কলিকালের একেকটা পিচ্চি পুরাই ডিজুস!!!ওপার বাংলার সঙ্গীত চ্যানেলের প্রভাবে “পাগলু পাগলু আই লাবিউ” দেখে একেকজনের মুখ ই ফুটে আই লাভ ইউ বলে।ছোটবেলায়ই জড়তা কেটে যায়…এক অর্থে ব্যাপার খারাপ না।শাসন করলেও এদের জিদ দ্যাখার মত….আর আদর করলে তো একেবারে এক লাফে মাথায় উঠে…শাঁখের করাত।
সেদিন উন্মাদ পত্রিকায় দেখছিলাম…ছেলে হোক মেয়ে হোক একটি বদের হাড্ডিই যথেষ্ট!!!কথাটা শুনতে খারাপ লাগলেও নিষ্পাপ সত্য।এক পরিচিতের বাসায় দাওয়াত।এক পরিবার মাশাল্লাহ এক হালি বাচ্চা নিয়ে এসছে…তার নিজের।লাস্টের ২টা আবার যমজ।প্রথম ২ ছেলের সাথে যুক্ত হয়েছে আমার পিচ্চি ভাই।মিশন আংকেলের ছেলের পিসি তে গেম খোঁজা।ব্যর্থ হয়ে ডিজনেপ চ্যানেলে ওদের কুলেস্ট ক্যারেক্টর ডরিমন দেখতে লাগল।তাও বেশিক্ষণ দেখতে পারলো না।ঐ বাসার আংকেল আবার এন্টি ডরিমন।ওনার ধারণা স্টার প্লাস যেমন বাংলার নারী ধ্বংস করে…ডিজনেপ শিশুদের ঘুম হারাম করে।ঘুম হারামে মস্তিষ্ক ক্ষয়।যাই হোক,সবাই যখন তাদের মোবাইল পর্যন্ত লুকিয়ে ফেললো গেমের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে…তখন তারা প্রথম অস্ত্র হিসেবে কিছুক্ষণ উদাস উদাস চোখে ঘুরে বেড়ালো।ভাগ্যিস তাদের আগে খাইয়ে ফেলা হয়েছিলো।নইলে এটাকেই প্রথম অস্ত্র বানাত।কোন কাজ হয় না দেখে কিছুক্ষণ পর এসে শুরু হল তীব্র বাক্য বর্ষণ।
১ম পিচ্চি :এই আংকেল খুবই খারাপ।আমাদের দাওয়াত দিতে নিয়ে এসে ইনসাল্ট করে।অনেক হয়েছে,ওনার বাসায় আর না।এই বাসার কেউ ভালো না।
২য় পিচ্চি :খালি এই বাসা না।এই প্ল্যানেটও খারাপ।চলো আমরা এই প্ল্যানেট থেকে অন্য কোনো প্ল্যানেটে চলে যাই।আমার আদৃতা মিস কে বললে ওনি আমাদের একটা স্পেশশীপ অবশ্যই বানিয়ে দিবেন।
৩য় পিচ্চি :সিউর?
২য় পিচ্চি :সিউর।এই মিস অনেক ইয়াং।আমাদের লাভ করে।একটু বুড়ি মিস গুলা আমাদের কষ্ট বুঝে না।খালি পড়তে বলে।
৩য় পিচ্চি :তাহলে আমরা অন্য প্ল্যানেটে চলে যাচ্ছি।যাবার সময় একটা মোবাইল নিয়ে যেতে হবে।আর আমরা কিন্তু তনয় ভাইয়ার(আংকেলের বড় ছেলে) বিয়েতে আসবো না।ওনি থাকুক
ওনার ফকিরা পিসি নিয়ে....(তনয় মাত্র থার্ড সেমিস্টারে)
২য় পিচ্চি :মোবাইল না…একটা ল্যাপটপ নিয়ে যাবো।ওয়েব ক্যামে মাঝে মাঝে আম্মু আব্বুর সাথে কথা বলা যাবে।(এই পিচ্চি আবার মারাত্মক ট্যালেন্ট)
আমরা :
এক বাসায় ক্লাস সিক্সের এক বাচ্চা মেয়ে পড়াতে গিয়েছি।মেয়ের মা বলল,আমি সারাদিন জব নিয়ে থাকি…ও একা একা থাকতে থাকতে চাপা স্বভাবের হয়ে যাচ্ছে।বাইরের জগৎটা ওর কাছৃ একদম অপরিচিত।তুমি কিন্তু ওর পুরোপুরি দায়িত্ব নিচ্ছ।
মেয়ে ছাত্রী ভাল।পড়িয়ে আনন্দ পাই।সারাদিন পহেলা ফাল্গুন পালন করে ১৩ তারিখ আর যাই নাই।১৪ তারিখ গিয়েছি।
ছাত্রী :মিস আজকে আসছো ক্যানো???কোথাও যাবা না??!!
আমি
ছাত্রী :ও।তোমাকে একটা কথা বলতে চাইসিলাম।
আমি :বলে ফ্যালো!!!
ছাত্রী :কিন্তু এখন তো মনে হইতেসে তুমি ব্যাপারটা বুঝবা না।
আমি
ছাত্রী :এটা পড়ে দেখো(ভাঁজ করা একটা কাগজ)।আমি জানি তুমি কাউকে বলবা না।
আমি কাগজটার ভাঁজ খুলে পড়ছি।আমার কিশোরী ছাত্রীটি বলে যাচ্ছে,‘‘ও আমার ২ বছরের সিনিয়র।আমরা এক জায়গায় গান শিখতে যাই।এক স্কুলে পড়িও।১ বছর ধরে ফলো করে যাইতেসে।JSC তে 5 পাইসে।লাস্ট সানডে তে আমাকে এই লেটারটা দিল।বলসে আজকের মধ্যে জানাইতে।ওকে আমার খারাপ লাগে না।তুমি কি বলো মিস??”
আমি তখন ভাবছি আমার এই ছাত্রী বাইরের জগৎ এর খবর না রাখলেও অন্তরজগতের খবর ভালোই রাখেন।আফটার অল অন্তর জালের যুগ।আর মনে মনে সুর ভাঁজছি…‘‘গভীরে যাও…জ্ঞান বাড়াও।’’একে শিক্ষা দেয়ার জন্য আমাকে যে আরো গভীরে যেতে হবে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






