ঘটনাটি প্রায় ৪ বছর আগের কথা। কোন এক টিকেট সার্ভিস বাসে। একদম সামনের সিটে বসে ছিল ২ জন বুড়ো-বুড়ি। দুজনেরই বয়স ৭০ এর উপর হবে হয়ত। না হলেও ৭০ এর আশে পাশে তো হবেই।
যাই হোক, এমনই সব কিছুই স্বাভাবিকই ছিল, কিন্তু হঠাৎ করে তারা দুইজন সবার দৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এল।
রাস্তার মাঝপথে হঠাৎ করে বুড়ো গান জুড়ে দিল। প্রেমের গান। উদ্দেশ্য তার পাশে বসা বুড়ির মন খুশি করা।
সে কি গান! একদম খোলা মনে, দুনিয়ার সব কিছু ভুলে গিয়ে গাওয়া সেই গান! আশে পাশে সবাই হা করে চেয়ে ছিল, কেউ কেউ হাসছিলও। কিন্তু বুড়োর কারও দিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। ওইদিকে বুড়ি লজ্জায় মুখ লুকিয়ে ছিল। আর তার এই লাজুক চাহনি দেখে বুড়ো যেন আরও সাহস পেয়ে গেল মনের কথা গান দিয়ে প্রকাশ করার।
বাসের কন্ডাক্টর বুড়োর কাছে ভয়ে ভয়ে গেল টিকেট চেক করার জন্য, যদিও ধমক খেয়ে আর কাছে যাওয়ার সাহস পায় নাই
বুড়োর এই সাহস আর বউয়ের মন খুশি করার জন্য মন খুলে গান গাওয়ার চেষ্টা, এসব দেখে মনে হল, কে বলেছে যে বয়স বাড়লেই সব রকম ছেলেমানুষি উড়ে যায় মানুষের মন থেকে?!!? সেখানে নাকি বাসা বাঁধে জীর্ণ শীর্ণ মনভাব, আর রূক্ষ চিন্তাভাবনা!!!???!!!
নাহ, এসব বাজে কথা। মানুষের মনে সবসময়ই লুকিয়ে থাকে কিছু ছেলেমানুষি, যা কিনা থাকে তার আশে পাশের মানুষের মনে আনন্দ দেওয়ার জন্য। অনেকেই তা প্রকাশ করতে পারে না, পাছে লোকে কিছু বলে। আবার অনেকেই কারও পরোওয়া করে না। সবার সামনে মন খুলে বউয়ের কাছে প্রেম নিবেদনের সাহস রাখে এই ৭০ বছর বয়সেও!
অনেকেই আছে যারা ভাবে বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষেরা শুধুই রষকষহীণ। তাদের আবেগ বলতে শুধু সব কষ্ট সয়ে যাওয়া।
নাহ, সব মিথ্যে। একদিন আমরাও বুড়ো হবে। আমাদের মনে তখনও টিকে থাকবে সব ধরণের আবেগ। অনেকেই হয়ত তা প্রকাশ করতে পারব না। কিন্তু কিন্তু কেউ কেউ শুধু পারবই না, বরং সবার মনে হাসি ফুটিয়েও দিতে পারব
[সংবিধি সতর্কীকরণ: এইটা বাস্তব ঘটনা। আগের লেখাটার মত বানোয়াট না ]