অক্টোবরে দেশে গুপ্ত হত্যার ঘটনা ঘটেছে ৮৬ টি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে ৪ জন। সেন্টার ফর মিডিয়া রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং(এমআরটি)’র মাসিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। সোমবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
এমআরটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অক্টোবর মাসে সারা দেশে ৪০৭টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে খুন হয়েছে ১৩ জনেরও বেশি। যৌতুক ও অন্যান্য কারণে স্বামীগৃহে নির্যাতনের পর জীবন দিতে হয়েছে ৩১ জন নারীকে। এসময় গণপিটুনিতে নিহত হয় ১৭ জন।
খুনের একটি বৃহৎ অংশ গুপ্ত হত্যার শিকার হয়েছেন। এমআরটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দেশে গুপ্তহত্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। অক্টোবর মাসে দেশে গুপ্তহত্যার ঘটনা ঘটেছে ৮৬টি। যা গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৩ জন। এর মধ্যে মাথাবিহীন গলিত লাশ উদ্ধার হয়েছে কয়েকটি।
অক্টোবরে ৪ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে ১ জন র্যাব ও ৩ জন পুলিশের হাতে কথিত ক্রসফায়ারের শিকার হন। অক্টোবর মাসে ১৪ জন অসুস্থতাজনিত কারণে জেল হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
অক্টোবর মাসে বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যা করেছে ৭২ জন। পারিবারিক কলহ ও অভিমান, ধর্ষিত হওয়ার লজ্জা, অভাবের তাড়না, যৌন হয়রানি, প্রেমঘটিত বিষয় এসব আত্মহত্যার অন্যতম কারণ বলে জানা গেছে।
অক্টোবর মাসে সারাদেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন অন্তত ৪৭ জন। যার মধ্যে ১৭ জন নারী ও ৩০ জন শিশু। এ ক্ষেত্রে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১২টি। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় ৫ জনকে। এছাড়া এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে ৬টি। অক্টোবর মাসে যৌন হয়রানি তথা ইভটিজিংয়ের শিকার হন ৪৬ জন। এ সময় যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের লজ্জা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন ৭ জন।
অক্টোবর মাসে বিএসএফের গুলি ও নির্যাতনে ৫ বাংলাদেশী নিহত হন। অক্টোবরে বিএসএফের হাতে আহত হয়েছেন ১২ জন। এ সময় বিএসএফ অপহরণ করে ৫ বাংলাদেশীকে।
৭ অক্টোবর রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নে চর মাঝারদিয়া গ্রামের কিশোর মো: সুজন আলী (১৬) বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়। মাঝারদিয়া সীমান্তে পদ্মা নদীর একটি শাখা নদীতে মাছ ধরার সময় বিএসএফ সদস্যরা তাকে গুলিতে হত্যা করে। একইদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চকপাড়া সীমান্তের ১৮২নং পিলার সংলগ্ন জমিতে কাজ করার সময় বাংলাদেশী কৃষকদের ল্য করে গুলিবর্ষণ করেছে ভারতের নওদা সীমান্ত ফাঁড়ির বিএসএফ সদস্যরা। এতে শিবগঞ্জ উপজেলার উনিশবিঘা গ্রামের সেতাবুল ইসলাম,সায়েম ও সাইদুর গুলিবিদ্ধ হন।
১৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সফরে এসে ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিব আর. কে. সিং বলেন, ‘সীমান্তে যাদের গুলি করা হয় তারা সবাই চোরাকারবারি। সীমান্তে গুলি বন্ধে বারবার বিএসএফকে বলা হয়; কিন্তু বিএসএফ সীমান্তে আক্রান্ত হয় বলেই গুলি চালায়।’
অক্টোবর মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ১২ জন। আহত হয়েছেন ১ হাজার ২২৫ জন। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সঙ্ঘাতে ৩ জন এবং বিএনপির অভ্যন্তরীণ সঙ্ঘাতে ২ জন নিহত হন।
অক্টোবর মাসে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। অক্টোবরে ১ সাংবাদিক নিহত, ৯ সাংবাদিক আহত, ৩ জন হুমকির সম্মুখীন, ৩ জন লাঞ্ছিত এবং ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এছাড়া আমার দেশ পত্রিকার সব সাংবাদিককে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানিয়েছে পুলিশ
দেশ শান্তি ও উন্নতির জোয়ারে ভাইসা জাইতাসে!!!