অনেক জোরাজুরির পর টিউশনিটা নিলাম।মোটে দুইদিন,ভালো এমাউন্ট। মেডিক্যালে পড়ি বলে আন্টির ধারনা আমি ধুন্ধুমার স্টুডেন্ট,তাই তার ছেলেকে আমার হাতে তুলে দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে চান।স্টুডেন্ট ক্লাস টেনে পড়ে।নেংটাকাল থেকেই চিনি,আমার না,ওর নেংটাকাল,পিচ্চি ছোটবেলায় তাদের ৩ তালার বারান্দা দিয়া মূত্র বিসর্জন করত যা আমাদের একতলার বারান্দাকে পুরা ভিজাইয়া দিত।যাহোক মেডিক্যালের কঠিন পড়ার চাপেই হোক বা ব্রেনসেল ড্যামেজের কারনেই হোক ক্লাস টেনের হায়ার ম্যাথ কিছুই মনে নাই,তার উপর ম্যাথ আর ফিজিক্সের অংক।আমি যথারীতি প্রতি চ্যাপ্টার থেকে ৫ টা অংক মুখস্থ করে যাই,স্টুডেন্টের বাসায় যেতে যেতে ৩ টা অংক খাইয়া ফালাই।অংক শুরু করি এভাবে...দেখ,মনযোগ দিয়া বুঝার চেষ্টা কর,একবার না বুঝলে বলবি,ফার্ষ্ট অংক,আসে না,পরের টা দেখ,দূর এইটা এমনেই পারবি,বাড়ীর কাজ,পরের টা,আরে আগেরটার সাথে হুবুহু এক,নিজে নিজে কইরা ফেলবি,এমন করে করে আগাতে থাকি।যথাসময়ে আমার কমন অংক চলে আসে,আমি বলি,দেখ এইডা কিন্তু ঝামেলার।ধুমাইয়া করে দেই।তার পরের অংক,একদম সোজা,কিন্তু কাহিনী হলো অংকের অর্ধেক করেই ভুলে যাই,মাথা চুলকাই,স্টুডেণ্ট বলে,ভাই গাইড বাইর করব?আমি ঝাড়ি দেই,এই জন্যই দেশটা রসাতলে গেল।দেখ,মিলাই কেমনে,অনেকক্ষন লাগাইয়া মিলাই অংক,পোলা খুশী আমি মিলাইতে পারসি,আমিও খুশী।কিন্তু পরের অংক আর মিলে না,স্টুডেন্টরে বলি,বাইর কর দেখি তোর ছাতা মাতা গাইড কি করছে।গাইড দেখি।মনে মনে টাসকি খাই আর উপর দিয়া স্টুডেন্টরে ঝাড়ি দেই,দূর এত সোজা কইরা করলে কেমনে?নে দেখ।পোলা দেখে আমিও দেখি।স্টুডেন্ট আমারে কয়,ভাই টেনশন নিয়েন না,আপনে মোবাইলে চ্যাট করেন,আমি কিছুক্ষন মুভি দেখি।আমি বলি আগে অংক গুলা শেষ কর।তারপর গনিত শেষ করে কিছুক্ষন মুভি দেখে বাড়ী ফিরি।
ভাগ্যিস আমার স্টুডেন্ট আমার মতই ফাকিবাজ,ভাগ্যিস পোলা ক্লাসের ফার্ষ্ট বয়।