somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইতিহাসের পাঠশালায়: পর্ব-২৯ | স্যালিয়ান-ফ্রাঙ্কিশ সাম্রাজ্য (১০২৪-১১২৫ সাল)

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১০২৪ সালে ইউরোপের অটোনিয়ান রাজবংশের শেষ সম্রাট দ্বিতীয় হেনরির মৃত্যুর পর জার্মানি-ইতালির রাজসিংহাসনের উত্তরাধিকারী মনোনীত করা হয় দ্বিতীয় কনরাডকে। দ্বিতীয় কনরাড ‘কনরাড দ্য এল্ডার’ নামেও পরিচিত। তিনি স্যালিয়ান রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ১০২৪ সালে তিনি জার্মানির রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন; ইতালির রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন ১০২৬ সালে এবং বারগান্ডির রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন ১০৩৩ সালে। ১০২৭ সালে রোমের পোপ দ্বিতীয় কনরাডকে ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ হিসেবে অভিষিক্ত করেছিলেন। ১০৩৯ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এ পদে বহাল ছিলেন।

দ্বিতীয় কনরাডের জন্ম হয়েছিল ফ্রাঙ্কোনিয়ার একজন মধ্যম সারির অভিজাতের ঘরে। তাঁর পিতা হেনরি ছিলেন স্পিয়ারের কাউন্ট। দ্বিতীয় কনরাডের শৈশবেই তাঁর পিতা কউন্ট হেনরি অভ স্পিয়ার মারা গিয়েছিলেন। পিতাঁর মৃত্যুর পর শিশু কনরাড উত্তরাধিকারসূত্রে ‘কাউন্ট অভ স্পিয়ার’ এবং ‘কাউন্ট অভ ওয়ার্ম’ উপাধীর অধিকারী হয়েছিলেন। বড় হওয়ার পর কনরাড জার্মানির প্রিন্সদের সমর্থনপুষ্ঠ হয়ে তাঁর নিজের এলাকার বাইরেও প্রভাব বিস্তার করেছিলেন।

স্যাক্সন গোত্রীয় অটোনিয়ান রাজবংশের শেষ সম্রাট দ্বিতীয় হেনরি কোন উত্তরাধিকারী না রেখেই মৃত্যুবরণ করায় ৩৪ বছর বয়সে দ্বিতীয় কনরাড জার্মানির নির্বাচিত রাজা হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ করেন। এরপর কনরাড নিজের একটি নতুন রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করে যান যা স্যালিয়ান রাজবংশ নামে পরিচিত। এক শতাব্দীকালেরও বেশি সময়জুড়ে ‘পবিত্র রোমান সাম্রাজ্য’ শাসন করেছিলেন এ বংশের সম্রাটরা।

দ্বিতীয় কনরাড ক্ষমতায় আসার পর অটোনিয়ান সম্রাটদের নীতিগুলোই অনুসরণ করেন। ক্যাথলিক চার্চ এবং ইতালির ব্যাপারে তিনি দ্বিতীয় হেনরিকে অনুসরণ করেছিলেন। দ্বিতীয় হেনরির মতো তিনিও চার্চের ক্ষমতায়নের নীতি গ্রহণ করেছিলেন। তিনি চার্চ সংগঠনকে রাজনৈতিক ক্ষমতার একটি শক্তিশালী কেন্দ্রে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এজন্য তিনি সাম্রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে চার্চের বিশপদেরকে বহাল করেছিলেন; সেক্যুলার লর্ডদের ওপরে স্থান দিয়েছিলেন চার্চের বিশপদেরকে। দ্বিতীয় হেনরির মতো কনরাড ইতালির ওপর বিশেষ করে রোম নগরীর ওপর সদয় দৃষ্টি বজায় রেখেছিলেন।

