একটা বিষয় নিয়ে খুবই মজায় আছি। বুয়েট এ লেভেল টু তে ইংলিশ ল্যাব এ প্রেজেন্টেশন দিতে হয়। আমার টপিক খুবই লেইম ছিল।
'Leak out of Question Paper'.
ঐ প্রেজেন্টেশনের জন্য তখনকার সময়ের বড় বড় প্রশ্নপত্র ফাসের ঘটনা কিঞ্চিৎ গবেষণা করতে হইসে। ফাসের মনস্তাত্ত্বিক- সামাজিক- অর্থনৈতিক- নৈতিক আরও নানা দিক নিয়া নানা কিছু পড়তে হইসে। এগুলা না পড়েও বলা যায়- সরকার যদি খুব বিশেষ কোন ব্যাবস্থা না নেয়.. এই অবস্থার অবনতি ঘটতেই থাকবে। প্রতিবছর। সিউর।
এইদিকে কতিপয় '১৪ ব্যাচের পোলাপান এর তরপাতরপি দেখে হাসব নাকি কাঁদব তাও বুঝি না।
আমি খালি ভাবি, রেজাল্ট এর দিন এরা আনন্দে কত খানি লাফ দিতে পারবে? আমরা লাফ দিয়ে যত খানি উঠতে পারতাম... ওরা কি ততখানিই পারবে?
নাকি মাটি নিচ থেকে ওদের টেনে ধরে রাখবে...
আরেকটা কটু ব্যাপার হল কেউ কেউ এটাকে উপযুক্ত কাজ মনে করছে।
একটা মানুষ যদি ভালো- মন্দের ফারাকটা বুঝতে না পারে বা বুঝেও মন্দকে ডিফেন্ড করে এইটা তো মানবিকতার সবচেয়ে বড় পরাজয়।
সবাই অপরাধ কম বেশী করি। করার পর সেটাকে জাস্টিফাই করে নিজেকে বুঝ দেয়ার চেষ্টা করি।
যেমন,কেউ একবার বাস ভাড়া ৩ টাকা কম দিয়েছে। এরপর সেটাকে জাস্টিফাই করছে এভাবে যে, অর্ধেক রাস্তা দাড়ায় আসছি ভাড়া একটু কম দেয়াই যায়!
ঘুষ যে খায়, সে ভাবে আমি যেই সার্ভিস দেই সরকার আমাকে সেই অনুযায়ী বেতন দেয় না, ঘুষ তো একটু খাওয়াই যায়!
সে নিজেও জানে কাজটা ঠিক না। কিন্তু নিজেকে বুঝ দেয়ার কি অদ্ভুত চেষ্টা।
খারাপ কাজ করার চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ সম্ভবত 'নীতি'টাকে শুদ্ধ রাখা। অন্তত নিজের মধ্যে একটা বোধ কাজ করবে যে, আমি আমার নীতির বাইরে কাজ করেছি। ফলে সাময়িক লোভ বা সুযোগ সামলাতে না পেরে করে ফেলা অপরাধটার জন্য একটা হালকা - ভারী যেমনই হোক পাপবোধ বা অনুশোচনা থাকবে। সেটা সময়ের সাথে বয়স বাড়ার সাথে সাথে হয়ত ভিতরে আত্মস্থ হবে এবং সেই অপরাধ আবার করার প্রবনতা কমবে।
কিন্তু নিজের নীতিটাকে নিজেই একবার বাকায় ফেললে এবং নিয়মিত সেটার প্র্যাকটিস করতে থাকলে ঐ মানুষের আর কখনো ভালো হওয়ার সুযোগটা থাকে না।
আবার অনেকেই সুন্দর করে মিন মিন করে দোষটাকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করে। এই সময় এদেরকে দেখলে মানুষের অসহায়ত্বের জায়গাটা বুঝা যায়। দোষ করেছে সেটা নিজের কাছে নিজে স্বীকার করতেও বিব্রত বোধ করছে!
মানুষ অন্যের বেলায় খুব ভালো বিচারক আর নিজের বেলায় খুব ভালো উকিল। নিজের বেলায় আরেকটু ভালো বিচারক হলে জীবন আরেকটু সুন্দর হবে বোধ হয়।
কেউ কেউ এখন আর মিন মিন না করে গর্জন করছে!
সব কিছুর শেষে, কয়েকজনকে চিনি, প্রশ্ন দেখছে না। এদের একটা সাধুবাদ দেয়াটা আসে। থ্যাংকস।
আর এখন এটলিস্ট যারা এটাকে অপরাধ মনে করছ তাদেরকেও থ্যাঙ্কস।