somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি নতুন ব্লগার হয়েছি,

২২ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি নতুন ব্লগার হয়েছি, গতকাল একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। নতুন সদস্য বলে নেয়া হয়নি। তাই আমার যায়যায়দিন পত্রিকায় প্রকাশিত পুরনো লেখা দিচ্ছি। ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, ব্লগার ভাই/বোনরা
ওন সান সংয়ের ‘পরিবার -স্বপ্ন -স্মৃতি
আবুল কালাম আজাদ
শিল্পকলা দেশ কাল ভেদে ভিন্ন রকম। এর বাস্তব উদাহরণ বেঙ্গল গ্যালারিতে শুরু হওয়া ওন সান সংয়ের ‘পরিবার-স্বপ্ন-স্মৃতি’ শীর্ষক প্রদর্শনী। এতে কোরিয়ার শিল্পী ওন সান সং কোরিয়া চিত্রকলার নানা গতিবিধি তুলে ধরেছেন। সেই সঙ্গে শিল্পের সঙ্গে জীবনের সম্পর্কের বাস্তব এবং প্রকৃত অবস্থা ফুটে তুলেছেন। প্রদর্শনী নিয়ে শিল্প শিার্থী তো বটেই শিল্পানুরাগীদেরও ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোরিয়ার সা¤প্রতিক চিত্রকলা নানা পরীা-নিরীার মধ্য দিয়ে চারিত্র্য নির্মাণ করতে সমর্থ হয়েছে। জিজ্ঞাসা-উন্মুখ ও জীবনকে প্রত্যণে আধুনিক অভিব্যক্তির নানা ধরনের প্রকাশ আছে সা¤প্রতিক চিত্রকলা চর্চায়। এশীয় দেশসমূহের মধ্যে দণি কোরিয়ার চিত্রকলা বেশ সমৃদ্ধ। আমরা এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে কোরিয়ার শিল্পীদের নানা ধরনের কাজ দেখেছি। নয়ন-সুখকর, দৃষ্টিশোভন, নিরীাপ্রবণ এসব কাজ চিত্রানুরাগীদের চেতনার দিগন্তকে বিস্তৃত করেছিল। আমরা চমৎকৃত হয়েছিলাম কোরিয়ার শিল্পীদের সৃজনী উৎকর্ষে এবং আধুনিক বোধ ও মননকে আত্তীকরণ করবার কুশলতায়।
বেঙ্গল গ্যালারি অব্ ফাইন আর্টস ঢাকাস্থ প্রজাতন্ত্রী কোরিয়া দূতাবাসের সহযোগিতায় কোরিয়ার শিল্পী ওন সান সংয়ের ‘পরিবার-স্বপ্ন-স্মৃতি’ শীর্ষক যে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে তাতে উপলব্ধি করা যাবে কোরিয়ার চিত্রকলার সা¤প্রতিক গতিপ্রকৃতি ও নব্য ভাবনার স্ফুরণ। বেঙ্গল গ্যালারি পরিবেশিত ক্যাটালগে বলা হয়েছে, জীবনের নানা দিকের প্রতিফলন আছে ওন সান সংয়ের চিত্রকল্পে। রহস্যময় আর পরাবাস্তবের ছোঁয়াও যে নেই তাও বলা যাবে না, আবার পুরোপুরি পরাবাস্তবও নয়। সংবেদনময় এ শিল্পী বাস্তবতাকে উন্মোচন করেছেন শিল্পীত প্রকরণে ও আশ্চর্য সুষমামণ্ডিত এক ভাষায়। যেখানে স্মৃতিসত্তা ভবিষ্যতের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে আছে স্বপ্নভাবনার বৃত্তে জীবনকে ছুঁয়ে ও উপলব্ধি করবার প্রবণতায়। এ প্রদর্শনী এসব দিক থেকে ভিন্নধর্মী। আবেগ প্রকাশের ভাষাও আলাদা। আমাদের ধারণা, এ প্রদর্শনীটি নবীনমাত্রা সৃষ্টি করবে ও নতুন জিজ্ঞাসার জন্ম দেবে চিত্রানুরাগীদের মধ্যে। ওন সান সং ভ্রমণের মাধ্যমে এনজয় করেন। আর তার এ এনজয় ময়ুরপঙ্খী ঘোড়ায় চড়ে করলে পরিপূর্ণ হয়। ময়ুরপঙ্খী ঘোড়ায় চাপিয়ে ঘুরে বেড়ানোকে প্রধান্য দেন তার চিত্রকল্প ‘ইনজয় বিং টুগেটার’ শিরোনামের মিক্সড মিডিয়ার কাজটি দেখলেই স্পটতই বোঝা যায়। তিনি বিশ্বব্যাপী তার এ চিত্রকলার বিস্তৃতি ঘটাতে চান এটাও স্পষ্ট। তার অন্য একটি চিত্রকল্পের শিরোনাম ‘ড্রিম ইন এ ড্রিম’। এ চিত্রকল্পটি দেখলে