দ্বিতীয় কনরাডের সময়কালকে মধ্যযুগীয় ‘পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের’ ইতিহাসের এক বিশেষ অধ্যায় হিসেবে গণ্য করা হয়। ইউরোপের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর সময়কাল ছিল অপেক্ষাকৃতভাবে শান্তিপূর্ণ। বারগান্ডি রাজ্যটি তিনি শান্তিপূর্ণভাবেই তাঁর সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। ১০৩২ সালে বারগান্ডির শিশু রাজা তৃতীয় রুডলফের মৃত্যুর পর তিনি রাজ্যটির কর্তৃত্ব দাবী করেছিলেন এবং রাজ্যটিকে তাঁর সাম্রাজ্যের সাথে একীভূত করেছিলেন।

বারগান্ডি ‘পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের’ অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর এ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত তিনটি রাজ্য যথা- জার্মানি, ইতালি ও বারগান্ডিকে একসাথে ‘রেগনা ট্রিয়া’ বলা হতো। এ তিনটি রাজ্য ছিল ‘পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের’ ভিত্তি। আরও পরবর্তীতে বোহেমিয়া ডাচিটি পূর্ণাঙ্গ রাজ্যে রূপ নিয়ে ‘পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের’ অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। ‘পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যে’ এ রাজ্যগুলোর অন্তর্ভুক্তিকাল নিম্নরূপ:

• কিংডম অভ জার্মানি: এ রাজ্য থেকেই অটোনিয়ান সাম্রাজ্যের সূচনা হয়েছিল। ৯৬২ সালে জার্মানি ও ইতালিজুড়ে প্রতিষ্ঠিত অটোনিয়ান সাম্রাজ্য পোপীয়ভাবে ‘পবিত্র রোমান সাম্রাজ্য’ হিসেবে স্বীকৃত হয়।
• কিংডম অভ ইতালি: ৯৬২ সাল থেকে ১৬৪৮ সাল পর্যন্ত ইতালি রাজ্যটি ‘পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের’ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
• কিংডম অভ বারগান্ডি: ১০৩২ থেকে ১৩৭৮ সাল পর্যন্ত বারগান্ডি রাজ্যটি ‘পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের’ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
• কিংডম অভ বোহেমিয়া: ১০০২ সালে বোহেমিয়া একটি ডাচি হিসেবে ‘পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের’ অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এবং ১১৯৮ সালে বোহেমিয়া ডাচিটি একটি পূর্ণাঙ্গ রাজ্য হিসেবে এ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।

১০৩৯ সালে স্যালিয়ান সম্রাট দ্বিতীয় কনরাডের মৃত্যুর পর তাঁর সিংহাসনের উত্তরাধিকার লাভ করেন তাঁর জ্যোষ্ঠ পুত্র তৃতীয় হেনরি। তৃতীয় হেনরি ছিলেন স্যালিয়ান রাজবংশের দ্বিতীয় সম্রাট। তিনি ‘দ্য ব্ল্যাক’ বা ‘দ্য পায়াস’ নামেও পরিচিত। ১০২৬ সালে তাঁর পিতা তাকে বাভারিয়ার ডিউক বানিয়েছিলেন। সেবছর বাভারিয়ার ডিউক পঞ্চম হেনরির মৃত্যু হওয়ায় তৃতীয় হেনরি সেখানকার ‘ষষ্ঠ হেনরি’ হিসেবে ডিউক হয়েছিলেন।

পরবর্তীতে সম্রাট হওয়ার পর তিনি ‘পবিত্র রোমান সম্রাটদের’ তালিকা অনুযায়ী ‘তৃতীয় হেনরি’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। তৃতীয় হেনরি বাভারিয়ার ডিউক হওয়ার পরের বছর তাঁর পিতা দ্বিতীয় কনরাড ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছিলেন। সম্রাট হওয়ার পরের বছর দ্বিতীয় কনরাড পুত্রের জন্য জার্মানির সিংহাসন ছেড়ে দিয়েছিলেন। ১০২৮ সালের ইস্টার দিবসে আখেনের ক্যাথেড্রালে আয়োজিত অভিষেক অনুষ্ঠানে তৃতীয় হেনরির মাথায় জার্মানির রাজমুকুট তোলে দেন কলোনের আর্চবিশপ পিলগ্রিম।


