎ। কারণ নিজের সংশোধনের জন্য যদি আমরা এমন সুমিষ্টভাষী দাঈর জন্য সারাটা জীবন অপেক্ষা করতে থাকি তাহলে হয়তো কারো এমন মানুষের সাক্ষাৎ নাও মিলতে পারে। কিন্তু তাই বলে জীবন তো আর থেমে থাকবে না। এটা পানির শ্রোতের মতো। আপন গতিতেই চলবে।সংশোধন যদি হয় তবে জীবন হবে হীরকতুল্য। জীবন আমার। তাই সিদ্ধান্তও আমার। অন্যান্য সব সিদ্ধান্ত যদি নিতে পারি তবে নিজেকে শোধরানোর সিদ্ধান্ত কেন নিতে পারবো না !! কেউ যদি গালিও দেয় তবুও রাগ না করে গালি দেওয়ার কারণ চিন্তা করা দরকার।সে কেন আমাকে গালি দিবে !! দোষ যদি নিজের হয় তবে সেটা চিহ্নিত করা। আর যদি নিজের দোষ না থাকে তবে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা।
সমাজের প্রতিটা মানুষ যদি এমন হতো তবে আর এত কলহ বিবাদ থাকতো না। সমাজ হতো শান্তিপূর্ণ। তবে শুধু অন্যকে উপদেশ দিলেই সমাজ পরিবর্তন হবেনা। সবার আগে নিজের পরিবর্তন চাই। আগে নিজেকে বদলানো চাই। নিজে বদলালে সমাজ বদলাবে।আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি যেনো সবার আগে আমার ভিতরে এই গুণ দান করেন। আমীন।