somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: নূহ (আ) নবীর মহাপ্রলয়

১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদিগকে অতি সৌভাগ্যবান বলিলে অত্যুক্তি করা হইবে না এই জন্য যে আমাদিগকে হুজুর নূহ আলাই সাল্লাম এর উম্মত করিয়া এই দুনিয়ায় পাঠানো হয় নাই তাহা না হইলে ইহার ব্যাপারে কে শপথ করিয়া বলিতে পারিবে যে আমাদিগেরও নূহ আলাই সাল্লাম নবীর মহাপ্রলয়ে ধ্বংস হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল না। নূহ (আ) নবীর অতি ভয়ঙ্কর মহাপ্রলয় আমাদিগকে দেখিতে হয় নাই বটে তবে মধ্যে মধ্যে ইহার কিছু কিছু নমুনা আমাদের সামনে পেশ করা হইয়া থাকে। যাহাদের নাম আমরা কখনো দিয়াছি নার্গিস আবার কখনো সুনামি, ইহা ছাড়াও আরো কত কি? যাহা হউক এই প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় লইয়া ছোটখাটো কেলেঙ্কারির যে ঘটনা হামেশা ঘটিতেছে ইহাই আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয়বস্তু।

খবরে প্রকাশ পাইয়াছে যে এক মহা প্রলয়কারী ঘূর্ণি ঝড় প্রবল বেগে আমাদের দেশ ও পার্শ্ববর্তি দেশের দিকে ধাবিত হইতেছে। ইহার গতিবেগ এখনও সীমিত পর্যায়ে রহিয়াছে তবে স্থলভাগে প্রবেশ করিবামাত্র ইহার গতিবেগ ভয়ঙ্কর রকমভাবে বাড়িয়ে যাইতে পারে। উপকূলবর্তী এলাকাসমূহে লাল পতাকার সংকেত দেখাইতে বলা হইতেছে।

এমতাবস্থায় দেশের কর্তাস্থানীয় ও অতীব বুদ্ধিমান এবং জাতীয় পন্ডিতবর্গ একত্রিত হইলো কি করিলে কি হইবে এই ধরণের গোলটাবল বৈঠক। বৈঠকে কথায় কথার শোরগোল পড়িয়া তালগোল পাকাইয়া গেলো। এই মহাবিপদ হইতে উদ্ধার পাওয়ার জন্য পঞ্চাশ লক্ষ টাকার তহবিল গঠন করা হইল। কিন্তু যেইহেতু উক্ত স্থানে বড় বড় পন্ডিত বর্গ উপস্থিত হইয়াছেন দেশ ও দশের কল্যানর্থে। কাজেই তাহাদের সম্মান না দেখাইলে অত্যন্ত গর্হিত অন্যায় হইয়া যায়, অতএব পঞ্চাশ লক্ষ টাকা হইতে পাঁচ লক্ষ টাকা উহাদের রাহা খরচ ও নাস্তা বাবদ কর্তন করিয়া রাখা হইল।

এমতাবস্থায়, বৈদেশিক সাহায্য আহ্বান করা হইলো। দাতার হাত তো প্রশস্তই হইয়া থাকে কাজেই ত্রাণ সামগ্রীর জন্য ব্যাপক দান পাওয়া গেলো। তবে ইহা আর জনসম্মুক্ষে উচ্চারণ করা গেলো না তথাপি কর্তা ব্যক্তিদের বন্টুলুন / পাজামা পয়সার ভারে ছিঁড়িয়া ফাটিয়া যাইবার উপক্রম হইলো, অনেকের তো নতুন পায়জামা বানাইবার জন্য দর্জি বাড়ি পর্যন্ত যাইতে হইলো। ইতোমধ্যে নূহ (আ) নবীর মহাপ্রলয়ের কিছু ক্ষুদ্র অংশ আসিয়া আমাদের দারিদ্র্য পীড়িত অঞ্চলে আঘাত করিল। পাড়ায় মহল্লায় ত্রাণ কমিটি গঠিত হইলো। উহারা অনিতিবিলম্বে কালক্ষেপন না করিয়া উপকূলবর্তী অঞ্চলে পৌঁছিয়া ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করিয়া দিলো। আমাদের কর্তা ব্যক্তিরা অত্যন্ত মেধাবী হইবার সুবাদে তখনও চিন্তা ফিকির করিতে ছিলেন যে কি করিলে কি হইবে। ইতোমধ্যে শত শত মানুষ খরচের খাতায় চলিয়া যাইতে লাগিল। অবস্থা বেগতিক দেখিয়া ত্রাণমন্থনাকারী সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করিলেন, ভারাক্রান্ত হৃদয়ে গণমাধ্যমকে বলিলেন আল্লাহর মাল আল্লাহ উঠিয়া লইয়া গিয়াছেন, আমাদের কি করিবার আছে। পেছনদিক হইতে তাহার চকচকে টাকখানায় একপাটি জুতা সশব্দে আছড়াইয়া পড়িল। ইহাতে তিনি পাততাড়ি গুটাইয়া সংবাদ সম্মেলন ত্যাগ করিতে বাধ্য হইলেন। আর এই সংবাদ সম্মেলনও প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা খরচা হইয়া গেলো।

অবশেষে কর্তাদের বোধোদয় হইলো। অতঃপর বিশেষ দলকে উপকূলে প্রেরণ করা হইল। অত্যন্ত কর্মঠ দল সমূহ নিজেদের তাঁবুর ভিতর মাটন বিরিয়ানি আহারযোগে অত্যন্ত পরিশ্রম করিতে লাগিলো। এলাকার মানুষ ক্ষুধার তীব্রতায় তাম্মুর আশে পাশে ভিড় জমাইতে লাগিলো। উহাদের মধ্যে শরীফের মা ও ছিল। কষ্টে সিষ্টে তাম্মুর কাছাকাছি পৌঁছাইল। দলনেতা কে বলিল চার দিন ধরিয়া কিছ খাই নাই, দলনেতা মুখে কষ্টের ছাপ আনিয়া কিছুক্ষন চুপ করিয়া থাকিলেন। তার মুখ হইতে একটি ছোট্ট বাক্য নির্গত হইলো..........................যা ভাগ।

আর এইভাবে ত্রাণ করিতে করিতে কর্তাব্যক্তিদের পঞ্চাশ লক্ষ টাকা শেষ হইয়া গেলো।

-----সমাপ্ত----
ছবিসূত্র: ইন্টারনেট

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:০০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×