somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পণ্যের জীবন চক্র (শেষ কিস্তি)

২০ শে জুন, ২০১১ রাত ৯:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তাহলে কি মানুষ আবার জঙ্গলে গিয়ে বাস করবে ? কেননা বর্তমান বিশ্বে ভোগ ছাড়া জীবন তো কল্পনাই করা যায় না। এজন্য সমাজ সংস্কারকরা বলছেন ভোগ হতে হবে পরিমিতভাবে। আমরা ভোগ করতে গিয়ে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক, মানবতা, মূল্যবোধকেও যেন গিলে না ফেলি।
সমাজবদ্ধ মানুষরে প্রাত্যহকিতার জন্য অবশ্যই নানাবধি পণ্য আবশ্যক। প্রাণ রক্ষার জন্য খাদ্য গ্রহণ,সামাজকি জীবন যাপনে পোষাক-পরিচ্ছদ,আসবাবপত্র সহ একজন ব্যক্তি মানুষের বহুবিদ ভোগ্যপণ্যের প্রয়োজন। জীবনের প্রয়োজনে আবশ্যকীয় পণ্য ভোগবাদ দর্শনের আওতাভূক্ত নয়। এর প্রভাবে যা কিছু হচ্ছে তার জন্য আমরাই দায়ী। বিশ্ব জলবায়ুর অস্বাভাবকি পরবির্তনের কারনে প্রাণীজগতের প্রায় ৩৭% প্রজাতি বিলুপ্ত হতে চলছে। পরসিংখ্যানে জানা যায়, পৃথিবীর মাত্র ২০ শতাংশ জনগোষ্ঠী,যারা উন্নত বিশ্বের বাসিন্দা উৎপাদিত ভোগ্যপণ্যের ৮৬ শতাংশ ব্যবহার করে। অন্যদিকে বিশ্বের ২০ শতাংশ দরিদ্র জনগোষ্ঠি জনগোষ্ঠীর ভোগ্যপণ্যরে ব্যবহার মাত্র ১.৩ শতাংশ। বিশ্বের ৫ শতাংশ ধনী জনগোষ্ঠী বিশ্বের মোট আয়রে ৮৭.৭ শতাংশ অর্জন করে থাকে।
বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠী বাস কর উন্নয়নশীল দেশগুলোত এবং তাদের ব্যবসা বানিজ্য অংশগ্রহনের শতকরা হার মাত্র ১৭ ভাগ। এই হতাশাব্যঞ্জক চিত্র ক্রমশই বাড়ছে এবং এর বড় কারন ভোগবাদ দর্শনের মাঝেই নিহিত রয়েছে।

ডিসপোজাল :
দেখা যাচ্ছে ১৯৭০ সালের তুলনায় বর্তমানে মার্কিনিদের বাড়ির আকার দ্বিগুন। এ বাড়তি জায়গায় তাকে সংকুলান করতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভোগ্যপণ্য। যার অধিকাংশই সে ব্যবহার করে না। তাই তাকে নিয়মিত ডিসপোজ করতে হচ্ছে। ডিসপোজাল বস্তু অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমাদের শেখানো হচ্ছে ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলো। আমরা ফেলছি। একটি পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন সাড়ে চার পাউন্ড ময়লা ডাস্টবিনে ফেলছে। ডিসপোজাল প্রক্রিয়ায় আগে সব ময়লা মাটিতে পুঁতে ফেলা হতো। এখন ময়লার কিছু অংশ রিসাইক্লিংয়ের জন্য পোড়ানো হচ্ছে,আবার পোড়ানো উচ্ছিষ্ট মাটিতে পোতা হচ্ছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে মাটি ও বাতাস। লক্ষ্য করে দেখুন পণ্যটি উদপাদন প্রক্রিয়ায় বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ যোগ করা হয়েছিল,ফলে ডিসপোজাল প্রক্রিয়ায় যখন পুনরায় বাতিল অংশ পোড়ানো হচ্ছে সেখানেও পুড়ছে বিষ। বাতাসে মিশে যাচ্ছে বিষাক্ত রাসায়নিক। বরং এপর্বে জন্ম নিচ্ছে সুপার টক্সিক। যেমন-ডাইঅক্সিন। বিজ্ঞানীরা বলছেন,মানব সৃষ্ট বিষের মধ্যে ডাইঅক্সিন সর্বাধিক বিষাক্ত। তাই বিষাক্ত বর্জ্য ফেলতে আবার দরকার হয় তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে। বলা হচ্ছে,রিসাইক্লিং আমাদের পরিবেশ সহায়ক। হ্যাঁ তা সত্য। আমরা সবকিছু রিসাইকেল করতে পারি, কিন্তু তা যথেষ্ট নয়,কয়েকটি কারনে। পরিমানগত দিক থেকে বর্জ্য সম্পূর্ণ রিসাইকেল করা যায় না,সব ধরনের বর্জ্য রিসাইকেলের যোগ্য নয় যেমন-জুসের টেট্রাপ্যাক। এতে ব্যবহার করা হয় প্ল্যাষ্টিক,মেটাল ও পেপার। কাজেই আপনি একে আলাদা করবেন কী করে। সুতরাং দেখছেন কীভাবে একটি সিস্টেম বেড়ে চলছে। জলবায়ু পরিবর্তন,সুখ কমে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটলেও এটি তার আপন গতিতে কাজ করে যাচ্ছে।

সুখের বিষয় এ ব্যবস্থার বিপরীতে দিন দিন জনমত গড়ে উঠছে। কর্পোরেশন গতি রুখতে আনা হচ্ছে নতুন চিন্তাধারা। যে চিন্তা কাজ করবে বনভূমি ও অধিবাসী রক্ষায়,পরিচ্ছন্ন উৎপাদনে। মানুষ চাচ্ছে কর্মী অধিকার,স্বচ্ছ বাণিজ্য,সচেতন ভোগ সর্বপরি সরকারের কাছ থেকে নিশ্চয়তা। যা নিশ্চিত করবে বাই দ্য পিপল,ফর দ্য পিপল। কেননা পুরো ব্যবস্থায় একটির সাথে আরেকটি সম্পর্কযুক্ত। আমরা পুরো সিস্টেমকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে পারি। যা সম্পদ নষ্ট করবে না। তার জন্য প্রয়োজন মানসীকতার পরিবর্তন। দরকার সাসটেইনেবিলিটি,ইকুইটি, গ্রীণ কেমেষ্ট্রি,জিরো ওয়েষ্ট,ক্লোজ লুপ প্রোডাকশন,রিনিউবল এনার্জী,লোকাল লিভিং ইকোনমি। যা ইতোমধ্যে ঘটতে শুরু করেছে। অনেকেই বলছেন, এটি অবাস্তব। যদি এ প্রক্রিয়ায় আমরা চলতে পারি তাহলে কেন সম্ভব নয়। এটা কোন মধ্যাকর্ষণ ব্যববস্থা নয় যা আবিস্কার করতে হবে। এ ব্যবস্থার তৈরি ও ভোগ মানুষই করবে। তাই চলুন নতুন কিছু তৈরি করি।
: সমাপ্ত :
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×