বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে তথ্য সমৃদ্ধ সফলতম মাধ্যম ইন্টারনেট। কিন্তু এই মাধ্যম কে যদি কিছু কর্মকর্তার হাতের মুঠোই আনা হয় তাহলে কি এই মাধ্যমের সুফল ভোগ করা সম্ভব?
একটু ভেবে দেখুন-
•* ইন্টারনেটে জনসাধারণের অবাধ বিচরণ থাকবে না bv !
• *এটি নিয়ন্ত্রণ করবে সরকার! GKwU দেশের সরকারই ঠিক করে দেবে তাদের দেশে কোন কোন ওয়েবসাইট দেখা যাবে বা কোনটি দেখা যাবে না।
• *এমনকি এখনকার মতো ইচ্ছা করলেই অন্য দেশের সাইটে প্রবেশ করে তথ্য জানার সুযোগ থাকবে না।
• *অর্থের বিনিময়ে এবং নিজ দেশের সরকারের অনুমতি নিয়ে অন্য দেশের তথ্য জানতে হবে।
• *বিশ্বের অন্য কোনো দেশে গিয়ে এখন যেমন ই-মেইল, ফেসবুক, টুইটার ব্যবহার করতে পারেন, তখন আর পারবেন না।
কেমন হবে এমনটা হলে? ভাবতেই নিজেকে বন্দী লাগে। কিন্তু কিছু মানুষ এটাই করতে চলেছে !
৩ থেকে ১৪ ডিসেম্বর আইটিইউয়ের উদ্যোগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে হতে যাচ্ছে ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অন ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস (ডব্লিউসিআইটি) সম্মেলন। আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) পক্ষ থেকে ইন্টারনেটের ওপর নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের ১৯৪টি সদস্য দেশের সাথে বাংলাদেশকেও ভোট দিতে হবে " ইন্টারনেটে সাধারণের অবাধ বিচরণ থাকবে কী থাকবে না? " এ বিষয়ে।
আইটিইউর সম্মেল‡ন বাংলাদেশের অবস্থান বিষয়ে—বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস বলেন, ‘বাংলাদেশে বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে এ বিষয়ে তেমন একটা প্রস্তুতি বা কোনো ধরনের পাবলিক হিয়ারিং বা গণশুনানি করা সম্ভব হয়নি। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ইন্টারনেট উন্মুক্ত রাখার বিষয়ে একটা পজেশন পেপার তৈরি করার চেষ্টা করব। দেখা যাক, অন্যান্য দেশগুলো কী করে? বেশি ভোট যেদিকে যাবে, ফলাফলও সেদিকে যাবে।
কিন্তু বিষয়টিiর ¸গুরুত্ব বাংলাদেশের কাছে কতটুকু?
চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস এর কথায় বাংলাদেশে বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে এ বিষয়ে তেমন একটা প্রস্তুতি বা কোনো ধরনের পাবলিক হিয়ারিং বা গণশুনানি করা সম্ভব হয়নি।
বর্তমান বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ইন্টারনেট ব্যবহার অবাধ করতে বাংলাদেশ সরকার কে একটু শক্তিশালী ভূমিকা রাখা উচিৎ ছিল না?
গত ২৮ নভেম্বর ইন্টারনেট সোসাইটি বাংলাদেশ ঢাকা চ্যাপ্টার এবং ভয়েস যৌথভাবে ঢাকায় এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। এই সভায় বক্তারা বলেন, এমনিতেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ইন্টারনেটের ওপর নজরদারি বাড়াচ্ছে। এ রকম একটা অবস্থায় যদি সরকারের কাছে আরও ক্ষমতা যায়, তাহলে বিভিন্ন দেশের ইন্টারনেটের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো বেশি সমস্যায় পড়বে। তারা বলেন, ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য আইটিইউ উপযুক্ত জায়গা নয়। শুধু বিভিন্ন দেশের সরকার সেখানে মতামত প্রদান করতে পারে এবং এসব সরকারের মধ্যে কেউ কেউ অবাধ এবং স্বাধীন ইন্টারনেট সমর্থন করে না। ফলে বর্তমান নীতিমালার পরিবর্তনের ফলে সেনসরশিপ বেড়ে যেতে পারে এবং উদ্ভাবনের পথ রুদ্ধ হতে পারে।
G মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ। আলোচনা করেন ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ, ইন্টারনেট সোসাইটি বাংলাদেশ ঢাকা চ্যাপ্টারের সভাপতি সৈয়দ ফয়সাল হাসান, বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, আইএসপি অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি সুমন আহমেদ, সামহোয়্যারইন ব্লগের প্রধান সৈয়দা গুলশান ফেরদৌস প্রমুখ।
ইন্টারনেটে জনসাধারণের অবাধ বিচরণের গুরুত্ব কিwK? এর জবাবRev‡e সম্প্রতি ঢাকা সফ‡রে আসা ফিনল্যান্ডের সাবেক টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ও আইটিইউয়ের ব্রডব্যান্ড ফর কমিশনের বিশেষ দূত সুভি লিনডেন প্রথম আলোর সঙ্গে এক সাক্ষাrকারে বলেন, ‘টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট প্রতিদিন বদলে দিচ্ছে দুনিয়া। আর এই পরিবর্তনকে আরও বেশি কার্যকর ও উন্নয়নমুখী করতে চলছে নিত্যনতুন পরিকল্পনা। বিশেষ করে ইন্টারনেটের কোনো নিয়ন্ত্রক বা স্বত্বাধিকারী নেই বলেই এত দ্রুত এর বিকাশ সম্ভব হয়েছে। এর উন্মুক্ততা ও বিকেন্দ্রীকরণই এর শক্তি। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ইন্টারনেট ব্যবহার ও সেবা সম্প্রসারণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখা ও সাধারণ নাগরিকদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সুনির্দিষ্টভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
আশা করি বাংলাদেশ সরকার এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাivরা সাধারন মানুষের প্রত্যাশা কে ভবিষ্যতে আরও বেশী গুরুত্ব দেবেন, যেন কোন পরিস্থিতি এমন একটি গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্তে বাধাঁ হয়ে না দাড়ায়।
আর একটি অনুরোধ সকল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কছে আপনারা এই ভোটাধীকার কে সাধারন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য উমুক্ত করতে সুপারিশ করুন।