কষ্টটা আরও একবার নতুন করে অনুভব করলাম।
সারাজীবন ব্যর্থতার আগুনে পুড়ে খাক এই হৃদয়ে
কোন একসময় স্থান করে নেয় একটি ভিন্নরুপি বন্ধু।
প্রথম যখন তার আসল রুপ জানতে পারি, বন্ধু বলতে
সামান্য দ্বিধা লাগছিল। কিছুদিন তাকে শাস্তি দেয়ার জন্য
দূরে সরে এসেছিলাম। নিজের দায়বদ্ধতা থেকে এবং
তার বন্ধুত্বের কাছে নিজেকে পরাজিত মনে করে তাকে
আবারো স্থান দেই আমার হৃদয় গভিরে। কিছুদিনের
ভিতরেই সে হয়ে ওঠে আমার প্রিয় বন্ধু পাখি।
পাখিকে নিয়ে আমি মনের সুখে গান গাইতাম, হাসতাম
খেলতাম, এমনকি কখনও কখনও তার কোলে মাথা রেখেই
ঘুমিয়ে পড়তাম। যখন রাত গভীর হত পাখিটা তখন মিষ্টি সুরে
গান ধরত। আমিও তার গানে সুর না মিলিয়ে থাকতে পারতাম না।
একদিন এক ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটলো।
আমার একটা ভীষণ ধারালো চাকু ছিল। সবসময় লুকানো থাকতো।
সেদিন হঠাত করেই মনের আবেগে চাকুটা বের করে ফেললাম।
পাখি তখন ঘরে ছিল না। মনের আবেগে চাকুটা বের করেছিলাম
মনের অজান্তেই সেটা পড়ে রইল আমাদের খেলা ঘরে।
পাখি যখন ঘরে ফিরল তখন আনন্দে মেতে উঠলাম খেলায়।
আমারি ভুলে রাখা চাকুটায় পাখিটার দুটি ডানা কেটে খণ্ড বিখন্ড
হয়ে গেল। আমার পাখির চোখে তখন অশ্রু, সমস্ত হৃদয়ে রক্তের দাগ
তাকে শান্তনা দিতে গেলাম, কিন্তু হঠাত আঘাত পাওয়া পাখির
মুখ থেকে আর গান বের হল না। বের হল কিছু দুর্বোধ্য ভাষা।
আমি বুঝতে পারলাম আমি পাখির কাছে ক্ষমা চাওয়ার
যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছি।
পাখির কষ্টে শান্তনা দেয়ার ভাষা আমার জানা নেই। কিন্তু
পাখি বুঝতে পারছে না মানসিক দিক দিয়ে আমি তার
চেয়েও কতটা কষ্টে আছি।