একটি এসএমএস করেই যে কেউ চাইলে পদ্মা সেতুর জন্য অর্থ সহায়তা দিতে পারবেন! এভাবে কোটি কোটি এসএমএস থেকে হাজার হাজার কোটি টাকাও সংগ্রহ করা সম্ভব।' সরকার চাইলে জনগণের কাছ থেকে এভাবে পদ্মা সেতুর জন্য অর্থের
সংস্থান করে দিতে প্রস্তুত আছে মোবাইল ফোন অপারেটররা।
এর আগেও এসএমএসের মাধ্যমে সিডরে আক্রান্তদের জন্য কয়েকশ' কোটি টাকার তহবিল গঠন করে দিয়েছিল মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন-অ্যামটব। আগ্রহী জনগণের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা তুলে দিয়েছিল সরকারের হাতে। একইভাবে জাপানে সুনামিতে আক্রান্তদেরও সহায়তা করেছে এ দেশের জনগণ। তাহলে পদ্মা সেতুর জন্য নয় কেন?
এভাবেই মোবাইল ফোন প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে জনগণের কাছ থেকেও পদ্মা সেতুর খরচের একটি বড় অংশের অর্থায়ন হতে পারে। বিটিআরসি বলছে, সরকার চাইলে এ বিষয়ে তারা মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর সঙ্গে কথা বলতে পারে। অন্যদিকে অপারেটররা বলছে, তারা প্রস্তুত। এই অবস্থায় কেবল সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছে দুই পক্ষ।
কিছু দিন আগে এ বিষয়ে কথা হলে অ্যামটবের বোর্ড চেয়ারম্যান এবং সিটিসেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহবুব চৌধুরী সমকালকে বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে তো তারা কত কিছুই করে দেন। এবার না হয় সরকারকে আরও বড় একটি সাপোর্ট দেবেন। অন্যদিকে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ বলেন, জনগণ এবং সরকার বিষয়টিকে কীভাবে নিচ্ছে সেটি এখানে বড়। তবে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে এই পন্থায় অনেক বড় তহবিল গঠন করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ১০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ এবং ১০০ টাকার এসএমএস চালু করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে তিনটি ভিন্ন শর্ট কোড দেওয়া থাকবে। যে গ্রাহক যে পরিমাণ টাকা সরকারকে দিতে ইচ্ছুক তিনি সেই কোডে এসএমএস পাঠালে অপারেটর তার ব্যালান্স থেকে সেই পরিমাণ টাকা কেটে নিয়ে তহবিলে জমা করবে। কেউ বেশি টাকা দিতে চাইলে যতবার খুশি ততবার এসএমএস করতে পারবে।
পদ্মা সেতুর জন্য এসএমএসে তহবিল সংগ্রহের এই পদ্ধতিকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রয়েছেন অনেকে। বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করে এ বিষয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। অনেক গ্রাহক বলেছেন, নিজেদের পয়সায় নিজেরা ব্রিজ করতে পারলে তার চেয়ে বড় কিছুই আর হতে পারে না। এটিকে একটি আন্দোলন হিসেবে নিয়ে তাতে সবাইকে অংশ নেওয়ার প্রত্যয়ের কথাও জানিয়েছেন কেউ কেউ। এর আগে যমুনা সেতুর জন্যও তৎকালীন সরকার বিদ্যুৎ বিল, রেলের টিকিট এমনকি সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন থেকেও অর্থ সংগ্রহ করেছে।
এদিকে বিটিআরসির অপর একটি সূত্র বলছে, বর্তমানে ৮ কোটি মোবাইল গ্রাহক মিলে দিনে ৩০ কোটি মিনিটের বেশি কথা বলে। সেক্ষেত্রে প্রতি মিনিট থেকে পাঁচ পয়সা পদ্মা ব্রিজের জন্য নেওয়া হলেও দিনে কোটি টাকা পেরুবে। বিটিআরসি আরও বলছে, অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় তারা এখন অনেক বেশি আয় করছে, যা পদ্মা সেতুর তহবিল হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
৩,১৮৪ কোটি টাকা জমা :চারটি মোবাইল ফোন অপারেটরের দ্বিতীয় প্রজন্মের লাইসেন্স নবায়নের প্রথম কিস্তি হিসেবে প্রাপ্ত ৩ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়েছে বিটিআরসি। আগামী এক বছরে এখান থেকে আরও অন্তত ৫ হাজার কোটি টাকা আসবে। তাছাড়া জুনে তৃতীয় প্রজন্মের লাইসেন্স দিয়েও বিটিআরসি অন্তত এক বিলিয়ন ডলার আয় করবে বলে আশা করছে। এই টাকাও সরকার চাইলে পদ্মা সেতুর জন্য নিতে পারে বলে জানান জিয়া আহমেদ। তা ছাড়া বছর বছর সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল থেকেও সরকার প্রায় হাজার কোটি টাকা আয় করবে। এর সবই পদ্মা সেতুর জন্য যেতে পারে। Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ২:৪৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




