শেষ পর্যন্ত কর্মযজ্ঞে নামানো হল আনাড়ি আমাকে, আমাদের। ম্যাকখানাপিনা সম্পর্কে কার কি ধারণা আছে জানতে চাওয়া হল। আমার জ্ঞান লার্জ ফ্রাইজের দাম পর্যন্তই। হ্যাপি মিল, ভাল্যু পিক কি জিনিস জানার ইচ্ছাও হয় নি কখনও।
"কোন দেশের চিড়িয়া আসল এটা!" এই ভেবেই হয়ত জিজ্ঞেস করল ট্রেইনার, "where are you from?"
"বাংলাদেশ।"
"হাহ?"
"বাংলাদেশ" আরও জোর দিয়ে বলি। মেজাজটা গরম হয় তবুও বলি, "ক্লোজ টু ইন্ডিয়া, ইউ নো"
"ওও.... ব্যাংলাডেস।"
"হু। ব্যাং এর দেশ না তোর মাথা।" বিড়বিড় করি আমি। 'মাথা গরম করার কিছু নাই। Be Canadian, learn tolerance' নিজেকে বলি।
আজব আজব লোকজন আসে দোকানে। এসে বলে, "আই ওয়ান্ট বিগ একস্ট্রা উইথ নো পিকল, একস্ট্রা লেটুস, মেয়ো অন দ্যা সাইড উইথ সাইড স্যালাড অ্যান্ড স্ট্রবেরী ম্যাকফ্লারি। অ্যান্ড......"
"ওয়ান সেক। [ বেটা উজবুক !@#৳] হ্যাম বারগারের বাটন কই গেল? ..... পাইছি! আর কি চাইল যেন?"
এই হল আমার অবস্থা।
অনেকে এসে অদ্ভুত অ্যাকসেন্টে চায়, "হামবুরগার" আমি প্রথমে ধরতে পারি না, "কি? হাম হইছে কার?" আসলে নিজের অ্যাকসেন্টের ঠিক ঠিকানা নাই তাই অন্যেরটা বুঝতেও খুব অসুবিধা হয়। এক চাইনিজ বুড়ি এসে দুই আঙুল দেখিয়ে "ইয়া মিয়া কাউমাউ" গোোছের কিছু একটা বলে। আমাকে জানানো হল সে আসলে ডাবল ক্রিম দেয়া কফি চায়। আমি ভাবি, "বাহ! এরা তো ক্রিপটোগ্রাফারদের থেকে কম যায় না!"
লোকজন কম ছিল তাই আমাকে ঝাড়ু দিতে বলা হল। আমি দৃষ্টি দিয়ে ট্রেইনারকে ফ্রাই করার বৃথা চেষ্টা করে কাজে লেগে গেলাম।
কিছুদিন আগে ফ্রাইজ প্যাক করার সময় শুনি, "ওয়াচ আউট!" কিছু বুঝে ওঠার আগেই টের পেলাম হাতে গরম তেল পরেছে। মনে মনে গালি দিলাম, "বেটা শ্বশুরবাড়িতে আসছি নাকি যে যখন তখন ছ্যাকা দিবি? !@#৳।" ছ্যাকা খেয়ে বাসায় ফিরে অনেক্ষণ ঘ্যান ঘ্যান করলাম। কাজ হল না। টিটকারী খেলাম, "যাও sue করগে।"
ম্যাকচিকেন, ম্যাকনাগেট খাই না তারপরও ম্যাকছ্যাকা খেতে হল। এই দুঃখ মনে নিয়ে এখন ম্যাকপিছলা খাওয়ার আশায় আছি। যদি কোনমতে কোমরটা ভাঙতে পারি তাহলে ব্যাটারে সত্যি সত্যি sue করে মনের ঝাল মেটাতাম।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




