somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাড়ি বানাবার ডায়েরি - এক

১৪ ই জুন, ২০১১ রাত ১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কী ঘর বানাইমু আমি শূন্যেরই মাঝার। হাসন রাজা হুতাশ কইরা কইছিলেন। এই হুতাশ করার যে যোগ্যতা লাগে, সেইটা আমার নাই। অনেকেরই নাই। যাদের বেশি বেশি নাই, তারাই পৃথিবীতে প্রমোটার হইয়া জন্মায়। আমি জন্মাইলাম অগা হইয়া। তবুও পোলার কথা শুনতে লাগে। তার কথায়, এখন যে বাঁশের বেড়ার ঘরে আমাদের বাস তাতে তেমন জুৎ হয় না। তার ইশকুলের বন্ধুদের সবার দালানবাড়ি আছে। সে আবার ইতিমধ্যে এইটাও লক্ষ করছে, বাবার বন্ধুরাও দালানকোঠাতে থাকে। একে দালানকোঠা, তায় রঙিন। সুতরাং তার একখান এমন বাড়ি লাগবো, যাতে তার সম্মান বাঁচে। এখন তো আবার অ্যডোলস্যান্স আগে আইয়া পড়ছে। আগে যেসব কথা বারো বছরে মাথায় আইতো, এখন সেটা নয় বছরে আসে। সুতরাং আমরা দুইজন স্বামী-স্ত্রী বসে গেলাম হিসাব লইয়া। বহু রাতের ঘুম মাইর দিয়া যে জিনিস বাইর হইল, তাতে চিরঋণী হইয়া হইলেও একখান ঘর বানানো দরকার বোধ হইল।
বাপের বাড়িটির দিকে তাকাই। আজকালের তুলনায় সেটা বেশ বড়। বড় বইল্যাই অনেকে বাবারে জিগ্যাসা করে, এত বড় বাড়ি দিয়া কিতা করবেন মেসো বেইচ্চা দেন। বাবা চমৎকার একটা জবাব ছাড়েন, ‘ শুন যেসব লোক মুরগা দেইখ্যা কাইট্টা মাংসের পরিমানের অনুমান লাগায়, গাছ দেখলে কাইট্টা কত কাঠ পাওয়া যাইব কল্পনা করে তাদের লগে আমি খুনির পার্থক্য দেখি না।’ যারা এই কথা একবার শুনেছে, তারা বুইজ্যা হোক না বুইজ্যা হোক আর বাড়ির জায়গা বেচনের কথা তোলে না। এখন এই বাড়িতে আমার একখান ঘর তোলার লাগে। তাহলেই কাটতে হবে অনেকগুলো গাছ। কত যে গাছ এই বাড়িতে আছে, তা আমরাই জানি না। বাঁশ, টেকরই, মণ্ডাফল, আম-জাম-কাঁঠাল-পেয়ারা-কমলা থেকে শুরু কইরা কত গাছ! একটা নাম না জানা গাছে আছে তোতাদের সংসার। একটা ‘হোয়াইট ব্রেস্টেড হক’-এর জুটি এসে বয়রা গাছের মগডালে বাসা বানাইছিল। এই পাখির নাম যে এইটা সেই কথা বুক অব ফ্যাক্টস থিকা বাইর করছে শ্রীমান। তাদের দেখলেই দুনিয়ার কাক আইয়া পেছনে লাগত। একটা করুই গাছে থাকতো চামচিকার দল। মাথা নিচু করা সেইসব পাখির ভয় দেখাইয়া পোলওে তার শিশুবেলায় খাওয়ানো সহজ হইত। তাদের বিষ্ঠার জ্বালায় সেই গাছ একদিন কাটা হইল। পেছনে আছে একটা দেশি আমড়ার গাছ। তাতে আছে দুইটা পেঁচা। আমার দুই বছরের ভাইপো পেঁচার মুখভঙ্গি নকল কইরা দেখাইতে পারে। পেঁচা কেমনে থাকে জিগ্যাসা করলে সে বারবার সেটা কইরা দেখায়। তা দেখাইয়া সে পাড়ায় বেশ জনপ্রিয় শিশু হইতে পারছে। এই গাছগুলোর অনেককে কাটতে হইব। বাড়ি করতে হইলে তাদের মাইরা ফালাইতে হইব। একটা শূন্য না বানাইলে, কী ঘর বানাইমু? তাই একদিন করাতি আইলো।
করাতিরা আসলে বড় কামুক হয়। তাই বাড়ির মেয়েলোক নিয়া আমার চিন্তা হইল। সেই চিন্তা কারও কাছে প্রকাশ করা যায় না। কিন্তু এমন কোনও বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ নাই, করাতিরা কামুক হয়। কিন্তু যেভাবে তারা গাছ কাটে, পরে একটা পাটাতনে গাছের গোল শরীর শোয়ায় আর তার উপরে একজন আর নিচে দুইজন দাঁড়াইয়া করাত টানে, তাতে যেকোনও চক্ষুষ্মান তাদের কামুক ভাবতে বাধ্য। কিন্তু সব কাম তো আর মেয়েদের দিকে ধায় না। তাই রক্ষা। করাতি এসে গাছগুলি কাটলো। তারপর তৈরি হল একটি শূন্য। সেখান থেকে আকাশের চাঁদ স্পষ্ট দেখা যায়। এই জায়গায় একটি ঘর হইব।
(চলবে)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×