একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বলতে পারি, আমরা আমাদের কথা বলার অধিকার হারাচ্ছি। এভাবে যদি চলে তাহলে আজ ফেসবুক, তো কাল ব্লগ, পরশু পত্রিকা, তরশু টেলিভিশন সবই একে একে বন্ধ হয়ে যাবে। জনগণ কোন মাধ্যমে কথা বলবে, সেটা তার ইচ্ছার ব্যাপার। এটা কোনো অপরাধ নয়, বরং সাংবিধানিক অধিকার। মজার বিষয়, সম্প্রতি তারানা হালিম বলেছেন, ‘দেশে বিকল্প পথে যারা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছেন, তারা আইন লঙ্ঘন করছেন। বিকল্প ব্যবস্থায় যারা ফেসবুক ব্যবহার করছেন, তাদের সবারই তথ্য গোয়েন্দা সংস্থার কাছে আছে। গোয়েন্দা সংস্থা তাদের কাউকে কাউকে গ্রেপ্তার করেছে, আবার অনেককেই করছে না -
কে না জানেন, গণতান্ত্রিক দেশে জনগণের প্রতিনিধিরা সর্বসম্মতিক্রমে সংসদে একটি আইন পাস করেন। কিন্তু ফেসবুক ব্যবহার করা যাবে না এই মর্মে তো কোনো আইন পাস হয়নি, এমনকি সরকারি আদেশও জারি হয়নি যে ফেসবুক ব্যবহার করা যাবে না। তাহলে অযথা কেন লোক হাসাচ্ছেন? মুখের কথায় কি আইন হয়? তাই বলে তড়িঘড়ি এখন ফেসবুক বন্ধে আইন করতে নেমে যাবেন, অতটা বাড়াবাড়ি করবেন না বলেও আস্থা আছে বা আইন করে বন্ধ করলেনই বা, কি আসে যায়? চীনে ফেসবুক নেই, তাতে কি ওই দেশের তরুণরা মন খারাপ করে বসে আছেন? সেদেশে দেখেছি দিব্বি উইচ্যাট দিয়ে কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন তরুণরা।
ইন্টারনেট আছে তো যোগাযোগও থাকবে। প্যারিসে হামলার ঘটনায় ব্যবহার হয়েছে বাচ্চাদের খেলার সরঞ্জাম, পিএস ফোর। আর মুম্বাই হামলার সময় ব্যবহার হয়েছিল ব্ল্যাকবেরির নিজস্ব এনকোডিং সিস্টেম। কাজেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বন্ধ করা কোনো কাজের কথা নয়, সন্ত্রাসী কর্মকা- কারা, কোথায়, কীভাবে সংঘটিত করছে সে ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহে তৎপর হন। আর এই তৎপরতা ভালো করে চালানো সম্ভব যদি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম চালু থাকে! যুক্তরাষ্ট্রে নাইন- ইলেভেনের পর ফেসবুক বন্ধ হয়নি, প্যারিস হামলার পর ফ্রান্সেও ফেসবুক বন্ধ হয়নি। তারা কি তাদের দেশের জনগণের নিরাপত্তা চায় না?