রাজধানীর উত্তরার ১৪ নং সেক্টরের বৌদ্ধ মন্দিরের পাশে ১১৮ টি পিস্তল, ২১৭ টি ম্যাগজিন, ১০০০ রাউন্ড গুলি, ১১ টি বেয়নেট উদ্ধার।- চ্যানেল আই'।
আজকের এই পোস্টের উদ্দেশ্য সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উস্কে দেয়া নয়। উদ্দেশ্য কিছু সমালোচনা। অথবা আরো ভদ্র ভাষায় আত্মসমালোচনা।
আপনাদের হয়তো অনেকের মনে আছে, বছর খানেক আগে চট্টগ্রামের লালখান বাজারে মাদ্রাসায় আইপিএস ব্লাস্টের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিডিয়া এবং সরকারের যোগসাজসে যে তুলকালাম কান্ড ঘটানো এবং এরই প্রেক্ষিতে মুফতি এজহার সাহেবের মতো একজন বরেণ্য আলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো।
কিছুদিন আগে ঢাকার একটি প্রসিদ্ধ ইসলামী বিদ্যাপীঠ জামিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ এর একজন শিক্ষককে জুম'আর খুৎবায় জিহাদ সংক্রান্ত আলোচনার কারণে সন্দেহভাজন হিসেবে এ্যারেস্ট করা হয়। শুধু তাই নয়। এ্যারেস্টের পরে পুলিশ যথারিতি বিষয়টা চেপে গিয়েছে।
আমাদের শিক্ষক মাওলানা মামুনুল হক সাহেবকে কতোবার এ্যারেস্ট করা হয়েছে তার সঠিক হিসাব এই মুহূর্তে মনে আসছে না।তার নামে কোনো জঙ্গী কেস টেস নেই। তাও যখনই ইসলামী দলগুলোর পক্ষ থেকে কোনো আন্দোলনের আশংকা করা হয় তখনই তাদের এ্যারেস্ট করা হয়। ব্যাপারটা এখ এমন পর্যায় এসে দাড়িয়েছে যে তারাও এখন যেকোনো সময় গ্রেফতার হওয়ার জন্য মানসিক ভাবে তৈরি থাকেন।
আমাদের দাদা শিক্ষক শাইখুল হাদীস আল্লামা আজীজুল হক রহঃ এবং মুফতি আমিনী রহঃ তো আমাদের জন্যে উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাদের জেল জুলুম নিপীড়ন সর্বজন বিদিত।
আমি বলতে চাইছি না যে এই মুহূর্তে বৌদ্ধ মন্দিরের সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকে গ্রেফতার করা হোক। গ্রেফতার বা ধরপাকড় যাই বলা হোক সেটা হবে সম্পূর্ণ আইনের আওতায়। এইসব আগ্নেয়াস্ত্র নিশ্চই অবৈধ। এগুলো তদন্ত হোক। প্রকৃত দোষী কারা তাদের খুঁজে বের করা হোক।
বিএনপির আমলে র্যাব ছিলো মূর্তিমান এক আতঙ্ক। যেখানে সেখানে প্রতিদিন ক্রসফায়ারের খবরে পত্রিকার হেড লাইন থাকতো রক্তিম। এইসব বিচার বহির্ভূত হত্যা কখনো কাম্য নয়। কিন্ত এখন সেগুলোই হচ্ছে দেদারসে। হচ্ছে স্বয়ং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় সরকারি উর্দির আড়ালে এবং এদেশীয় কিছু জড়বুদ্ধির লোককে ঘুটি বানিয়ে। বাহিরে সাইনবোর্ড লাগানো আছে "জঙ্গী" । আর এই দুইয়ের মাঝে তফাৎ হলো সরকারি উর্দিওয়ালারা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। আর জড়বুদ্ধির জঙ্গীরা ধরা পড়লে পুলিশ কাস্টাডিতে হার্ট এটাকে নয়তো ক্রসফায়ারে নিহত। ব্যাস !! খেল খতম। সাপও মরলো লাঠিও ভাংলো না। এরচেয়ে নিরাপদ রাজনীতি আর কী আছে ??
ফাহিমের বয়স কতো ছিলো বলতে পারেন ?? এই বয়সী একটা ছেলে এই লাইনে !! প্রকৃতই যারা জিহাদের প্রবক্তা তাদের ভিতরে শতভাগ ইসলাম থাকে। অথচ দেখুন তো চেহারাটা একবার !!! এইসব ছোট বাচ্চাছেলেদের ধরে এনে ব্রেইন ওয়াশ করে দেয়া হয় জিহাদের তালিম। জিহাদ মানে হলো হয় মারো নয়তো মরো !! আর মরলেই জান্নাত। ইসলামের নূনতম জ্ঞান থাকলে এরা বুঝতো এভাবে মরার পরে জান্নাত নাকি জাহান্নাম। এরা সবাই এক বিশাল নীলনকশার ক্রীড়নক। এদের দিয়ে চালানো হয় একের পর এক অপারেশন।এরপরে কিছুদিন চলে তদন্তের নামে প্রহসন। এরপরে ফাহিমের মতো কেউ যদি একান্তই এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়ে যায় তখন রিমান্ডে নিয়ে প্যাঁচ কষে বের করা হয় ভেতরের খবর কে কতটা জানে। ডেঞ্জার লেভেলের হলে তারা কেউ সেখানেই হার্ট এ্যাটাক করে নয়তো ক্রসফায়ারে মারা যায়।
লেখার শুরুতেই বলেছি এটা "আত্মসমালোচনা মূলক" লেখা। দোষ কাউকেই দিচ্ছিনা। বিজ্ঞ পাঠকের ওপরে বিচারের ভার ছেড়ে দিচ্ছি।