মনে হয় ওন সান সং কল্পজগতে বসবাস করেন। ফ্যান্টাসিই তার চিত্রকল্পের প্রধান উপজীব্য বিষয়। ফ্যান্টাসি ছাড়া তিনি আর কিছু বোঝেন না। তিনি তার চিত্রকল্পে মানুষের নিম্নাঙ্গ ঘোড়া কিংবা জিরাফের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন। আবার মায়াহীন নারীর চরিত্রও উপস্থাপন করেছেন। যাতে একজন মা কিংবা নারীর মায়ার বাহিরেও যে একটা রূপ আছে, সেটাই উপস্থাপিত হয়েছে। অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে তার চিত্রকল্প ল্য করলে দর্শকমাত্রই একটা গল্পের উৎস খুঁজে পাবেন। প্রতিটি চিত্রকল্পের পরতে পরতে একটা করে গল্প লুকিয়ে আছে। তার শিল্পশৈলীও গ্রহণযোগ্য, কাব্যিক। বিষয় অনুসরণের ভাষা, ভাষার বুননের তারতম্যও অসাধারণ। তিনি তার শিল্পকর্মে শুধু মানুষের মুখ নয়, জীবজন্তুর চিত্রও বদলে দিয়েছেন। তাই রূপান্তরিত হয়েছে আমাদের শিল্পদৃষ্টি। মানব-মানবীর পরম প্রশান্তির চিত্রের সঙ্গে তিনি প্রকৃতির কুহকী রূপ এঁকেছেন। গা ছমছম দৃশ্য এঁকেছেন। নিসর্গের ভিতর থেকে উঁকি দিয়েছে অচেনা প্রাণী। আর এ প্রাণীগুলো কোনটা মানবের বন্ধু আবার শত্র“ রূপেও ধরা দিয়েছে। নারীরা আজো যে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে পারেনি, তারও প্রকৃষ্ট উদাহরণ তুলে ধরেছেন। প্রতিটি চিত্রকল্পই প্রেতায়িত পটভূমি লোমহর্ষক করে তুলেছেন। এগুলো কখনো স্বপ্নময় মায়াবিতা আবার কখনো বিভৎসতায় কাতর করে তোলে। রোমান্টিসিজমের শেষ দিগন্ত পেরিয়ে নৈসঙ্গের মধ্যে মানুষকে উপস্থাপিত করে তার চিত্রকল্প। টেক্সচার ও অনুসঙ্গের জটিল জাল এঁকে অস্তিত্বের বিশেষ অবস্থা জানান দিয়ে বিশেষ পারমিতা দেখিয়েছেন। নারীর জগৎ, শিশুর জগৎ একটি ফ্রেমে আবদ্ধ করে গ্রাফিক্সসিদ্ধ পরিমার্জনায় উপস্থাপিত হয়েছে তার কাজে। স্তরে স্তরে তৈরি হওয়া রং এর এক বহুতল পটে তার ফিগারগুলো লাইনড্রয়িংয়ের মাধ্যমে রচিত হয়-অনেকটা ইন্দ্রজালের মতো করে। সম্পূর্ণ পরিস্থিতি টুকুই ইন্দ্রজাল মনে হতে পারে আবার মনে হতে পারে কারো স্বপ্নে দেখা কামজ প্রতিকী পৃথিবী ক্রমশঃ যা আদিম ও সামদ্রিক, জলমগ্ন, ভরশূণ্য- ভাসতে থাকে। মহাশূণ্যের নির্ভার তার সমুদ্রের অন্তঃস্থলে এসে মিলিত হচ্ছে চিত্রপটের সাইকাডেলিক গ্রন্থনায়। পিটার উস্তিনভের ডিয়ার মিরে বলা হয়েছে- ‘এক বৃদ্ধ যেন মেঘের ওপর ভর দিয়ে মাটিতে তাকান কল্পনার চোখে তাঁর শৈশবকে আবিস্কার করার জন্যে।’ তেমনি ওন সান সং ক্যানভাসে চিত্রিত করেন কল্পনার চোখে তার শৈশবকে। আর এ শৈশবস্মৃতির অধিকাংশই বিষণœ ও নির্জন। তীব্র রঙ ব্যবহারের মাধ্যমেও তার এ বিষণœতা ও নির্জনতার প্রভাব ফুটে উঠেছে। তুলির প্রতিটি আঁচড়ে নান্দনিকতাপূর্ণ শিল্পের স্পন্দন এনেছেন। যা শিল্পের বাঁকে স্বপ্নময় সম্ভাবনা হাতছানি দেয়।
ওন সান সং ১৯৬৪ সালে সিউলে জন্মগ্রহণ করেন। এ পর্যন্ত তার ৩টি একক প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছে। তিনি বহু দলবদ্ধ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছেন। বর্তমানে ফ্রিল্যান্স শিল্পী হিসেবে কাজ করছেন। তার এ প্রদর্শনী আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ৯:৩৭
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×