somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুতুববাগ দরবার শরীফঃ ধর্ম ব্যবসার অন্যতম উদাহরণ

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধর্ম মানুষের কল্যানের জন্য। সেটা যদি কল্যান না করে অকল্যান হয়ে ধরা দেয় তবে বুঝতে হবে সেখানে অধর্ম হচ্ছে। ব্যবসা হচ্ছে। সেরকম একটি রমরমা ব্যবসার নাম ‘কুতুববাগ দরবার শরীফ’। শুদ্ধতার সাথে নিজেদের ব্যবসার জন্য মনগড়া শরীয়ত মারেফত লাগিয়ে যেখানে চলে জাকজমক অধর্ম। এখানের বেশিরভাগ মুরিদ খেটে খাওয়া অশিক্ষিত মূর্খ মানুষ এবং কিছু রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ীক সুবিধালোভী ব্যক্তিত্ব। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হুসাইন মুহাম্মাদ এরশাদ।

কুতুববাগ দরবার শরীফকে অশুদ্ধ প্রমান করার জন্যে ধর্মের দলিলাদি উপস্থাপনের কোন প্রয়োজন নেই। সেখানে অনেক ভন্ডামী আছে যা একজন মুসলিমের বিশ্বাসের সাথে মিলবে না। যেমন, কুতুববাগ পীরের সাথে আল্লাহর সাক্ষাত হয়; তিনি ইচ্ছে করলেই মানুষের যেকোন সমস্যার সমাধান করে দিতে পারেন; রাসুল (সাঃ) এর নিচেই তার মর্যাদা প্রভৃতি। তবে একজন সচেতন মানুষ নিম্নে উপস্থাপিত সামাজিক বিষয়গুলো অনুধাবন করলেই বুঝতে পারবেন কুতুববাগ আসলেই ভন্ডদের আখড়া।

কুতুববাগ পীরের জন্ম নারায়নগঞ্জে কলাগাছিতে। প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা না থাকলেও বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল থেকে অর্জিত জ্ঞান এবং মায়াবি এক চেহারা দিয়ে খুব সহজে কলাগাছিতে রেলের জায়গা দখল করে আখড়া গড়ে তুলতে সমর্থ হন। যেখানে ২০০২ সাল পর্যন্ত অনেক মহিলা অশিক্ষিত মুরিদের পীর হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন। অতঃপর আখড়া গড়েন ময়মনসিংহের ত্রিশালে। ২০০৭ সালে চলে আসেন ঢাকার ফার্মগেট এলাকায়। রাজউকের ৬ তলা বিল্ডিংয়ের অনুমতি থাকলেও গড়ে তোলেন দশ তলার বিশাল বিল্ডিং। কাকরাইলে এক মুরিদের জায়গা ছলচাতুরি করে বিক্রয় করেন ডেস্টিনির কাছে প্রায় ষোল কোটি টাকায়।.প্রতিবছর উরসের সময় আলোকসজ্জা ও ডেকোরেশন করা হয় প্রায় দুই কোটি টাকার উপরে। গরু-ছাগল, উট যতোগুলো আসে তার শতকরা পচিশ শতাংশ খাওয়ানো হয়; বাকিগুলো যায় পীরের পকেটে। হাইকোর্ট থেকে ফার্মগেটের আনোয়ারা পার্কে ৯ বছরের জন্য যেকোন ধরনের সভা নিষিদ্ধ হলেও ঘুষের মাধ্যমে অনুমতি পেয়ে যায় কুতুববাগ। এখানের পীর জাকির শাহ যে গাড়ীতে ঘোরেন তার দাম কোটি টাকার উপরে। সেমিনার করেন সোনারগা হোটেলে। পীরের মুরিদদের জন্য বিশেষ কিছু নিয়ম কানুন হলো-
• পীরের সামনে পিছন ফিরে হাটা যাবে না।
• পীর যেখানে অজু করেন সে স্থানে বসে ওজু করা যাবে না।
• পীরের ছায়া মাড়ানো যাবে না।
• খালি হাতে দরবারে আসা ঠিক নয়। প্রভৃতি।



এখন কিছু প্রশ্ন আপনাদের জন্যে। ধর্ম বিষয়ক কোন ব্যাপার না। সামাজিকতা সম্পর্কিত। উত্তর খুজলেই পেয়ে যাবেন কুতুববাগ দরবার ভন্ডদের জন্য নাকি শুদ্ধতার জন্য।
1. জাকির শাহ যদি আল্লাহর অলী হবেন তবে কলাগাছিতে তার রেলের জায়গা দখল করতে হবে কেন?
2. রাজউকের অনুমতি ব্যতিত অতিরিক্ত চারতলা বিল্ডিং উঠানোকে কি বলবেন?
3. মুরিদের কাকরাইলের জমি আত্মসাত করা কি সুফিবাদ সমর্থন করে?
4. উরসের নামে কোটি টাকার ডেকোরেশন বৈধ হয় কিভাবে?
5. জাকজমক পূর্ণ বাড়ি, কোটি টাকার গাড়ী, সোনারগায়ে সেমিনার প্রভৃতিকে শুদ্ধতার প্রতীক বলবেন কিভাবে? যেখানে ইসলামে খুবই সাধারন জীবন যাপনের কথা বলা হয়েছে।
6. ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে ফার্মগেটের পার্কে উরস করা কতটা যুক্তিযুক্ত?
7. মানুষ সৃষ্টির সময় শয়তান পিছনে ফিরে হেটেছিল ঠিক তেমনিভাবে মুরিদকেও কেন পিছন ফিরে হাটতে হবে? বা একই স্থানে অজু করা, ছায়া মারানো যাবে না?

ইসলামে ধর্মকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হলেও এসব মুখোশধারী ভন্ড পীর কলুষিত করেছে উত্তম এই জীবন ব্যবস্থাকে। অনেকেই না বুঝে এবং অনেকে বুঝে শুনে স্বার্থের খাতিরে এসব বাবার মুরিদ হয়ে থাকেন। নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করেন। তবে সে যাই হোক; শুদ্ধতম ইসলামকে চর্চা করতে হলে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে। শুধু ধর্মের জন্যে নয়; সুন্দর জীবনের জন্যে হলেও এসব ভন্ডামীকে সমাজ থেকে নির্মূল করা প্রয়োজন।

দায়বদ্ধতাঃ এটিএন নিউজ এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইট।
১১টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×