চিত্র: সম্রাট তৃতীয় হেনরি

১০৩৮ সালে সোয়েবিয়ার ডিউক চতুর্থ হারমানের মৃত্যুর পর এ ডাচিটি প্রদান করা হয় তৃতীয় হেনরিকে। তৃতীয় হেনরি তাঁর পিতার জীবদ্দশায় বারগান্ডির সিংহাসনেও বসেছিলেন। ১০৩৯ সালের ৪ জুন তাঁর পিতার মৃত্যুর পর তিনি সার্বভৌম শাসক হিসেবে রাজ্যগুলো শাসন করতে থাকেন। ১০৪৬ সালে রোমের পোপ দ্বিতীয় ক্লেমেন্ট তাকে ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ হিসেবে অভিষিক্ত করেছিলেন। ১০৫৬ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এ পদে বহাল ছিলেন।

১০৫৬ সালে তৃতীয় হেনরির মৃত্যুর পর জার্মানির সিংহাসনের উত্তরাধিকার লাভ করেন তাঁর ছয় বছর বয়সী শিশুপুত্র চতুর্থ হেনরি। কিন্তু চতুর্থ হেনরি নিতান্ত বালক হওয়ায় তাঁর রিজেন্ট হিসেবে ‘পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের’ দায়িত্ব হাতে তোলে নেন রাজমাতা অ্যাগনেস অভ আকিতাইন। তিনি ‘সাম্রাজ্ঞী অ্যাগনেস’ হিসেবেও পরিচিত। ১০৫৬ সাল থেকে ১০৬২ সাল পর্যন্ত তিনি চতুর্থ হেনরির রিজেন্ট হিসেবে ‘পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের’ সাম্রাজ্ঞী ছিলেন।


চিত্র: সম্রাট চতুর্থ হেনরি

১০৮৪ সালে চতুর্থ হেনরি ইতালির রাজা ও ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ হিসেবে অভিষিক্ত হন। ১১০৫ সালে উৎখাত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি এ পদে বহাল ছিলেন। চতুর্থ হেনরি ছিলেন একাদশ শতকের অন্যতম প্রভাবশালী সম্রাট। পোপতন্ত্রের সাথে ইনভেস্টিচার সংক্রান্ত বিরোধ এবং গৃহযুদ্ধের জন্য তাঁর শাসনামল বিখ্যাত। তাঁর শাসনামলে জার্মানি ও ইতালি উভয় দেশেই গৃহযুদ্ধ সংঘটিত হয়। ১১০৬ সালে তিনি তাঁর বিদ্রোহী পুত্রকে লরাইনের যুদ্ধে পরাজিত করার অল্পদিনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

চতুর্থ হেনরির পর ক্ষমতায় আসেন পঞ্চম হেনরি। পঞ্চম হেনরি ছিলেন স্যালিয়ান রাজবংশের চতুর্থ ও শেষ সম্রাট। তিনি জার্মানির সিংহাসনে বসেছিলেন ১০৯৯ সালে। ১১১১ সালে তিনি ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ হিসেবে অভিষিক্ত হন এবং ১১২৫ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এ পদে বহাল ছিলেন। তাঁর শাসনামলে পোপতন্ত্রের সাথে আবারও রাষ্ট্রের টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। পোপ সম্রাটের শক্তিশালী প্রতিদ্ধন্ধী হিসেবে আবির্ভূত হন। এসবের ফলে শেষ পর্যন্ত পঞ্চম হেনরি দ্বিতীয় প্রজন্মের গ্রেগরিয়ান সংস্কারকদের দাবীর কাছে মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

লেখক: আসিফ আযহার
শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, শাবিপ্রবি
ই-মেইল: [email protected]
ওয়েবসাইট: http://www.asifajhar.wordpress.com
ফেসবুক: Asif Ajhar, যোগাযোগ: 01785 066 880

বি.দ্র: রকমারিসহ বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটে লেখকের সবগুলো বই পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে লেখকের নামে সার্চ দিলেই যথেষ্ট।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:১১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×