somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেওয়ারিশ _ ২

১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১।

" আজকালকার স্বামীরা যে বউয়ের কাছে বাধ্য না , সে সবাই জানে । তোর যে এত লাজ , ধরে তো রাখতে পারবিনা তারে । কি করতে হবে শোন , প্রথম রাতেই তাকে আটকে ফেলবি শরীরের এই মায়াজলে ......... "
পারো'দির কথাগুলো এখনও ঘুরছে মাধবীর মাথায় , দু'দিন পর বিয়ে । আর শুভ্রত যে তার চিরকালের স্বপ্ন ! তাকে খুশী না করলে যে এই দেহটা চীরজীবন কাল-নাগিনী হয়ে মস্তিষ্ক দংশন করবে । সে-ই যদি খুশি না হয় , তবে কি মুল্য এই শরীরের ? আর পারোদী তো আর না জেনে বলেন নি , কৃষ্ণদা প্রথমে যেভাবে তার থেকে দূরে সরে যায় , পরে তো নাকি ওই দেহ দিয়েই টেনে আনে তাকে ।
তবে পারো'দির কথাই যথার্থ ।

বিয়ে হল ; ফুলসজ্জায় মাধবী এইসব চিন্তা করেই নিজের লজ্জা কে দূরে ঠেলে দিলো । নাহ ! শুভ্রতই যে তার সব । তার কাছে লাজের কি ?
প্রথমে শুভ্রত মাধবীর এই রূপ দেখে হতভম্ভ হয়ে যায় । যেন তড়িৎ বিশ্লেষ্য ! শরীরের প্রত্যেক অঙ্গের কম্পন আলাদাভাবে বুঝিয়েছে । মাধবী এখন শিশুর মতন গুটিশুটি হয়ে ঘুমাচ্ছে । শরীরে পাতলা একটা চাদর । আবছা আলো-ছায়ায় তার নিষ্পাপতা যেন চুইয়ে পড়ছে ।
তাহলে সে একটু আগে যার কোলে ঢলে পড়েছিল , সে কোন মাধবী ছিল ?সে যাকে ভালবেসেছিল , সে কোন মাধবী ছিল ? আর সে নিজে কোন মাধবী কে চায় ? এই সদ্য ভূমিষ্ঠের মতন নিষ্পাপ মাধবী কে নাকি একটু আগের সেই সন্মোহিনী কে ?

এসব প্রশ্ন বারবার তার মাথা চাড়া দিয়ে উঠছিল । অশান্তিতে সে আর এই নিষ্পাপিনীর বুকে মাথা ঠেকাতে পারলোনা । অবশেষে তার মাথা ঠেকল বসুন্ধরার বুকে ...

২।

=> না রে দোস্ত , আমি মাধবী কে এইভাবে চাইনি । তার সন্মোহনে ডুবে যেতে না , তার নিষ্পাপতা আর ভয় টুকু কে একটু একটু করে নিজের করে নিতে চেয়েছিলাম ...
=> তুই কি বলতে চাচ্ছিশ বৌদির মাঝে কোন কমতি ?
=> না না , বরং অর মাঝে একটু বেশী-ই আছে । কোন খুঁত অর মাঝে শত্রুও পাবেনা । তবে আমি ওকে জিতে নিতে পারিনি । তাই অর কাছে যেতে কেমন যেন অনধিকার চর্চার মতন লাগে ...
=> বিয়ের আজ প্রায় দু'বছর পরেও তর এই অবস্থা ! তোকে এমন অসহায় দেখে কেমন যেন খারাপ লাগছে । আমি এইভাবে তোকে দেখতে পারছিনা । আমি একজন কে চিনি । তুই ওর কাছে যা । ভালো লাগবে । নামেই ওর পরিচয় পাবি । অসাধারন মাল !!!
=> কিন্তু .........

ওই কিন্তুতেই আটকে যায় সে । তারপর মহীনির সাথে পরিচয় । ঘনিষ্ঠতাও বাড়ে ধীরে ধীরে । আর আজ সে মহীনির কাছ থেকে তা পেয়েছে যা সে মাধবীর কাছ থেকে চাইত । একটু একটু করে শুভ্রত সব সুখ নিয়েছে মহীনির কাছ থেকে । কিন্তু এখন কেন যেন মহীনি কে তার আর ভালো লাগছেনা । মহীনি

শুধু তার না । এই মেয়েকে খালি ও ই যে এইভাবে পেয়েছে তা কি ? আরও হাজারো কল্যাণ পুরুষ কি পায়নি তাকে , তাদের নিজের মতন করে ? মহীনির মাঝে সেই ভালবাসা নেই , নেই সেই নিষ্পাপতা , সেই হারানোর ভয় ! কে এই মেয়ে ?
এখন বারবার খালি শুভ্রত সেই কথা ভাবছে , যা মাধবীর মনে শুরু থেকেই ছিল __
=> " একমাত্র দেহই কি সব ? ভালোবাসার কি তাহলে কোন মুল্যই নেই ? "

৩।

বাগানে ঘাসের উপর বসে আছে মাধবী । খুব সুন্দর জোছনা করেছে । সে গুঙ্গুন করছে । হাল্কা নীল শাড়িতে তাকে যে কি অপরূপ লাগছে , কি রহস্যময়ী !!
পেছন থেকে শুভ্রত এসে তাকে বেলি ফুলের গাঁজরা পরিয়ে দিলো । অপরাধবোধে ভারী বুক নিয়ে সে মাধবীর কোলে গা এলিয়ে দিলো । যেন এই রহস্যময়ী জাদু দিয়ে তার বুক হাল্কা করে দিয়েছে । মাধবীকে বলল ,
=> মাধবী , ওই গানটা গাওনা , যেটা দিয়ে শুরু হয়েছিলো তোমার-আমার ।
মাধবী গাইতে শুরু করল
" তোমায় ভালবাসি , তাই ছায়ামেঘ আমি হব _ যখন , রদ্দুরে তুমি হাঁট ... "
=> মাধবী ?
=> হুম্ম ?
=> তুমি শুধু আমার ...

লজ্জা পাবেনা পাবেনা করেও লজ্জায় দূ'হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলল সে ।




{ পুনশ্চ : শুভ্রত আজ মাধবীর অন্য রূপ দেখল । সেই রূপ যার প্রেমে সে পড়েছিল বহু আগেই । আজ আবার নতুন করে সে মাধবী কে জানতে শুরু করল ।
সে মনে মনে বলল ,
=> " বাঙালি মেয়েরা আসলে খুব সরল । কিন্তু প্রয়োজনে তারা হতে পারে দেবী কিংবা মোহিনী-অর্ধাঙ্গিনী । মাধবী , আমাকে ক্ষমা করে দিও । তোমাকে ছাড়া আমি অস্তিত্বহীন । তুমি শুধুই আমার ... " }
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×